মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। আজ থেকে ১০৩ বছর আগের কথা। সম্ভবতঃ তখনও আজকের দিনের মোটর সাইকেল বের হয়নি। তবে, মটর লাগানো, দুই চাকার হাতল ওয়ালা আর দাড়িয়ে থাকার পাদান যুক্ত, ব্যক্তিগত ব্যবহারের যান মানুষের ব্যবহারে আসার আগে এই স্কুটারটি ছিল। সে ১৯১৬ সালের কথা। প্রথম এই মটর স্কুটার ব্যবহার করে কাজে যাচ্ছেন সে সময়ের বৃটেনের এক নারী কর্মী। নাম ফ্লোরেন্স নরমেন।
কে ছিলেন এই ফ্লোরেন্স নরম্যান? সময় বলে, সেই সময়ের লন্ডনের একজন অফিস সুপারভাইজার, একজন কর্মজীবী মহিলা নেত্রী। পুরো নাম “লেডি ফ্লরেন্স প্রিসসিলা”। মহিলাদের বিভিন্ন অধিকার আদায়ের এক তুখোর নিরলস কর্মী ছিলেন। ছবিতে, ১৯১৬ সালে তার “মটর স্কুটার” চড়ে কাজে যাচ্ছেন। লেডি ফ্লোরেন্স প্রিসসিলার বাবা ছিলেন বৃটিশ সংসদের সাংসদ চার্লস বেঞ্জামিন ব্রাইট মেকলারেন। তিনি ছিলেন একজন বেরন যা সকলের পরিচিত ভাষায় লর্ড। তিনি বৃটেনের লিবারেল দলের সদস্য এবং একজন স্কটিশ মানুষ ছিলেন।
তারই দ্বিতীয় কন্যা ছিলেন এই লেডি ফ্লোরেন্স প্রিসসিলা। তার বিয়ে হয় সে সময়ের এক নামী-দামী সাংবাদিকের সাথে। বিয়ের পর তার নামের শেষে যোগ হয় স্বামী স্যার হেনরি নরমেনের সনদ “নরমেন”। নাম দাঁড়ায় ফ্লোরেন্স নরমেন। তার বড় পরিচয় তিনি তৎকালীন বৃটেনে মহিলাদের ভোটাধিকার আদায়ের একজন সুপরিচিত ও শক্তিমান নেত্রী ছিলেন।
তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছে। বলতে গেলে চারিদিকে হাহাকার আর যুদ্ধে ক্ষত-বিক্ষত মানুষের আর্তচিৎকার। ফ্লরেন্সের মত মানুষ কি আর বসে থাকতে পারেন। যুদ্ধাহতদের পাশে দাড়ালেন। ফ্রান্সের সাগর উপকূলের “উইমেরেক্স” শহরে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় চালু করেন।
স্কুটারটি তার স্বামী সাংবাদিক উদারনৈতিক রাজনীতিক সার হেনরি নরমেন তাকে জন্মদিনের উপহার দিয়েছিলেন। তিনিও লিবারেল দলের এমপি ছিলেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ফ্লোরেন্স জীবনে বহু সনদ পুরস্কার পেয়েছেন। অথচ এমন একজন মানুষের জন্মদিন কোথায়ও লিপিবদ্ধ পাওয়া যায়নি। (তথ্য অক্সফোর্ড ডিকসনারী অব নেশনেল বায়োগ্রাফী থেকে সংগৃহীত, ছবি-প্রিন্টারেক্সট ও উইকিপিডিয়া থেকে)