1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
এদফায় নোবেল পেলেন ডাঃ ডেনিস মুকওয়েজি ও অধিকার কর্মী নাদিয়া মুরাদ - মুক্তকথা
সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন

এদফায় নোবেল পেলেন ডাঃ ডেনিস মুকওয়েজি ও অধিকার কর্মী নাদিয়া মুরাদ

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শনিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৮
  • ৮০২ পড়া হয়েছে

দূরন্ত সাহসী নারী নাদিয়া। শুধু কি সাহস, জ্ঞানীও বটে। সাহস আর জ্ঞান একই মানুষে বাস করে খুব কম। এমন মানুষকে ক্ষনজন্মা বললে ভুল হবে না। এবছরের নোবেল জিতে নিয়েছেন কঙ্গোর চিকিৎসক ডেনিস মুকওয়েজি’র সাথে অংশীদারীত্বে। নাদিয়ার পুরো নাম নাদিয়া মুরাদ বাসি তাহা। মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি সংগঠন আইএসের হাতে যৌনদাসী হয়ে জীবন কাটিয়েছেন কঠিন মূল্যদিয়ে। যা কখনও ভাবতেই পারেননি। কঠিন কষ্টকর নারকীয় সে জীবনের শুরু ২০১৪ সালের ১৫ই আগষ্ট থেকে। সে এক করুণ ইতিহাস!
যুদ্ধকালে ও সশস্ত্র সংগ্রামের সময় যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে অবদান রাখায় নাদিয়া মুরাদ ও ডেনিস মুকওয়েজিকে এ বছরের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর চিকিৎসক ডেনিস মুকওয়েজি যৌন সহিংতার শিকার নারী ও তরুণীদের সেবায় তার জীবনের অধিকাংশ সময় পার করেছেন।
অতীতে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য বেশ কয়েকবার মনোনয়ন পেয়েছিলেন মুকওয়েজি। অবশেষে যৌন নিপীড়নের শিকার হাজার হাজার নারীকে সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হলেন তিনি মহিয়সী নাদিয়ার সাথে।
এনিনিউজবিডি.কম খুব দরদ দিয়ে নাদিয়া বিষয়ে লিখেছেন- “ইয়াজিদি তরুণী নাদিয়া মুরাদ ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় ছোট্ট গ্রাম কোচোতে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন। ২০১৪ সালের ১৫ই আগস্টের কথা কোনোদিন ভুলবেন না নাদিয়া মুরাদ। ওই দিন থেকেই তার নারকীয় দুর্দশার শুরু। তখন তার বয়স ১৯ বছর। আচমকাই বদলে যায় তার জীবনের গতিধারা। তিনি স্কুলে যেতেন। ইতিহাসের শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। নিজের একটি বিউটি সেলুন গড়ে তোলার স্বপ্নও দেখতেন নাদিয়া। ইরাকের কুর্দি ইয়াজিদি সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনজার গ্রামে বাস করতেন তিনি। আইএসের হামলার ভয়ে অনেকেই তখন গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। এমনই এক নীরব নিথর দিনে আইএস হামলা চালায় সিনজার গ্রামে। গ্রামের সবাইকে অস্ত্রের মুখে একটি স্কুলে ঢোকানো হয়। পুরুষদের আলাদা করে স্কুলের বাইরে দাঁড় করানো হয়। এরপরই মুহুর্মুহু গুলিতে নাদিয়ার ছয় ভাইসহ সব পুরুষকে হত্যা করা হয়। পুরুষদের হত্যা করার পর আইএস জঙ্গিরা নাদিয়া ও অন্য নারীদের একটি বাসে করে মসুল শহরে নিয়ে যায়। সেখানে যৌনদাসী হিসেবে অনেকের সাথে বিক্রি হন নাদিয়াও।
তিন মাস ধরে তাকে বন্দি করে রাখা হয়। তার মতো আরো অনেক ইয়াজিদি, খৃস্টান ও অন্যান্য অমুসলিমদেরও বন্দি করে রেখেছিল আইএস সদস্যরা। ওই তিন মাসে কেবল বন্দিত্বই নয়, যৌনদাসত্বের শিকার হতে হয় নাদিয়াকে। তাকে নির্যাতন করা হয়, ধর্ষণ করা হয়। তার মতো এমন কুৎসিত নির্যাতনের শিকার হন আরো পাঁচ হাজারেরও বেশি ইয়াজিদি নারী। এখনও প্রায় ৩,৪০০ ইয়াজিদি নারী ও শিশু বন্দি রয়েছে আইএসের হাতে।
প্রায় দুই বছর পর নাদিয়াকে মানবপাচারের হাত থেকে উদ্ধার হওয়া মানুষদের দুর্দশার বিষয়ে সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করতে জাতিসংঘ তাকে নিযুক্ত করে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেন, নাদিয়ার ‘শক্তিমত্তা, সাহস ও সম্ভ্রমে’র পাশাপাশি তার দুর্ভাগ্য দেখে আমার ‘কান্না এসেছে’। নাদিয়া বলেন, ‘আমি একা ছিলাম না এবং সম্ভবত আমিই ছিলাম সবচেয়ে সৌভাগ্যবান। একটা সময় আমি পালিয়ে আসার পথ খুঁজে পেয়েছি। কিন্তু আরো হাজারও নারী তা পারেনি। তারা এখনও বন্দি অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। তাদের স্মৃতি স্মরণ করেই আমাদের লড়াই চালিয়ে যাবো।”
এভাবেই আইএসের যৌনদাসী হিসেবে বেশ কিছুদিন থাকার পর পালিয়ে আসতে সক্ষম হন নাদিয়া।
নোবেল কমিটি বলেছে, নাদিয়া এত কষ্ট সহ্য করেও অন্যদের পক্ষে কথা বলার ক্ষেত্রে অসাধারণ সাহস দেখিয়েছেন। পাকিস্তানের নারী শিক্ষাকর্মী মালালা ইউসুফজাইয়ের পর কম বয়সী হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মানজনক নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন নাদিয়া। ২০১৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন মালালা। আর নাদিয়া মুরাদের বয়স ২৫ বছর।
পুরস্কার হিসেবে একটি করে সোনার মেডেল পাবেন মুকওয়েজি ও নাদিয়া মুরাদ। সেই সঙ্গে পুরস্কারের ৯০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার তারা ভাগ করে নেবেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর অসলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।
পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার চেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে গত বছর ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপনসকে (আইসিএএন) শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়।
১লা অক্টোবর থেকে এবারের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শুরু হয়। প্রথম দিন চিকিৎসাবিজ্ঞানে মার্কিন বিজ্ঞানী জেমস পি অ্যালিসন ও জাপানি বিজ্ঞানী তাসুকু হোনজো যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ২ অক্টোবর পদার্থবিদ্যায় নোবেল বিজয়ী হিসেবে মার্কিন বিজ্ঞানী আর্থার আশকিন, ফরাসি বিজ্ঞানী জেরার্ড মাওরো ও কানাডার বিজ্ঞানী ডোনা স্ট্রিকল্যান্ডের নাম ঘোষণা করা হয়।
পরদিন রসায়নে নোবেল পান মার্কিন বিজ্ঞানী ফ্রান্সেস এইচ আরনল্ড ও জর্জ পি স্মিথ এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্যার গ্রেগরি পি উইন্টার। আগামী ৮ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। এক জুরির স্বামীর বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নিপীড়নের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিতর্কের মধ্যে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি এবারের সাহিত্যের নোবেল পুরস্কার স্থগিত করেছে। তথ্যসূত্র: যুগান্তর, এনিনিউজবিডি.কম

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT