কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি।।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে শশ্মানঘাটের জায়গা অবৈধভাবে দখল করেছেন বলে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিতভাবে এই অভিযোগ জানানো হয়েছে। গত ১৭ অক্টোবর গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শমশেরনগর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে বংশ পরস্পরায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করে আসছেন। গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের কাহারো মৃত্যু হলে সেই ব্রিটিশ আমল থেকে সার্বজনীন শশ্মানঘাটে শেষকৃত্য সম্পাদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কখনো কাহারো কোন আপত্তি বা ভূমি দখলের ঘটনা ঘটেনি। গ্রামের দক্ষিণে পতিত সংলগ্ন জোড়াপুকুর নিয়ে শশ্মানঘাটের উত্তরপার সংলগ্ন পতিত পাল সম্প্রদায়ের শশ্মানঘাট, বাঁশঝাড় ও পূর্ব দক্ষিণ পার সংলগ্ন পতিত নাথ সম্প্রদায়ের সমাধিক্ষেত্র। পুকুরদুটি উভয় সম্প্রদায়ের শেষকৃত্য সম্পাদনের ¯œানঘাট হিসাবে আবহমান কাল থেকে শশ্মানঘাটটি জোড়াপুকুর নামে পরিচিত। তবে সম্প্রতি সময়ে সারঙ্গপুর গ্রামের আলতা মিয়ার পুত্র বিলাল মিয়া অবৈধভাবে শশ্মানঘাট ও পুকুর দখল করে বাঁশ, গবাদি পশুর জন্য ঘাস কেটে নিচ্ছেন। পুকুরে বেড়া দিয়ে মাছের চাষাবাদ করছেন। কেহ আপত্তি জানালে গালিগালাজ করে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করেন।
শিক্ষক বিমলেন্দু পাল, যশেন্দু দেবনাথ, পঙ্কজ চন্দ্র পাল, রিপন দেবনাথ, রুপেন্দ্র দেবনাথ, অনন্ত চন্দ্র পাল, প্রণয় পাল অভিযোগ করে বলেন, বিল্লাল মিয়া অবৈধভাবে শশ্মানের ভূমি দখল করে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন এখানে কেহ মরা পুড়াতে পারবেন না বলে । তিনি দখল করার পর সবসময় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সেখানে অবস্থান করেন। বিষয়টি স্থানীয়দের অবহিত করা হয়েছে। তবে শশ্মানঘাট রক্ষায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও পুকুর দুটি সংস্কার করে হিন্দু সম্প্রদায়ের শেষ ঠিকানা হিসাবে শশ্মানঘাটের জায়গা উদ্ধার করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন জানিয়েছি।
তবে অভিযোগ বিষয়ে বিলাল মিয়া বলেন, পুকুরের ভূমিটুকু আমার কাগজপত্রে রেকর্ডভূক্ত। ৫৬’র রেকর্ড অনুযায়ী আমি মালিক বিদ্যমান। অভিযোগকারীরা তাদের স্বপক্ষে কাগজপত্র দেখিয়ে প্রকৃত মালিকানা নিশ্চিত করতে পারলে তাদের জমি ফেরত দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন এর মোবাইল ফোনে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ন্যাশনাল টি কোম্পানী(এনটিসি) এর মালিকানাধীন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানে গত এক বছরে আশাতিত উৎপাদন লাভ করেছে। দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে সার্বিক উন্নয়ন ও চায়ের উৎপাদন আশাতিত বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। তবে চা বাগানে অনিয়মতান্ত্রিক নানা পদক্ষেপ সার্বিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চা বাগানের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত বছরের তোলনায় এবছর মাধবপুর চাবাগানে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ চা উৎপাদন হয়েছে। গত বছরের মার্চ মাস থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত বাগানে চা উৎপাদন হয় ২ লাখ ৭১ হাজার ১৪৩ কেজি। এবছর মার্চ মাস থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত চা উৎপাদন হয় ৪ লাখ ১৬ হাজার ৩৭৩ কেজি। তবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত চায়ের উৎপাদন মৌসুম রয়েছে। দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে নানা ত্রুটি বিচ্যুতি কাটিয়ে প্লান্টেশনসমুহে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে ভূমিকা গ্রহণ করা হয়। বিগত বছরের তোলনায় এবছর বাগানের সার্বিক উন্নয়ন ও চায়ের উৎপাদন আশানুরূপ হয়েছে। ম্যানেজমেন্ট এসব তৎপরতা ও শ্রমিকদের চেষ্টার ফলে একদিকে বাগানের উন্নয়ন তরাম্বিত হলেও দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত কতিপয় ব্যক্তিদের গাত্রদাহ শুরু হয়। ফলে চা বাগানের অবৈধ সুবিধাভোগী কিছু ব্যক্তিবর্গের অনিয়মতান্ত্রিক পদক্ষেপে চায়ের উৎপাদন ও চা শ্রমিকসহ বাগানের উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সাধারণ শ্রমিকরা অভিযোগ তোলেছেন।
মাধবপুর চা বাগানের শ্রমিক সন্তানরা নিরাপদে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করার নিশ্চয়তার দাবীতে বাগান ব্যবস্থাপকের বাংলোর সামনে অবস্থান নিয়েছে। ছবি: মুক্তকথা |
মাধবপুর চা বাগান শ্রমিক লক্ষ্মী নারায়ন কৈরী, রিপন নুনিয়া, এনামুল হক, রামলাল দাস, নাসির উদ্দীন, আব্দুল লতিফ, জামাল আহমদ সহ অর্ধশতাধিক চা শ্রমিক জানান, বর্তমান ম্যানেজমেন্টের দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে এবং চা শ্রমিকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় চায়ের উৎপাদন ও শ্রমিকদের নানাবিধ সমস্যার বিষয়টিও প্রাধান্য পাচ্ছে। তবে কিছু অবৈধ সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে নানা সময়ে অনিয়মতান্ত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ফলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। শ্রমিকরা বলেন, বিগত ২৯ অক্টোবর চা বাগানে মাদক ব্যবসা নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাপককে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেন। বাগানের সার্বিক উন্নয়নের কথা ও শ্রমিকদের আর্থসামাজিক উন্নতির কথা বিবেচনায় রেখে ব্যবস্থাপককে পুর্নবহাল করার জন্য কোম্পানীর সহকারী ব্যবস্থাপককে লিখিতভাবে দাবি জানিয়েছি।
মাধবপুর চা বাগান ব্যবস্থাপক চৌধুরী মুরাদ হোসেন বলেন, গত বছরের তুলনায় এ পর্যন্ত দেড় লাখ কেজি বেশি উৎপাদন হয়েছে। চা বাগানের সার্বিক উন্নয়নে আমার চেষ্টার কোন ত্রুটি নেই। ন্যাশনাল টি কোম্পানীর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মাহমুদ হোসেন জানান, মাধবপুর চা বাগানে উৎপাদন রেকর্ড যথেষ্ট ভালো। শ্রমিক ও ম্যানেজমেন্টের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে। তবে বাগানের কম্পাউন্ডারের বাসা নিয়ে ভূল বুঝাবুঝির কারণে একটি সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে শ্রমিকরা সেটি বুঝতে পেরেছেন।
শোক সংবাদ
॥ আলতাফ হোসেন সোহাগ ॥
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর মাষ্টার বাড়ী নিবাসী মরহুম আশরফ হোসেন সাহিত্যরত্নের বড় ছেলে ও কমলগঞ্জ অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হোসেন জুবায়ের’র পিতা মুন্সীবাজারের প্রাক্তন ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন সোহাগ(৭৫) সোমবার(৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় মুন্সীবাজারের নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবত কিডনী ও হার্ট রোগে ভোগছিলেন।
প্রয়াত আশরাফ হোসেন সাহিত্য রত্নের বড় ছেলে ব্যবসায়ী সোহাগ হোসেনের পরলোকগমন। ছবি: মুক্তকথা |
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে, ৫ মেয়ে, নাতী-নাতনী, অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। সোমবার বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটের সময় মুন্সীবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে মরহুমের জানাযার নামাজ শেষে নিজ পারিবারীক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আলতাফ হোসেন সোহাগ মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন কমলগঞ্জ প্রেসক্লাব, কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতি, কমলগঞ্জ অনলাইন প্রেসক্লাব, কমলগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটি, মুন্সী আশরাফ হোসেন স্মৃতি পরিষদ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কমলকুঁড়ি পরিবারসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগান এলাকা থেকে ভারতীয় ফেন্সিডিলসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। বিগত ৫ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শমশেরনগর চা বাগানের ইয়াকুব মেম্বারের দোকানের সামনা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। আটকৃতরা হলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার শিংরাউলী গ্রামের মৃত রনবীর পাল এর ছেলে রামকৃষ্ণ পাল(৩৫) ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে জনি আহমদ(৩০)। আটককৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নিজেদের সাংবাদিক ও সরকারি অফিসে চাকুরি করে পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনজির আহমেদের নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শমশেরনগর চা বাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিলসহ তাদেরকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে কমলগঞ্জ থানায় মাদক আইনে একটি মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ যোগদানের পর থেকে মৌলভীবাজার জেলাকে মাদকের জিরো টলারেন্স ঘোষনার অংশ হিসেবে এ অভিযান।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর বাজারে অভিযান চালিয়ে ৫টি ফার্মেসীকে নগদ ১১ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিগত ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট হুমায়রা সুলতানার নেতৃত্বে অভিযান করে ভ্রাম্যমান আদালত। এ সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মো. রফিকুল ইসলাম, ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক বাদল সিকদার ও শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শমসেরনগর বাজারে বিভিন্ন ফার্মেসীতে ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানা আদায়। ছবি: মুক্তকথা |
অভিযানকালে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ সংরক্ষণ, তাপমাত্রা সঠিক না থাকা, সঠিক মূল্য নির্ধারণ না করা, অনুমোদনহীন ঔষধ মজুদ ও বিক্রির দায়ে শমশেরনগর বাজারের ৫টি ফার্মেসিতে অভিযান চালিয়ে নগদ ১১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। জরিমানা করা ফার্মেসীগুলো হচ্ছে-পপুলার ফার্মেসী, চৌধুরী, ফামেসী, হক ফার্মেসী, সাদিয়া ফার্মেসী ও রানী মেডিকেলকে এ জরিমানা করা হয়েছে।