বিকাশে টাকা না আসা, অফিসে ধর্না দিতে গিয়ে হয়রানির শিকার ভাতাপ্রাপ্ত সুবিধা ভোগীরাকমলগঞ্জ(মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিমৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন কৌটাতে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে সুবিধা পেতে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাতা প্রাপ্ত ও আবেদনকারী ভুক্তভোগী কয়েকজন সদস্য এসব অভিযোগ করেন। জানা যায়, সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে সুবিধাভোগী কিছু লোকের টাকা বিকাশে না আসা, অফিসে গিয়ে বার বার ধর্না দেয়া, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা হয়রানিসহ নানা অনিয়ম ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে কমলগঞ্জে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সরকার সহায়তা প্রদান করছে। তবে সম্প্রতি সময়ে বিকাশে ভাতার টাকা প্রদান করতে গিয়ে দেখা দিয়েছে নানা বিড়ম্বনা। একজনের টাকা অন্য নাম্বারে, নির্দিষ্ট নাম্বারে টাকা না আসায় সুবিধা ভোগীরা বার বার উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে ধর্না দিচ্ছেন। তাছাড়া নতুন নাম অন্তর্ভূক্তি, সাহায্য-সহযোগিতা, নিয়মিত কর্মকর্তা না থাকা ও নানা সমস্যায় কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে গিয়ে কর্মচারীদের দ্বারা হয়রানিরও শিকার হতে হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি গ্রামের বয়োবৃদ্ধ বিধবা জারিয়া বেগম বলেন, আমি আজও বয়স্ক ভাতা কিংবা বিধবা ভাতা কিছুই পাইনি। এরমধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছি। পরে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী হিসাবে সাহায্যের জন্য সমাজসেবা অফিসে আবেদন করতে গিয়ে অনেক ভোগান্তির স্বীকার হয়েছি। পরে একজন সাংবাদিকের অনুরোধে আবেদনপত্র জমা দিতে পেরেছি। উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত বনভূষন দাস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার নাম্বারে ইতিপূর্বে বিকাশে ভাতার টাকা আসে। দু’মাস পূর্বে টাকা না আসায় অফিসে গিয়ে জানতে পারি অন্য এক ব্যক্তির নামে চলে গেছে। পরে অফিসে কর্মরতদের সাথে কথা বলার পর তারা কয়েকদিন অফিসে নিয়ে বসিয়ে রাখে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কিংবা বিকাল পর্যন্ত বসার পর চলে আসতে হয়। তাদের কোন নুন্যতম মানবিকতা দেখা যায়নি। উপরন্ত নানাভাবে অশোভন আচরন করেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। একইভাবে শমশেরনগরের শহীদ সাগ্নিকসহ কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, সমাজ সেবা অফিসে গিয়ে হয়রানির স্বীকার হতে হয়। তারা আমাদের কোন ধরণের সহযোগিতা ও মানবিকতাটুকুও দেখাতে চায় না। অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাকেও পাওয়া যায়নি। কমলগঞ্জ সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা আছকির মিয়া বিকাশে টাকা প্রদানে সুবিধা ভোগিদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, বিকাশে টাকা দিতে গিয়ে এসব সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ফলে অফিসে অনেক এসে ভিড় করেন। কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সোয়েব আহমদ কিছু সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সবসময় একই অফিসে থাকা সম্ভব হয় না। তবে সুবিধাভোগীদের টাকা পেতে ডিজিটাল থাকায় এসব সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া একজনের বিকাশ অন্য নামে এধরণের সমস্যাও পাওয়া যাচ্ছে। তবে অফিসে এসে হয়রানির বিষয়ে তিনি সতর্ক করবেন বলে জানান। |