দীর্ঘদিন প্যারালাইসিস হয়ে বিছানায় থাকার পর অবশেষে গরিব-অসহায় প্রেমী রানী করকে নতুন একটি হুইল চেয়ার দিয়ে স্বপ্ন পূরণ করল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ৩নং মুন্সীবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ আহমেদ তরফদার। প্যারালাইসিস প্রেমী রানী কর এর বাড়ি উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মির্জানগর গ্রামে। বুধবার সকাল ১১টা
য় হুইল চেয়ারটি পেয়ে খুশিতে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন প্যারালাইসিস হয়ে বিছানায় থাকা প্রেমী রানী কর ও তার পরিবার।
স্থানীয় সুত্র জানায়, প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রেমী রানী কর (৭৫) অচল। দীর্ঘদিন সেই রোগের কারণে বিছানায় পড়ে আছেন তিনি। গরিব, অসহায় পরিবার হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্য না থাকায় বিছানায় সারাদিন কাটে প্রেমী রানী কর এর। বিছানায় থাকতে থাকতে শরীরের বিভিন্ন অংশে পছন ধরার উপক্রম হয়ে আসছে। বিভিন্ন জায়গাতে ধরনা দিলেও তার ভাগ্যে জোটেনি হুইল চেয়ার। বিষয়টি জানতে পেরে মুন্সীবাজার ইউপি চেয়ারম্যান নিজ অর্থে একটি হুইল চেয়ার দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে
দেন প্রেমী রানী কর দিকে। এতে তার পরিবারের দুঃখের কিছুটা হলেও অবসান হলো।
প্রেমী রানী কর বলেন, ‘কোনো রকমেই খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। তার ওপর ঔষধপত্র কিনতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে আমি অচল। আমি হাঁটাচলা করতে পারি না। হুইল চেয়ার কেনারও সামর্থ্য নেই। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও আমার ভাগ্যে জোটেনি। আমাদের চেয়ারম্যা
ন আমার জন্য নতুন একটি হুইল চেয়ার নিয়ে আসায় আমি খুবই খুশি হয়েছি। চেয়ারম্যানের জন্য অনেক আর্শীবাদ রইল। এই গরিব অসহায় মানুষটাকে সহযোগিতা করায় ভগবান যেন নাহিদ আহমেদ তরফদারকে ভালো রাখেন এবং সুস্থ রাখেন ভগবান কাছে আমার এটাই চাওয়া।’
মুন্সীবাজার ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ আহমেদ তরফদার বলেন, ‘আমি যখন জানতে পারি প্রেমী রানী কর একটি হুইল চেয়ারের জন্য বহুদিন ধরে ঘুরছেন। কিন্তু কেউ তাকে হুইল চেয়ার দেয়নি। প্যারালাইসিসের কারণে দুই পা অচল। হাঁটতে পারেন না। সব সময় বিছানায় শুয়ে থাকেন। এই খবর পেয়ে নিজ অর্থে নতুন একটি হুইল চেয়ার ক্রয় করে তার বাড়িতে নিয়ে হাজির হই। হুইল চেয়ারটি পেয়ে প্রেমী রানী করও মহাখুশি হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দ্বিতীয়বারের মতো দুইদিনব্যাপী অমর ২১ শে বইমেলা উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল, কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ জুয়েল আহমদ, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম, লেখক ও গবেষক আহমদ সিরাজ, আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. হেলাল উদ্দিন, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মুনিম তরফদার, কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, কমলগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বই মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ২০টি স্টল রয়েছে। এছাড়া দুইদিনব্যাপী অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে রয়েছে কবি ও লেখক আড্ডা, নাটক/নাটিকা এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ব্যপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পর্যন্ত উপজেলার স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন মন্দিরে দেবী সরস্বতীর আরাধনা করা হয়।
মাঘ মাসের শুক্লাপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সকাল থেকে শুরু হয় পূজার আনুষ্ঠানিকতা। এরপর ফুল আর বেলপাতার সাথে মন্ত্র উচ্চারণ করে দেবীর চরণে দেয়া হয় পুষ্পাঞ্জলি। এসময় উলুধ্বনি ও ঢাকের বাজনায় মুখোরিত হয়ে ওঠে প্রতিটি পূজা-ম-প। অনেক ছোট শিশু শিক্ষা জীবন শুরু করতে দেবীর পায়ে অঞ্জলি দিয়ে নিয়েছে হাতে খড়ি। পূজায় নানা রকমের ফল, মিষ্টি, নৈবদ্য সাজিয়ে দেবীকে অর্পণ করা হয়। পরে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
বিদ্যাদেবীর কৃপালাভের আশায় সরস্বতী পূজা উপলক্ষে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সনাতনী শিক্ষকবৃন্দের আয়োজনে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কেজি স্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে বিভিন্ন কর্মসুচির আয়োজন করা হয়। এছাড়া কমলগঞ্জ আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজ, কমলগঞ্জ সরকারি গণমহাবিদ্যালয়, শমশেরনগর বিএএফ শাহীন কলেজ, কমলগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কমলগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়, এএটিএম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়, কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় কালী বাড়িসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে। এছাড়া পতনঊষার ইউনিয়নের রেসানারগাঁও রাধাকৃষ্ণ যুব ফোরামের আয়োজনে দিনব্যাপী গীতা পাঠ, পদাবলী কীর্ত্তনসহ নানা আয়োজনে সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হয়। বিভিন্ন মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পূজা ছাড়াও অন্য অনুষ্ঠানমালায় ছিল পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরতি এবং আলোকসজ্জা।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা সদরের আম্বিয়া কিন্ডারগার্টেন স্কুল প্রতিষ্ঠার ২২ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত “স্বপ্নজয়” সাময়িকীর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় স্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে “স্বপ্নজয়” সাময়িকীর মোড়ক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে প্রকাশনা উৎসবের শুভ সুচনা করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। পরে অতিথিদের উত্তরীয় ও “স্বপ্নজয় “সাময়িকী তুলে দেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মো. সালাহউদ্দিন ও অধ্যক্ষ মমতা রানী সিনহা।
স্কুলের সহকারি শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় ও স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মো. সালাহউদ্দিন এর সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুলাউড়া সরকারী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হান্নান, কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমদ, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. হেলাল উদ্দিন, লেখক ও গবেষক আহমদ সিরাজ, অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক ও ছড়াকার অবিনাশ আচার্য্য, প্রভাষক সেলিম আহমদ চৌধুরী, রাবেয়া খাতুন, শিক্ষক সমরেন্দু সেনগুপ্ত বুলবুল, বিশিষ্ট নাট্যকার শুভাশীষ সিংহ সমীর, সাংবাদিক পিন্টু দেবনাথ, শাহিন আহমেদ প্রমুখ ।প্রকাশনা উৎসবে আম্বিয়া কিন্ডার গার্টেন স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মিলন মেলায় পরিণত হয় স্কুল প্রাঙ্গন।