ঘৃণিত আর ঘৃণাকারী,
অপরাধ দু’জনেরই মন ছোঁয়ে গেছে" />
  1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
ঘৃণিত আর ঘৃণাকারী,অপরাধ দু’জনেরই মন ছোঁয়ে গেছে - মুক্তকথা
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫১ অপরাহ্ন

ঘৃণিত আর ঘৃণাকারী,
অপরাধ দু’জনেরই মন ছোঁয়ে গেছে

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
  • ৭৪০ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ: বুধবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০১৬।। তিমুথি উইলিয়ামস, ২০১১ সালের ১৮ জুলাই নিউইয়র্ক টাইমস-এ এক বাংগালীকে নিয়ে লিখেছিলেন। লিখেছিলেন ইংরাজীর খুব সুন্দর সুললিত শব্দ চয়ন করে। বলতে চেয়েছিলেন- “ক্ষমাই মহত্ব”! গুলির মুখ থেকে প্রাণ ফিরে পেয়েছিলেন ওই বাংগালী। কিন্তু যে তাকে হত্যা করার জন্য গুলি চালিয়েছিল তিনি তারই প্রাণ রক্ষার জন্য ব্যাপক অভিযানে নামেন! কারণ কি? সেটাই খুঁজে বের করতে ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ মাঠে নামে। তিমুথি’র ভাষায় যে ভাব স্থান পেয়েছিল- ‘ঘৃণিত আর ঘৃণাকারী, অপরাধ দু’জনেরই মন ছোঁয়ে গেছে’- পরিনতিতে, মৃত্যু দন্ডে শাস্তিপ্রাপ্ত ওই মার্ক স্ট্রমেন কিন্তু মৃত্যুর আগে বলে গেছে- But in a defiant last speech, the murderer commanded his executioner: ‘Let’s do this thing’. মানুষের মন কখন যে কোন মোড় নেয় আসলেই বুঝা মুষ্কিল।

[(Read more: dailymail Follow us: @MailOnline on Twitter | DailyMail on Facebook) (২০ জুলাই রাত ৮.৩৫, ২০১১ এ লিথাল ইন্জেকশন দিয়ে স্ট্রমেনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।)]

ঘৃণিত আর ঘৃণাকারী, অপরাধ দু’জনেরই মন ছোঁয়ে গেছে
মার্ক এন্থনি স্ট্রমেন, ৪১ বছরের মানুষ, ডাল্লাসের একজন পাথর কাঠুরে, আরবিয়ান মনে করে কয়েকজনকে গুলি করে এবং ২ জন মারা যান। তার ভাষায়, সে “নাইন ইলেভেন” এ নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার হামলায় ভীষণ ক্রুব্ধ। সে গুলি করে হত্যা করেছে ভাসুদেব পেটেল(৪৯) নামের একজন ভারতীয় অভিবাসীকে। যিনি কোন আরবীয়ানতো ননই, তিনি মুসলমানও নন্। আরেকজনকে সে হ্ত্যা করেছে, যার নাম ওয়াকার হাছান, একজন পাকিস্তানে জন্ম মুসলমান। তৃতীয় একজনকে সে খুব কাছ থেকে মুখে গুলি মেরেছিল কিন্তু কালের চক্র তাকে হত্যা করতে দেয়নি, তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পেয়ে গেছেন। তিনি হলেন ৩৭ বছর বয়স্ক রইস ভূঁইয়া। ইনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রাক্তন ‘পাইলট’ ছিলেন। স্ট্রমেন স্বীকার করেছেন যে তিনি গুলি করেছেন এবং বুধবারে তার ফাঁসী হবার কথা। বাংগালী রইস ভূঁইয়া প্রানে রক্ষা পেলেও তার ডান চক্ষু চলে যায়। ওই চোখ তার অনেকটা আন্ধা হয়ে গেছে। তিনি বহুদিন যাবৎ একটি ওয়েবসাইট খুলে খুনের সাজাপ্রাপ্ত স্ট্রমেনকে ফাঁসী থেকে বাঁচাতে একটি দরখাস্ত নিয়ে জনমত গঠনে সময় ব্যয় করছেন। তিনি টেক্সাসের বিভিন্ন দপ্তরপ্রধানদের সাথে সভা করে যাচ্ছেন স্ট্রমেনের ফাঁসী মওকুপের জন্য।
এ ঘটনায় নিউইয়র্ক টাইমসের চোখ পড়ে তার উপর এবং পড়াটাই স্বাভাবিক। টাইমস তার এক টেলিফোন সাক্ষাৎকার নেয়। এদিকে, স্ট্রমেন টাইপ করা এক চিঠিতে টাইমস-এর প্রশ্নের উত্তর দেন। তার সেই উত্তরের তারিখটি ছিল ২৬শে জুন। উত্তর সম্বলিত সেই চিঠিতে, ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর তারিখের ‘ওয়ার্লড ট্রেড সেন্টার’ এর একখানা ছবি ছিল। ছবিতে দেখা যাচ্ছিল ‘ওয়ার্লড ট্রেড’ সেন্টারের উত্তর দিকের দালানটি যখন ধ্বসে পড়ছিল তখনই দক্ষিণ দিকের দালানটিতে আঘাত হানার জন্য ইউনাইটেড এয়ার লাইন্সের ফ্লাইট নং ১৭৫ অদূরে আকাশে অবস্থান করছে।

টাইমস: মি: ভূঁইয়া, ২০০১ইং এর ২১শে সেপ্টেম্বর তুমি তোমার এক বন্ধুর সার্ভিস ষ্টেশনে কেরাণীর কাজ করছিলে। তোমার কি মনে আছে ওই দিন সম্পর্কে।
উত্তর: আমি কয়েক দফা ডাকাত কবলিত হয়েছিলাম। এ একটি বিপজ্জনক ‘নেইভারহুড’ ছিল। মানুষ ষ্টোরে আসতো টেলিভিশন এবং কম্পিউটার বিক্রির জন্য। এক সময় একজন আসলেন একটি বন্দুক নিয়ে এবং আমি ভেবেছিলাম সে ওটি বিক্রি করতে নিয়ে এসেছে। কিন্তু ওই লোকটি বলল, তুমি যদি আমাকে কিছু টাকা না দাও তা’হলে আমি তোমার মাথা উড়িয়ে দেবো!
সেই ২১ শে সেপ্টেম্বর, শুক্রবার দিন অনুমান বিকাল সাড়ে ১২ টা। ওই দিন ব্যবসা খুব ভাল ছিলনা। বৃষ্টি এই আসছিল আবার যাচ্ছিল। কাছেরই নাপিতের দোকানের প্রতিবেশী এসে কিছু ক্রিপ্স ও ড্রিঙ্কস নিলেন।
এর পর একজন আসছিলেন দেখছিলাম। মাথায় টুপি, চোখে সানগ্লাস ও গলায় জড়ানো একখানা রুমাল আবার হাতে একটা বন্দুক। আমি ভাবছিলাম কোন ডাকাতি মনে হয়। বল্লাম, “দয়াকরে আমায় গুলি করো না! যা আছে নিয়ে যাও।” লোকটি উত্তরে বললো, “তুমি কোথাকার লোক গো?” লোকটি তখন আমার থেকে ৪-৫ ফুট দূরে। এটি ছিল দু’নলা বন্দুক। আমার মেরুদন্ডে ঠান্ডা অনুভব করলাম। বল্লাম, “মাপ করুন?” সাথে সাথেই আমি অনুভব করলাম লক্ষ লক্ষ মৌমাছি আমার মুখের উপর যেনো হুল ফুটিয়ে দিয়েছে। এর পরই একটি বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনেছিলাম। আমি আমার মা-বাবা ছেলে-মেয়ে আর স্ত্রী’র চেহারা দেখছিলাম এবং তার পরই আমার কবর দেখতে পাচ্ছিলাম, আমি ভাবছিলাম “আমি কি আজই মরে যাচ্ছি না-কি?” আমি নিচের দিকে তাকালাম, দেখি আমার মাথা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। যেনো মগজ বেরিয়ে আসছে তাই আমার দু’হাত দিয়ে মাথায় ধরলাম আর গোঙ্গানির মত ‘মা’ বলে ডেকে উঠলাম। আমি তাকালাম দেখি ওই লোকটি এখনও আমার দিকে চোখ বড় করে তাকিয়ে আছে, ভাবলাম, নিশ্চয়ই আমাকে আবার গুলি করবে যদি আমি মাটিতে পড়ে না যাই, যাতে সে বুঝে আমি মারা গেছি। 
আমার রক্তে মেঝে ভিজে যাচ্ছিল। পরে সে চলে গেলো। আমি বিশ্বাস করতে পারিনি সে আমাকে গুলি করেছে। আমি বুঝেছিলাম মনে হয় অলিক কোন চিন্তার ভেতর দিয়ে আমি স্বপ্ন দেখছি। আমিতো কোন ভুল কিছুই করিনি। আমি তো ওই লোকের প্রতি কোন হুমকি দেইনি। আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি যে কেউ এভাবে অন্য কাউকে গুলি করতে পারে।

Screen Shot 2016-09-14 at 12.45.21প্রশ্ন: এর পর কি হয়েছিল?
উত্তর: আমি বাইরে যেতে চাচ্ছিলাম। আমি প্রতিবেশী নাপিতের দোকানের দিকে গেলাম আর অমনি ওরা দৌড়ে পালালো। ওরা দেখছিল জবাই করা মোরগীর মত আমি রক্তে জবজবা হয়ে দৌড়চ্ছি। দোকানীরা ভেবেছিল ওই বন্দুকধারী লোকটি মনে হয় আমার পেছনে পেছনে আসছে। নাপিতদোকানের আয়নায় আমি আমার মুখ দেখে বিশ্বাসই করতে পারিনি যে এই আমি বলেই রইস ভূঁইয়া কাঁদলেন। এই কয়েক মিনিট আগে ছিলাম ছিমছাম টিসার্ট ও পেন্ট পড়া টেনিস জুতা পায়ে এক সুন্দর সুশ্রী যুবক(রইস ভূঁইয়া এবার আরো জোড়ে কাঁদলেন)। মাপ করবেন, আমি বিগত ৯ বছরের জন্য কাঁদছিনা। আমি এমনই সৌভাগ্যবান ছিলাম যে ওখানে তখন একটি এম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে ছিল। আমি আল্লাহ’ কে ডাকছিলাম, কোরাণ থেকে পাঠ করছিলাম আর ক্ষমা চাচ্ছিলাম। মনে মনে বলছিলাম আমি আমার উত্তম কাজটি করবো। আমি মনে মনে বললাম যে আমার জীবন আমি গরীবের জন্য উৎসর্গ করবো। আমি অনুভব করছিলাম আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে আর আমার মগজও যেনো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন: তোমার জখমের ব্যাপ্তি কি ছিল?
উত্তর: আমার মুখে বন্দুকের ৩৮টি ছোট গুলি লেগেছিল। আমি আমার চোখ খুলতে পারছিলাম না কিংবা চাপা খুলে কথা বলতে পারছিলাম না। এমনকি কিছু খেতে বা পান করতে পারছিলাম না। এটি এতো বেদনাদায়ক ছিল যে আমি ঢোক গিলতে পারছিলাম না কারণ আমার গলায়ও গুলি লেগেছিল।হাসপাতালে কয়েক ঘন্টা থাকার পর আমার বাঁচক্ষু খোলতে পেরেছিলাম। বন্দুকের গুলির জখমের কারণে আমার মুখ বিকটরূপে ফুলে গিয়ে ভীতিপ্রদ হয়ে উঠেছিল। আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে এটি আমার মুখচ্ছবি। আমি খোদার কাছে বলেছিলাম-“খোদা তুমি আমার আসল মুখ ফিরিয়ে দাও।” (চিকিৎসার পর ওইদিনই মি: ভূঁইয়াকে হাসপাতাল থেকে ঘরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তাকে বলা হয়েছিল যে তার স্বাস্থ্য বীমা নেই। পরবর্তী কয়েকমাস তিনি মানুষের ঘরে ঘরে ঘুমিয়েছেন। ডাক্তারের বেদনানাশক বড়ির সেম্পল বা চোখের ড্রপ এর উপরই ভরসা করতে হয়েছিল। তার ডান চোখে কয়েকটি অপারেশন হয়েছিল; বর্তমানে ওই চোখে খুব ভাল দেখেন না।)

প্রশ্ন: মি: স্ট্রমেন স্বীকার করেছে সে তুমাকে মারতে চেয়েছিল। তুমি কেনো তার জীবন রক্ষার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছো?
উত্তর: আমি আমার শিক্ষক আর মা-বাবার কাছ থেকে ভাল শিখে বড় হয়েছি। তারা আমাকে উন্নত নৈতিকতা আর দৃঢ় বিশ্বাস শিখিয়ে বড় করেছেন। তারা আমাকে বিনয়ী হতে শিখিয়েছেন। এমনকি কেউ যদি আঘাত করে তা’হলে প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা না করতে শিখিয়েছেন। শিখিয়েছেন এদের ক্ষমা করে দিও। আর সামনের দিকে এগিয়ে যেয়ো। এটি ওদের ও তোমার জন্য একটা কিছু ভাল নিয়ে আসবে। আমার ধর্মীয় শিক্ষাও আমাকে তাই শিখিয়েছে। রইস ভূঁইয়া বলেন, স্ট্রমেন এ কাজটি করেছে একটি যুদ্ধ মনে করে আর বহু আমেরিকান এভাবে করতে চায় কিন্তু একমাত্র স্ট্রমেনই সাহসের সাথে একাজটি করতে পেরেছে। একজন মুসলমানকে গুলি করেছে। এ ঘটনার পর আমি কেবলমাত্র এদেশে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছিলাম। আমি স্থির করি যে ক্ষমা করে দেয়াটাই বড় কথা নয়। সে যা করেছে শুধুমাত্র অজ্ঞানতা থেকেই করেছে। আমি স্থির করি যে এই লোকের জীবন বাঁচাবার চেষ্টায় একটা কিছু আমাকে করতেই হবে। এগারো সেপ্টেম্বরে যা ঘটেছিল তার জবাবে ডাল্লাসে একজনকে হত্যা কোনভাবেই যুক্তিসংগত নয়।

Screen Shot 2016-09-14 at 12.43.54প্রশ্ন: তুমি যদি স্ট্রমেনের সাথে দেখা করতে পারো তা’হলে তা’কে কি বলবে?

উত্তর: মি: স্ট্রমেনের সাথে একটি সাক্ষাতের সুযোগ করে দেয়ার জন্য আমি অনুরোধ জানিয়েছিলাম। আমি অধীর আগ্রহে তার সাথে দেখা করার অপেক্ষায় আছি, আমাদের মতামত বিনিময়ের আশায়। আমি তার সাথে ভালবাসা আর করুণা বিষয়ে আলাপ করবো। আমরা সকলেই কিছু ভুল করি। স্ট্রমেন আমার মতই একজন মানুষ। পাপকে ঘৃণা কর পাপীকে নয়। এটা খুবই প্রয়োজন, আমি তার সাথে দেখা করে বলতে চাই যে আমি তার বিষয়ে অনুভব করি এবং আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি স্ট্রমেনের একটা সুযোগ পাওয়া উচিৎ। আমি আমেরিকাকে কখনও ঘৃণার চোখে দেখিনি। স্ট্রমেন অনেক মানুষকে শিখাতে পারবে। তার ব্যাপারে কি ঘটতে যাচ্ছে চিন্তা করে আমি আবেগপ্রবণ হয়ে উঠি। আমি ঘুমুতে পারিনা। যখনই আমি ঘুমুতে যাই, আমার মনে পড়ে, আরেকজন মানুষ আছে আমারই মত যাকে আমি চিনি, সে হয়তো চিন্তা করছে কি ঘটতে যাচ্ছে তার জীবনে- একটি বিছানায় বেঁধে তাকে হত্যা করা হবে। এ চিন্তা আমাকে আবেগময় করে তুলে এবং আমি অশেষ দুঃখ বোধ করি আর ভাবি আরো বেশী কিছু করা দরকার।

প্রশ্ন: তুমি কেমন আছো মি: স্ট্রমেন?
উত্তর: “আর মাত্র ২৫দিন আছে আমার হাতে এরপর টেক্সাসওয়ালারা আমায় চেপ্টা পাতলা ফিতা দিয়ে বেঁধে বিষাক্ত পানীয় দিয়ে পরপারে পাঠিয়ে দেবে। আজ আর কাল কোন না ভাবে আমাদের সকলকেই তো যেতে হবে। সবই ভাল, আত্মা তো সবকিছুরই উপরে। এই তো এক পেয়ালা কফি নিয়ে বসে আছি আর আমার রেডিওতে কিছু পুরনোদিনের প্রিয় রক গান বাজছে শুনছি। শুনুন না গানটা, কি কাকতালীয় মিল, লিনইয়ার্ডের সেই গান- খাঁচা থেকে “পাখীকে মুক্ত কর”…।

প্রশ্ন: রইস ভূঁইয়া তোমাকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে, তার এ কাজকে তুমি কি মনে কর?

উত্তর: “রইস ভূঁইয়া, হ্যাঁ- প্রেরণার এক অসাধারণ উজ্জীবনী আত্মার অধিকারী। উচ্চস্বরে স্ট্রমেন বলেন, আমি যা করেছি তার পরেও সে আমাকে বাঁচাবার জন্য এগিয়ে এসেছে – তার এ কাজ আমার এবং দুনিয়ার অনেকেরই অন্তর ছোঁয়ে গেছে, বিশেষ করে বিগত দশ বছর যাবৎ আমরা সকলেই শুধু শুনে এসেছি ইসলামে বিশ্বাসীরা কি না জঘন্য হতে পারে; রইস ভূঁইয়ার একাজ প্রমাণ হয়ে থাকলো যে সকলই যেমন ভালও নয় তেমনি খারাপও নয়।”

Screen Shot 2016-09-14 at 12.58.57প্রশ্ন: বলুন, আপনি এখন কি ভাবছেন, কয়েক সপ্তাহ পরেই আপনার মৃত্যুদন্ড কার্য্যকর হবে?

উত্তর: “এতোদিন আমি, আমার সমর্থনকারী আর বন্ধু-বান্ধবগন সকলেই আমার প্রান রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন কিন্তু এখন মুসলিম সম্প্রদায়েরই এমন একজন একাজে শরিক হয়েছেন যিনি খুবই লক্ষ্য করার মত ব্যক্তিত্ব- রইস ভূঁইয়া, আমার ঘৃণার আক্রোশ থেকে রক্ষা পাওয়া ব্যক্তি। ধর্মের প্রতি তার অগাধ নিখাদ বিশ্বাসই তাকে ক্ষমার অযোগ্যকেও ক্ষমা করার শক্তি দিয়েছে, এটি সত্যিকার অর্থেই আমার কাছে প্রেরণাদায়ক এবং আমাদের সকলের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকা উচিৎ। ঘৃণা থেকে মুক্ত হওয়ার এখনই প্রয়োজন, এ পৃথিবীতে আমরা সকলেই একত্রে আছি। টেক্সাসের আমার শেকড় আর আমার খৃষ্ট বিশ্বাস আমার উপলব্দিকে আরো গভীর করে দিয়েছে। প্রায় দশ বছর হয়ে গেছে সারা বিশ্ব ঘুরে দাড়ানো বন্ধ করে দিয়েছে, আর একটি জাতি হিসেবে আমরা কখনই ভুলতে পারবো না, সেদিন আমরা কি দেখেছিলাম, অন্ততঃ আমি তো পারবো না, কিন্তু আজ আমি কি ভাবছি তোমাকে বলতে পারি, এজন্য আমাকে বাঁচাতে রইস ভূঁইয়ার কাজের কাছে আমি কৃতজ্ঞ থাকবো যেখানে আমি তাকে খতম করতে চেয়েছিলাম। এখনও ভগ্নহৃদয়ের বহু মানুষ মনভর্তি ঘৃণা নিয়েই আছে, এবং এই এখানে টেক্সাসের জেল খোপে বসে আমি আমার মৃত্যু প্রহর গুনছি, এখানকার ভেতরে মানুষের মনে ও অন্তরে কি কাজ করছে তা খোলাখুলি প্রকাশ করার সুযোগ একমাত্র আমাকেই দেয়া হয়েছে এবং আশা করছি একটা কিছু ভাল ফলাফল বেরিয়ে আসবে। একে অন্যকে আরো বেশী করে বুঝা আর ক্ষমাশীল হওয়া আমাদের প্রয়োজন, প্রয়োজন ঘৃণা কমিয়ে আনা।” মি: স্ট্রমেন স্বাক্ষর করেছেন- “টেক্সাসের আওয়াজ, টেক্সাসের গর্ব, সত্যিকারের আমেরিকান মৃত্যুর জন্য বেঁচে আছে- মরছে বাঁচার জন্য।”
(চমৎকার আর অশেষ শিক্ষনীয় ওই নিবন্ধটি শ্রদ্ধেয় মোয়াজ্জেম ভাই তার ফেইচবুক থেকে নেয়া। সামান্য কিছু যুক্ত করেছি বাদবাকী বঙ্গানুবাদ করেছি। আর দেখতে হয়েছে ওই সময়ের টাইমস এবং আরো কিছু তথ্যসূত্র)

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT