ভ্দ্র মহোদয় ও মহিলাগন,
সীমান্ত চুক্তি দ্বিপক্ষীয় সহযোগীতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক মাইল ফলক, নিশ্চয়তা দেয় আঞ্চলিক নিরাপত্তার। একই সাথে আমাদের সমুদ্রসীমাও নিশ্চিত করা গেছে। উভয় দেশের মাটি ছোঁয়ে যাওয়া ৫৪টি নদীর মধ্যে গঙ্গার পানিবন্টনে ১৯৯৬সালে উভয় দেশের মতৈক্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অপর একটি “মাইল স্টোন”। আমরা অবশ্য তিস্তা সহ অন্যান্য নদীবাহিত পানির ন্যায্য অংশের বিষয় নির্ধারণের কাজকেও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। যদিও তিস্তা বিষয়ে বার বার সম্মত হওয়ার পরও এখনও অমিংমাসীত রয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ উভয়পক্ষেরই সুযোগ সুবিধার জন্য নিরাপত্তার কিছু বিষয় আছে যা উভয় পক্ষকেই মোকাবেলা করতে হবে। এতোসবের মধ্যেও আমরা এগিয়ে গেছি ব্যবসার ক্ষেত্রে এবং ইতিমধ্যেই আপনারা হয়তো জানেন যে বর্তমানে বাংলাদেশ হলো দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী অংশীদার। বাংলাদেশ আরো বিনিয়োগের জন্য ভারতকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং ইতিমধ্যেই দু’টি ‘অর্থনৈতিক অঞ্চল’ কেবলমাত্র ভারতের বিনিয়োগের জন্য বরাদ্ধ দিয়েছে।
আমাদের যোগাযোগ সম্পর্ক ভূমিতে, জলে এবং আকাশে বৃদ্ধি পেয়েছে। সমুদ্র সম্পদ সকল মানুষের উপকারে লাগানোর জন্য সুনীল অর্থনীতির পরিকল্পনা চলমান আছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে। উভয় দেশের এই ইতিবাচক পদক্ষেপ কাজে লাগতে শুরু করেছে যা আস্তার জায়গাকে সমৃদ্ধ করছে। এই অবস্থা ইন্দো-পেসিফিকের আশিয়ান অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলির জন্য উপযুক্ত সংযোগ তৈরী করতে সহায়ক হচ্ছে।
ভারতের স্বপ্ন বিশেষ করে মহামান্য প্রধানমন্ত্রী মিঃ মোদীর কর্মকৌশল ঢাকার সহযোগীতায় বাস্তবে রূপ নেবে যা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন উপায়ে সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করেছে ঢাকা। সহায়তার এই অবস্থা বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাংলাদেশ সংলগ্ন রাজ্যগুলি তথা উভয় প্রতিবেশীর এক ভিন্ন ভবিষ্যত আশা উন্নতি ও সাফল্যের নির্দেশ দিচ্ছে।
মহামান্য মোদীর কর্মকৌশল যে কর্মকৌশল ঢাকার সাহায্যে বাস্তবায়িত করা যায় এবং এই সহায়তার হাত ঢাকা ইতিমধ্যেই সম্প্রসারিত করে রেখেছে, যা কি-না এখনও বাংলাদেশ সংলগ্ন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের আশা, উন্নতি ও সাফল্যের ভবিষ্যৎ। ভারতের বাংলাদেশ লাগোয়া এই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় এবং এই দৃষ্টিকোন থেকে বিষয়টি ভারতের খুবই জরুরী। ভারতের এই অঞ্চলের ভৌগলিক অবস্থানই বলে দেয় এর ভবিষ্যৎ ভাগ্যের কথা। এই দুই প্রতিবেশী অবিচ্ছেদ্যভাবে অর্থনীতি ও কৌশলগত অগ্রাধিকার নিয়ে মধ্যস্থ হয়ে পারস্পারিক একত্রে থাকতে হবে।
পঞ্চাশ বছর পর, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের চড়াই-উৎরাই পাড় হয়ে এখন উভয় দেশ সুদৃঢ় হয়েছে। বর্তমান ভৌগলিক অবস্থার নিরিখে ক্ষমতা ও শক্তির গভীরে গিয়ে খুঁজে দেখার এখন সময় এসেছে।
দক্ষিন এশিয়া কমপক্ষে ১.৭ বিলিয়ন মানুষ নিয়ে প্রাচীন সভ্যতার একটি অঞ্চল। এটি একটি বৈশ্বিক বাজারও বটে। সেখানে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বিশ্বে, বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহৎ শান্তিরক্ষীবাহিনীর দেশ। দক্ষিন এশিয়া, স্বীকৃত পারমানবিক ক্ষমতার অঞ্চল।
ভারতের খেলাধূলা, সংস্কৃতি, বিনোদন শিল্প; বিশ্ব অঙ্গনে এক অনবদ্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে। হিমালয় থেকে সুন্দরবন এবং সাগর সহ বদ্বীপের মত বাংলাদেশ, এ বিশাল বিস্তৃত এলাকা সম্পদে ভরপুর যা অনুসন্ধান করে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের বিপুল মানবসম্পদ যদি দক্ষ ও শিক্ষিত করা যায় তা’হলে এরা শুধু দক্ষিনেই নয় সারা বিশ্বের চেহারা পাল্টে দেয়ার শক্তি হতে পারবে। দক্ষিন এশিয়াকে আমরা একটি ভোক্তা সমাজে বদলে দিতে পারি, একটি বিশ্ব অর্থনৈতিক শক্তিতে রূপান্তরীত করতে পারি।
বাংলাদেশ মানব সম্পদে, পানি সম্পদে আশীর্বাদপুষ্ঠ এক প্রাচীন সভ্যতার দেশ। আমরা যখন দেখি কেউ আমাদের এই সৌভাগ্যকে কেড়ে নিতে চায় তখন আমাদের উচিৎ আমাদের সম্পর্ককে এমন এক উচ্চতায় মজবুত করা যাতে উপলব্দি করার ক্ষমতা সুগম্য হয়। |