লন্ডন: শনিবার, ২২শে পৌষ ১৪২৩।। আর খুব দূরে নয়, বেশী হলে মাস দেড়েক। নাসার ‘নিওওয়াইজ’ মহাকাশযান দেখেছে, পৃথিবীর দিকে রীতিমতো ঝোড়ো গতিতে ছুটে আসছে দুই অচিন মহাজাগতিক বস্তু। পৃথিবীর দিকে তারা ছুটে আসছে অসম্ভব গতিতে!
অবশ্য দেখেছে খুব দূর থেকে এক রকম ঝাপসা ভাবেই ধেয়ে আসা ওই দুই আগন্তুক বস্তুকে। তাদের একটিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মনে হয়েছে ভয়ঙ্কর একটি গ্রহাণু বা অ্যাস্টারয়েড। অন্যটি ধূমকেতু। তাঁদের এও মনে হয়েছে, বহু দূর থেকে যাকে ‘গ্রহাণু’ বলে মনে করা হচ্ছে, তা একটি ধূমকেতুও হতে পারে।
আর ঠিক মাস দেড়েকের মধ্যেই ভূপৃষ্ঠে আচড়ে পড়তে পৃথিবীর কক্ষপথে ঢুকে পড়বে দু’-দু’টি অচেনা, অজানা মহাজাগতিক বস্তু।
এই দুই আগন্তুকের কথা আগে থেকে আমাদের জানা ছিল না। হঠাৎ করেই গত নভেম্বরে নাসার ‘নিওওয়াইজ’ মহাকাশযানের টেলিস্কোপে ওরা দু’জন ধরা পড়ে। গ্রহাণুটি ছুটে আসছে বৃহস্পতির পাশ কাটিয়ে গ্রহাণুপুঞ্জ ও মঙ্গলের কক্ষপথ ছুঁয়ে পৃথিবীর দিকে। এই গ্রহাণুটির আবিষ্কার হয়েছে সদ্যই। ২০১৬-র ২৭ নভেম্বরে। এর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘2016-WF9’। এই ভয়ঙ্কর গ্রহাণুটি পৃথিবীর কক্ষপথে ঢুকে পড়বে আর ঠিক মাসদেড়েক পরে। ফেব্রুয়ারির ২৫ তারিখে। আমাদের এই পৃথিবী নামক গ্রহটি থেকে তখন তার দূরত্ব থাকবে ৩ কোটি ২০ লক্ষ মাইল। নভেম্বরে যখন প্রথম হদিশ মিলেছিল এই গ্রহাণুটির, তখন সেটি বৃহস্পতির কক্ষপথে চক্কর মারছিল। আর নিজে লাট্টুর মতো বনবন করে ঘুরতে ঘুরতে বৃহস্পতিকে পাক মারছিল গ্রহাণুটি পৃথিবীর ৪ বছর ৯ মাস সময়ে। এই ‘2016 WF9’ আকারে বেশ বড়। লম্বায় ০.৩ থেকে ০.৬ মাইল বা আধ কিলোমিটার থেকে ১ কিলোমিটার মতো।
তারপর…? ততটা বিপদের আশঙ্কা নেই এই গ্রহাণুটি থেকে। কিছুই হবে না ও দুটু ফিরে যাবে গ্রহাণুপুঞ্জের দিকে। বলেছেন আমেরিকার জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘‘নিওওয়াইজ’ মহাকাশযানের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে আমরা এখনও পর্যন্ত যেটুকু হিসেব কষতে পেরেছি, তাতে বলা যায়, ততটা বিপদের আশঙ্কা নেই। আপাতত পৃথিবীর কক্ষপথে ঢোকার পর তা আমাদের বাসযোগ্য গ্রহটিকে পাক মেরে আবার চলে যাবে সৌরমণ্ডলের বাইরের দিকে।” (আনন্দবাজার থেকে সংগৃহীত)