মুক্তকথা: বুধবার, ১০ই আগষ্ট ২০১৬।।
আজ থেকে বারো বছর আগে চুরি যাওয়া নোবেল পদক আজও উদ্ধার করতে পারেনি ভারত। রবীন্দ্রভবনের সংগ্রহশালা থেকে ২০০৪ সালের ২৫শে মার্চ চুরি গিয়েছিল রবীন্দ্র নাথের নোবেল পদক ও ওই সাথে আরো ৫০টি মূল্যবান সামগ্রী। তখন আজকের মূখ্যমন্ত্রী ছিলেন বিরোধী দলের নেত্রী। তখন তিনি বলেছিলেন এ চুরির পেছনে চক্রান্ত ও ষঢ়যন্ত্র আছে।
নবান্ন সূত্রের বরাতে বর্তমান লিখেছে যে চুরি যাওয়া নোবেল পুরস্কারটির খোঁজ করতে গিয়ে গোয়েন্দাদের কাছে এক বিদেশি নাগরিকের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। জানা গেছে, ওই বিদেশি শান্তিনিকেতনে ঢুকেছিলেন নোবেল চুরির কিছুদিন আগে। সেখানে ছিলেনও। তারপর রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান। গোয়েন্দাদের নজরে থাকা এক ব্যক্তি এই প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ক্লু দিয়েছে। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নোবেলসহ অন্যান্য সামগ্রী যারা চুরি করে, তারা সকলেই এক জায়গার ছিল না। বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছিল। যাদের মধ্যে কোনও একজনের সঙ্গে ওই বিদেশি নাগরিকের যোগাযোগ ছিল। সেই সূত্রেই ওই বিদেশি এখানে ঢোকে। পরে সীমান্ত পেরিয়ে সে বাংলাদেশে চলে যায়। সেখানে সে ওই দুষ্কৃতীদের জন্য অপেক্ষা করছিল। মুর্শিদাবাদ সীমান্ত দিয়ে নোবেল সীমান্তের ওপারে যেতেই সরাসরি চুরি যাওয়া নোবেল হাতবদল হয়নি। প্রথমে এক স্বর্ণব্যবসায়ীর কাছে তা যায়। এরপর সেখান থেকে তা চলে যায় ওই বিদেশি নাগরিকের কাছে।
এক গোয়েন্দা কর্তার কথায়, নোবেল কার কাছে আছে বা কোথায় আছে, এ নিয়ে কিছুই জানানো যাবে না। তবে কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। আর যার ভিত্তিতে তাঁরা আশাবাদী, খোয়া যাওয়া নোবেল তাঁদের হাতে আসবে অচিরেই। আর এর জন্য যা যা করা দরকার, প্রায় সমস্ত কিছুই তাঁরা সেরে ফেলেছেন। সূত্রের খবর, গোপনে বিদেশের বেশ কয়েকজন পুলিশকর্তার সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন তাঁরা। যাঁরা অনেক কিছু তথ্য দিয়েছেন বলে খবর। রাজ্য পুলিশের এক কর্তার কথায়, মুখ্যমন্ত্রীই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। তাঁর হাতে পুলিশের একাধিক দপ্তর রয়েছে। স্বরাষ্ট্র দপ্তরের যাবতীয় গোপন রিপোর্ট তিনিই দেখেন। তাঁর কথায়, লক্ষ্যণীয় বিষয় হল এর আগে নোবেল উদ্ধার নিয়ে একটিবারের জন্যও মুখ্যমন্ত্রী মুখ খোলেননি। অথচ এখন এ নিয়ে নিজের বক্তব্য জানালেন। তা থেকেই বোঝা যায়, আগে এ নিয়ে কোনও তথ্য তাঁকে পুলিশের কোনও বড়কর্তা জানাননি। এবার সেই খবর এসেছে। আর যে পুলিশকর্তা এই তথ্য স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছেন, তিনি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত না হয়ে এতবড় বিষয় কখনই জানাবেন না। আর তার আগে তিনি নিশ্চয়ই নানাভাবে পরীক্ষা করে নিয়েছেন একাধিকবার। যাতে পরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর মুখ না পোড়ে। নির্দিষ্ট নথি হাতে নিয়েই ওই কর্তা সমস্ত বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর কানে তুলেছেন। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। আর এ কারণেই যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারিভাবে তদন্তভার হাতে আসছে রাজ্যের হাতে, ততক্ষণ কেউ সরকারিভাবে মুখ খুলছেন না।(বর্তমান থেকে সংক্ষেপিত)