মুক্তকথা, লন্ডন: ভারত কর্ণধার খুঁজছে! কে হবেন ভারতের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। বিজেপি’র নেতা অমিত শাহ ৩ সদস্যের এক কমিটি করে দিয়েছেন একজন ভারতের প্রেসিডেন্ট বা রাষ্ট্রপতি খুঁজে বের করার জন্য। কমিটির তিন সদস্য হলেন রাজনাথ সিং, অরুণ জেঠলি ও এম ভেনকাইয়া নাইডু। এরা রাজনৈতিক মতাদর্শের বিভিন্ন দলকে নিয়ে বসবেন একজন রাষ্ট্রপতি খোঁজে বের করার জন্য। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কোন একজনের বিষয়ে সহমতে পৌঁছার চেষ্টা করবেন এরা।
সংবাদ মাধ্যম থেকে যতদূর জানা গেছে এই ত্রয়ী গত বুধবার বেশ কিছু রাজনৈতিক দল নিয়ে বসেছিলেন। উপস্থিত রাজনৈতিক দল ও উপদলগুলি ছিল- কংগ্রেস থেকে গোলাম নবি আযাদ ও মল্লিকার্জুন খারজ, জনতা দল ইউনাইটেড এর পক্ষ থেকে শরদ যাদব, রাষ্ট্রীয় জনতা দল থেকে লালু প্রসাদ, সিপিআই(মার্কসিস্ট) নেতা সিতারাম ইয়েচুরি এবং ন্যাশনেলিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রফুল্ল প্যাটেল, ত্রিণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ওব্রিয়েন, দ্রভিদমুনেত্রা কাজাগমের আর এস ভারতি, সমাজবাদি পার্টির রামগোপাল যাদব এবং ভোজন সমাজ পার্টির সতীশ চন্দ্র মিশ্র। কিন্তু কোন ফলাফল এখনও জানা যায়নি।
বিহারের চীপ মিনিষ্টার নিথীশ কুমার প্রণব মুখার্জীকে আরেক দফা প্রেসিডেন্টের পদে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। এ ছাড়াও আরো কিছু নাম রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরপাকে আছে।
প্রাক্তন কূটনীতিক মহাত্মা গান্ধীর নাতি গোপাল কৃষ্ণ গান্ধীর নামও জোরেসুরে শুনা যাচ্ছে। বাম দলগুলো তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেখতে চায়। তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সাথেও সম্পৃক্ত নন।
জিনিউজের মতে ঝাড়খন্ডের গভর্নর দ্রৌপদি মুরমু এর নাম আনতে পারে বিজেপি নেতৃত্ত্বাধীন এনডিএ। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই নেত্রী ২০১৫ সালের ১৮মে ঝাড়খন্ডের গভর্নর হয়েছিলেন। তিনি দু’দুবার ময়ূরভঞ্জ থেকে বিজেপি’র এমএলএ ছিলেন। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কোন রাষ্ট্রপতিও এর আগে নেয়া হয়নি।
এর পর আরো যাদের নাম আসতে পারে তারা হলেন বিজেপি থেকে এল কে আদভানি, লোকসভা স্পীকার সুমিত্রা মহাজন, মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, মন্ত্রী ভেনকাইয়া নাইডু ও বর্তমান সামাজিক ন্যায় বিচারের মন্ত্রী থাওয়ার চান্দ ঘেলট। থাওয়ার মধ্যপ্রদেশের দলিত নেতা। আর এস এস তাকে সমর্থন করে বলে গণমাধ্যম থেকে শুনা।
কৌড়া ডাইজেস্ট থেকে পাওয়া যায় আরো কিছু নাম তাদের মধ্যে প্রকৌশলী ডঃ এলাত্তুবালাপিল শ্রীধরন একজন। তাকে ভারতের মেট্রোমেন বলা হয়। তিনি সেই ব্যক্তি যিনি কঙ্কন রেলসেতু মেরামত কাজ, ভারত রেল কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের শতভাগ আগে সম্পন্ন করেছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ ওই রেলসেতু মেরামত করতে ভারত রেল সময় দিয়েছিল ৬মাস। তিনি ৬মাস কমিয়ে ৩মাস ধরে মাত্র ৪৬দিনে ওই সেতু মেরামত করেছিলেন। দিল্লী ও কলকাতা মেট্রো এর নির্মাতাও তিনি।
আরেকজন প্রখ্যাত কূটনীতিক শশি থারোর নামও শুনা যাচ্ছে কৌড়াসহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে। তিনি মূলতঃ কংগ্রেসের লোক। কিন্তু মেধার পরিবর্তে বুনিয়াদি ধারার কংগ্রেসের রাজনীতির তিনি ঘোর বিরুধী। আর এ মানসিকতা মোদি শিবিরে ভিড়তে তাকে সহায়তা করতে পারে বলে অনেক বিশ্লেষকের অভিমত। শশি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বক্তা, কূটনীতিক ও সর্বোপরি একজন লেখক সাংবাদিকও। তার বুদ্ধীর দীপ্তি ও বাকচাতুর্য্য বিষ্ময়কর। কেরালা এলাকার থিরুভার্ননথাপুরম থেকে তিনি লোকসভার একজন এমপি। একসময় তিনি ষ্টেট মিনিষ্টারও ছিলেন। তিনি একাধারে ২৯ বছর জাতিসংঘে কাজ করেছেন। আন্ডার সেক্রেটারী জেনারেল হিসেবে তিনি সর্বশেষ বান কি মুন এর সাথে কাজ করেছেন। তার ১৬খানা বাণিজ্যসফল পুস্তক রয়েছে। এ ছাড়াও তিনি টাইম, নিউইয়র্ক টাইম, ওয়াশিংটন পোষ্ট, নিউজ উইক, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এশিয়া এইজ, ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস, দি হিন্দু প্রভৃতিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন ও লিখেন।
উল্লেখ্য যে আগামী ২৫শে জুলাই প্রণব মুখার্জীর মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে।