যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক ও বিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠক শামসুল আলম লিটনের বড় ভাই নুর আলম চৌধুরী পারভেজ’কে গ্রেফতারের প্রতিবাদে, “ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল”-এর সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম সফর এর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং ভিন্নমতের ব্যক্তিদেরকে বেআইনীভাবে গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গত মঙ্গলবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ লন্ডনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানবাধিকার সংগঠন “ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল’ ও ‘ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল” এর যৌথ উদ্যোগে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ওলিউল্লাহ নোমান বলেন, বাংলাদেশে ভয়াবহ অবস্থা চলছে। মিডিয়াতে আসছে কম কিন্তু তার চেয়ে অনেক বেশি নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে মানুষ যা আমরা জানিনা। শামসুল আলম লিটনের ভাই নুর আলম চৌধুরীসহ অনেককে গুম ও গ্রেফতার করে সরকার বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে চায়। তারা আবার ক্ষমতায় থাকতে চায়। সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিদেশে সব মিশনগুলোতে বলে দিয়েছেন যে এসব উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে দেশে গুম, খুন, গ্রেফতার ও নির্যাতন বেশি হচ্ছে। ওলিউল্লাহ অবিলম্বে সবার মুক্তি দাবি করেন।
মানববন্ধনে প্রধান বক্তা ব্যারিষ্টার আমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর নেতাদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। মামলা ছাড়াই গুম করে রেখেছে তাদের সন্তানদের। সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকা সম্পাদকের বড় ভাইকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি সকলের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান।
“ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল”এর সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম সফর বলেন, খুন, গুম ও দুর্নীতি নিয়ে কথা বললেই আমাদেরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে হয়রানি করা হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই গুম খুনের রাজনীতি শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অলিউল্লাহ, আলমুকাদ্দাছ, ব্যারিষ্টার আরমান ও আব্দুল্লাহ আল আজমি সহ অনেকেই গুম হয়েছে। যাদের সন্ধ্যান এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আমরা যখন এদেশে কথা বলি তখন আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা করে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আমার বাড়িতেও হামলা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সভাপতির বক্তব্যে রায়হান উদ্দিন বলেন, সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক ও লন্ডন প্রবাসী শামছুল আলম লিটনের লেখালেখির কারণে তার বড়ভাই নুর আলম চৌধুরী পারভেজকে প্রথমে সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ১৫-১৬ জন নোয়াখালীর বাড়িতে এসে তুলে নিয়ে যান। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। সিলেট যুবদলের সেক্রেটারি মকসুদ আহমদকে রাতের আঁধারে গুম করার চেষ্টা করা হয়। এর প্রতিবাদে জনগণ রাস্তায় নামলে পরে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। “ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল”-এর সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম সফর এর বাড়িতেও হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা। এছাড়া সাংবাদিক আবদুর রব ভুট্টোর ভাই আবদুল মুক্তাদির মনুকেও গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত সকলের মুক্তির দাবী জানান তিনি।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনালের সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন চৌধুরী, সহসভাপতি মীরজা আবুল আহমেদ, মোঃ ইকবাল হোসেন ও মোঃ কামরুল হাসান রাকিব, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ ফান্টু, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পদক রায়হান চৌধুরী, সহকারি লিগ্যাল সেক্রেটারী রুহুল আমিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ বিন হোসাইন খান, মানবাধিকার কর্মী মোঃ মশিউর রহমান, মোঃ সালমান হোসেন মারজান, মোহাম্মদ আরাফাত হোসেন রনি, মোঃ তাজুল ইসলাম, ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল (ইআরআই) সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, সহ সভাপতি আল আমিন, ফিনান্স সেক্রেটারি মোহাম্মদ মাসউদুল হাছান, অফিস সেক্রেটারি আবু জাফর মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ,প্রচার সম্পাদক সায়েম আহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোঃ ওসমান গনি, মোঃ এমদাদুল হক, নির্বাহী সদস্য আব্দুল আলিম, সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান, রোকতা হাসান,হুমায়ুন আহমেদ, মোহাম্মদ মনসুর উদ্দীন, মো: খায়রুল আলম, মোহাম্মদ ফাহিদুল আলম, মো: শাহাদাত হোসাইন, রাজু আহমেদ, মো: জামিল আহমেদ, নিয়াজ মোর্শেদ ও মারুফ আহমদ লায়েক প্রমুখ।
“ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল” সভাপতি মোঃ রায়হান উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল সেক্রেটারি নৌশিন মোস্তারী মিয়ার পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমার দেশ ইউকের নির্বাহী সম্পাদক ওলিউল্লাহ নোমান। প্রধান বক্তা ছিলেন ব্যারিষ্টার আমিন চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন “ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল”-এর সহসভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম, অনলাইন কর্মী ফোরামের সভাপতি জয়নাল আবেদিন ও সেক্রটারী দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন “ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল”-এর সভাপতি মো: মাহবুব আলী খানসূর। সভায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্বুদ্ধ করতে জাগরণী সংগীত পরিবেশন করেন রায়হান চৌধুরী।