কমলগঞ্জ পৌরসভায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে গত মঙ্গলবার ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ছবি: মুক্তকথা
কমলগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও
এখনও ত্রাণ পাচ্ছে না নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষজন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি।। পাঁচ দিনের বন্যার পর মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের শমশেরনগর, পতনউষার ও মুন্সীবাজার এলাকায় বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে হতদরিদ্র পানিবন্দি শত শত পরিবারের মধ্যে গত ১৯শে জুলাই পর্যন্ত কোন ত্রাণ পৌঁছায়নি। ৫২ মে.টন চাল বরাদ্ধ হয়েছে বলে সে সময় জানা গিয়েছিল। শুকনো খাবার না থাকায় অনেক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। নদী ভাঙ্গন ও ঢলে গত শুক্রবার রাত থেকে পানিবন্দি হতে থাকে এসব পরিবার।
মঙ্গলবার পতনঊষার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নন্দ্রগ্রাম, কোনাগাঁও, নিজ বৃন্দাবনপুর, গোপীনগর, রাধাগোবিন্দপুর, মাজগাঁও, বাজারকোণা, কোনাগাঁও, পশ্চিম পতনঊষার, ফরিংগাকোণা প্রভৃতি গ্রামে এখনো মানুষের বসতবাড়িতে পানি রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন সরকারী ত্রাণ সহায়তা আসেনি।
কমলগঞ্জ পৌরসভায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০০ পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে চাউল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে কমলগঞ্জ পৌর মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) নাসরিন চৌধুরী।
কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মো. জুয়েল আহমদ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌর কাউন্সিলর মো. আনোয়ার হোসেন, রাসেল মতলিব তরফদার, রফিকুল ইসলাম রুহেল, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাহাত ইমতিয়াজ রিপুল প্রমুখ।
পশ্চিম রুপসপুর গ্রামে দাফনের জন্য মৃতদেহ নৌকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: মুক্তকথা
বন্যায় মৃতের দাফন নিয়ে দুর্ভোগ! উঠোনে জানাজা
পাঁচ দিন ধরে বন্যার পানি থাকায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মৃতের জানাজা ও দাফন নিয়ে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের পশ্চিম রূপসপুর গ্রামে জুনেদ আহমদ এর মাতা হনুফা চৌধুরী (৬০) বার্ধক্যজনিত কারনে মৃত্যুবরন করলে মঙ্গলবার নিজ বাড়ির উঠানে জানাজা শেষে নৌকাযোগে লাশ নিয়ে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
রুপসপুর গ্রামের সমাজসেবক জাহিদুল হক, জুনেদ আহমদ এর আম্মা মারা যাওয়ার পর বন্যার কারনে জানাজা ও দাফন করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নিজ উঠানে জানাজা আদায় করা হয়। তবে কবরস্থান বন্যামুক্ত থাকলেও লাশ নিয়ে যেতে হয়েছে নৌকায়। পরে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
উল্লেখ্য, টানা বর্ষন, পাহাড়ি ঢল ও ধলাই নদীর ভাঙ্গনে গত শুক্রবার থেকে নি¤œা ল এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যার পানি নিস্কাশনের লাঘাটা নদী ভরাট ও ঝোপজঙ্গলে ভরপুর থাকায় বন্যা দীর্ঘয়িত হচ্ছে। ফলে পানিবন্দি মানুষেরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
কমলগঞ্জে অনলাইনে জমির নামজারি খতিয়ান প্রাপ্তি শুরু ॥ ভোগান্তি কমবে গ্রাহকদের
উপজেলা ভূমি অফিসে আবেদন করে নামজারি খতিয়ান পাওয়ার বিষয়টি ছিল ভোগান্তির এক বড় অধ্যায়। টাকা ব্যয়ের সাথে সময়ের দীর্ঘ সূত্রতায় ভোগান্তি ছিল বেশী। সারাদেশে গত ১ জুলাই থেকে অনলাইনে আবেদন করে নামজারি খতিয়ান পাওয়ার কার্যক্রম শুরু হলেও মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) থেকে কমলগঞ্জ উপজেলায় অনলাইনে নামজারি খতিযান গ্রহন করছেন আবেদনকারীরা। মঙ্গলবার দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিস থেকে সরাসরি সহকারি কমিশনার (ভূমি)-এর কাছ থেকে আবেদনকারীরা অনলাইনের নামজারি খতিয়ান গ্রহন করে আননন্দিত।
কমলগঞ্জের শমশেরনগর বাজারের ফারুক মিয়া ও মুন্সীবাজার ইউনিয়নের পরানধর গ্রামের সুবাস চন্দ্র দাস প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আগে এ নামজারি খতিয়ানের জন্য নানা সমস্যায় পড়তে হত। আর নির্দিষ্ট কোন সময়ও ছিল না কখন সেটি পাওয়া যাবে। এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে আবেদন করে খুব সহজেই নামজারি খারিজ পেয়ে তারা আনন্দ প্রকাশ করেন। তারা আরও বলেন, এখন থেকে নামজারি খতিয়ানের জন্য আবেদনকারীদের আর কোন কষ্ট হবে না।
কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) নাসরিন চৌধুরী বলেন, ১ জুলাই থেকে অনলাইনে নামজারি খতিয়ান পাওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। এ পদ্ধতিতে আবদেন করে মঙ্গলবার দুইজন আবেদনকারী অনলাইনের নামজারির খতিয়ান গ্রহন করেছেন। এ জন্য তাদের ব্যয় হয়েছে মাত্র ১ হাজার ১৭০ টাকা। এখানো কোন প্রকার ভোগান্তি পাননি আবেদনকারীরা। তিনি আরও বলেন, এখন থেকে উপজেলা ভূমি অফিসে সেবার মান বেড়ে যাবে এবং কাজে কোন প্রকার জটিলতাও থাকবে না।
|