জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন জরুরি তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা |
বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। এ ব্যাপক মৃত্যুর দায়ভার তামাক কোম্পানি কখনই স্বীকার করেনা। তামাকজনিত মৃত্যু আড়াল করতে এবং ব্যবসা বাড়াতে নানাধরনের কূট-কৌশল অবলম্বন করে তারা। তামাক কোম্পানির প্রকৃত উদ্দেশ্য উন্মোচন করতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
রাজধানীর বিএমএ ভবনে গত ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি, অনুষ্ঠিত “তামাক কোম্পানির কূট-কৌশল: গণমাধ্যমের করণীয়” শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় উপরোক্ত বিষয়গুলো তুলে ধরেন আলোচকবৃন্দ। গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা(প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ‘তামাক বিরোধী সংবাদমাধ্যম জোট'[(অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স)(আত্মা)] আয়োজিত ২টি কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত মোট ৫১জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। কোম্পানির ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরা দেশে খুচরা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৫ লক্ষ ৩৯ হাজার। কর্মশালা থেকে জানা যায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তামাক নিয়ন্ত্রণের মূল কাঠামোগত রীতিনীতি[(ডব্লিওএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল(এফসিটিসি)]-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য ২০২১ সালে আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এমন মতামত গ্রহন ছিল এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ এর সুস্পষ্ট লংঘন। বাংলাদেশ ২০০৩ সালে এফসিটিসি-তে স্বাক্ষর করা দেশ। কর্মশালা থেকে আরো জানা যায়, প্রতিবছর ব্যবসায়িক সংগঠনকে ব্যবহার করে জাতীয় বাজেটকে প্রভাবিত করে সিগারেট কোম্পানিগুলো। বিড়ির মূল্য না বাড়ানোর শ্রমিক আন্দোলনে মালিকরা অর্থের যোগান দেয়। এছাড়া সুবিধাভোগীদের দিয়ে কলাম ও নিবন্ধ প্রকাশ, ডিও লেটার প্রদান ইত্যাদি কূট-কৌশল অবলম্বন করে কোম্পানিগুলো। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ১৫ বছর তদূর্দ্ধ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩৫.৩ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের(২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি। কর্মশালাগুলোতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিআইসি-এর সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা ট্রিবিউন এর নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি দৌলত আকতার মালা, আত্মা’র কনভেনর লিটন হায়দার, কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ ও মিজান চৌধুরী এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের, মো. হাসান শাহরিয়ার প্রমুখ। |