মুক্তকথা: বৃহস্পতিবার, ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০১৬।। খবরটি বেশ পুরনো। এ বছরেরই মার্চ মাস নাগাদ বিভিন্ন পত্র পত্রিকা আর ইলেক্ট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে আসে। পুরনো হলেও সংবাদটি খুবই প্রেরণাদায়ক আর সকলের জন্য শেখার অফুরান খোরাক রয়েছে। আমার মত অনেকেই ভাবতেই পারি না। একই সাথে, আমার ধারণা খবরটি এ বিশ্ব চরাচরে খুব সম্ভবতঃ এই একটিই। অনুরূপ দ্বিতীয় কোন একটি আছে বলে আমার জানা নেই। আর আমার অনুমান নেই। মরণের পাড়ে দাঁড়িয়ে কেউ কি নিজের দিকে নজর না দিয়ে পারে? তাও আবার অন্যের জন্য কাজ করা! আমার কাছে এখনও অবিশ্বাস্য! এ কারণেই আবারও পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দিতে মনযোগী হলাম। আমার মতে, এসব জীবন্ত সত্য কাহিনী যত বেশী আমরা মানুষকে শুনাতে পারবো ততই বিশ্ব মানব সমাজ তথা মানবের কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসবে।
বলতে চাচ্ছি অমিত তেজা এক সেবাব্রতী নারীর কাহিনী। পেশার প্রতি তার নিষ্ঠা আর সেবাব্রতের নমুনা তুলে ধরার জন্য। এতে অন্ততঃ এই উপমহাদেশের একজনেরও কসাই চেহারায় একটু হলেও পরিবর্তন আনতে পারে তবেই আমার লেখা স্বার্থক ধরে নেবো।
তিনি আমার কাছে নাইটেঙ্গুলেরও উপরে “ভক্তি যাদব” নামের এক নব্য “নাইটেঙ্গুল”, এক নব্য “মাদারতেরেসা”! ভক্তি যাদব। তিনি ভক্তিরও উর্ধ্বে এক অনন্য সাধারণ দূর্লভ ব্যক্তিত্ব! ৯১ বছর বয়সের ভক্তি যাদব পেশায় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। তার ডাক্তারীর বয়স ৬৮ বছর। শুনতেই অবাক হতে হয়। ভারতের ইন্দোরের তিনিই সর্বপ্রথম মহিলা এমবিবিএস ডাক্তার।
তিনি ১৯৪৮ সাল থেকে রোগী দেখছেন নিখরচায়। রোগীদের কাছে থেকে কোন তথা কথিত ‘ফিস’ নেন না। নমস্যঃ ভক্তি যাদব তার রোগীদের অগনিত শিশু সন্তানের প্রসবে সহায়তা করেছেন, কোন ‘ফিস’ বা টাকা গ্রহন করেননি। ভাবতেও অবাক লাগে যে এমন মানুষও আমাদের মাঝে এখনও আছে! এখনও বয়সের কারণে অনেক রোগীকেই সময় দিতে পারেন না ঠিকই কিন্তু তার পরামর্শের জন্য ভারতের উত্তর প্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের বহু দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা আসে।
বলতেই হয়, এই বয়সে তার, কর্মের প্রতি এই আসক্তি, রোগীর প্রতি প্রচন্ড এই আবেগ, ভালবাসাকে আমরা নতজানু হয়ে নমঃস্কার জানাই। তার এ মহতি কর্ম আমাদের জন্য শুধুই উদাহরণ নয় বিশাল বিস্তৃত উদার আকাশের মত প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে অনাদি অনন্তকাল।