প্যাগোডায় ভরা বাগান শহরের জন্য ইউনেস্কো’র ঐতিহ্যস্বীকৃতি আদায় করতে গত পাঁচ বছর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে মায়ানমার সরকার। আজ বিকেলে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প ধাক্কা দিয়ে গেল সেই ‘প্যাগোডা-শহর’কেই। একাধিক শতাব্দীপ্রাচীন প্যাগোডা ধূলিসাৎ। অন্তত চারজন মারা গিয়েছেন। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। গত চার বছরে এই মাত্রার ভূমিকম্প দেখেনি মায়ানমার।
আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভের তরফে জানানো হয়েছে, স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে চার মিনিট নাগাদ ভূমিকম্প হয়। মধ্য মায়ানমারের চাউকের ২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে ছিল ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮৪ কিলোমিটার নীচে। কম্পনের তীব্রতা এতটাই যে, তাইল্যান্ড, বাংলাদেশ এবং পূর্ব ভারতের বিভিন্ন এলাকায় তা অনুভূত হয়। বাংলাদেশের সাভারে এক কারখানা থেকে হুড়োহুড়ি করে বার হওয়ার সময় আহত হয়েছেন ২০ জন।
মায়ানমারে সরকারিভাবে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়নি। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে, পাকোক্কু শহরে এক মহিলা এবং ২২ বছরের এক তরুণ বাড়ি চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন আরও দু’জন।
পুলিশ জানিয়েছে, বাগান শহরে একটি প্যাগোডা থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন স্পেনের এক পর্যটক। সূর্যাস্ত দেখার জন্য তিনি প্যাগোডায় উঠেছিলেন। দশম এবং চতুর্দশ শতকে তৈরি অন্তত আড়াই হাজার প্যাগোডা রয়েছে পর্যটকপ্রিয় বাগান শহরে। ভূমিকম্পে অন্তত ৭০টি প্যাগোডা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে। ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে অনেক প্যাগোডাই। কারণ, বাগান শহরের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যেই ছিল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল।
প্রসঙ্গত, গত বছর ভয়াবহ ভূমিকম্পে নেপালেও ভেঙে পড়েছিল একাধিক শতাব্দীপ্রাচীন মন্দির। ধূলিসাৎ হয়েছিল ‘ইউনেস্কো’র ঘোষিত বেশ কয়েকটি ঐতিহ্যস্থলও। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আপলোড করা একটি ভিডিও রেকর্ডে দেখা গিয়েছে, ইয়াঙ্গনের একটি অফিসে কাজ করছেন কর্মীরা। হঠাৎই গোটা বাড়িটি অস্বাভাবিকভাবে দুলতে শুরু করে। প্যাগোডা ভেঙে পড়ার ছবি এবং ভিডিও রেকর্ডও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। নেপালের ক্ষেত্রেও যেমন দেখা গিয়েছিল, এক্ষেত্রেও ভিডিও ফুটেজ দেখাচ্ছে, কীভাবে মুহূর্তের কম্পনে ভেঙে যাচ্ছে শতাব্দীর ঐতিহ্য। (আনন্দবাজার থেকে)