1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
মা-বাবাকে আমি কি বলেছিলাম আমার জন্ম দাও? - মুক্তকথা
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২১ পূর্বাহ্ন

মা-বাবাকে আমি কি বলেছিলাম আমার জন্ম দাও?

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শুক্রবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
  • ১৭৭৭ পড়া হয়েছে

মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। ২৭ বছর বয়সের রাফায়েল স্যামুয়েল তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা করছেন। তার হাস্যকর অভিযোগ – তার অনুমতি না নিয়ে বাবা-মা তার জন্ম দিলেন কেন?
এই স্যামুয়েল মুম্বাইয়ের বাসিন্দা এবং একজন ব্যবসায়ী। রাফায়েল স্যামুয়েল মনে করেন, এভাবে পৃথিবীতে সন্তান নিয়ে আসা অন্যায়, কারণ তাদেরকে সারা জীবন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এমন চমকপ্রদ পাগলেমি চিন্তার খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি।
রাফায়েল স্যামুয়েলের চিন্তা-ভাবনার জগতে গভীরভাবে বিচরণ না করলে তার চিন্তা-চেতনাকে পাগলামো মনে হবে। কিন্তু একটু গভীরে গিয়ে ভাবলে যে কেউকে কিছুটা হতচকিত হতেই হবে। স্যামুয়েল বিবিসিকে বলেছেন, তিনি বোঝেন যে সন্তানের জন্ম হবার আগে তাদের সম্মতি নেয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তার পরও তিনি জোর দিয়ে বলেন – “আমার জন্মগ্রহণের সিদ্ধান্ত তো আমি নেই নি।” “যেহেতু আমি কাউকে বলি নি যে আমার জন্ম দাও – তাই আমাদের জীবনযাপন করার জন্য সারা জীবন ধরে খরচ যুগিয়ে যাওয়া উচিত”।
বিবিসি অবশ্য রাফায়েল স্যামুয়েলের এই বয়ানের পেছনে দার্শনিক তত্ত্বেরও আবিষ্কার করেছে। বিবিসি লিখেছে, “মি. স্যামুয়েল যা বলছেন, তার মূল নিহিত রয়েছে এক দার্শনিক তত্ত্বে – যাকে বলে এ্যান্টি-ন্যাটালিজম। এর মূল কথা হলো, মানুষের জীবন যেহেতু দু:খ-দুর্দশায় ভরা, তাই মানবজাতির উচিত সন্তান জন্মদান বা বংশবৃদ্ধি একেবারেই বন্ধ করে দেয়া।” চিন্তার বেশ কাছাকাছি থেকে রাফায়েল স্যামুয়েলও বলছেন- “এর ফলে পৃথিবী থেকে পর্যায়ক্রমে মানুষ বিলুপ্ত হয়ে যাবে, এবং তা এই গ্রহের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটা ব্যাপার হবে।” আরো একটু এগিয়ে গিয়ে রাফায়েল বলছেন-
“মানবজাতির কোন দরকারই নেই। কারণ এত মানুষ দু:খকষ্টের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছে। মানুষ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেই বরং এই পৃথিবী এবং অন্যান্য প্রাণীরা সুখে জীবন কাটাতে পারবে। মানুষের দুর্ভোগেরও এতে অবসান হবে।”

রাফায়েল স্যামুয়েল অবশেষে ঠিক করেছেন তার মা-বাবার বিরুদ্ধে তিনি আদালতে মামলা নিয়ে হাজির হবেন। তার এই মামলা কাহিনী নিয়ে বিবিসি খুব মজা করে আদিঅন্ত বিস্তারিত লিখেছে। খুবই মনোযোগ আকর্ষণ করার মতো গল্পের অবতারনা করেছে তারা। বিবিসি’র সেই কাহিনী হুবহু নিচে দেয়া গেল।
গত বছর এই রাফায়েল স্যামুয়েল একটি ফেসবুক পাতা শুরু করেন। পাতাটির নাম দেন ‘নিহিলানন্দ’ (Nihilanand)। ওই পাতায় স্যামুয়েলের একটি ছবি আছে – যাতে তার মুখে নকল দাড়ি লাগানো, চোখও ঢেকে রাখা আছে একটা ঢাকনা দিয়ে।
সাথে আছে ‘এ্যান্টি-ন্যাটালিস্ট’ বার্তা: “জোর করে একটি শিশুকে এই পৃথিবীতে নিয়ে আসার অর্থ কি এই নয় যে তাকে অপহরণ, দাসবৃত্তি এবং একটা কেরিয়ারের আবর্তের মধ্যে ফেলে দেয়া হলো?”
“আপনার পিতামাতা আপনাকে এনেছেন একটি খেলনা বা কুকুরের পরিবর্তে। তাদের কাছে আপনি কোনভাবেই ঋণী নন। আপনি বরং তাদের বিনোদন।”
মি. স্যামুয়েল বলছেন, তার মনে পড়ে যে মাত্র পাঁচ বছর বয়েস থেকেই তার মনে এসব ভাবনা আসতে শুরু করেছিল।
“আমি একটি স্বাভাবিক শিশুই ছিলাম। একদিন আমার মন ভালো ছিল না, আমি স্কুলে যেতে চাইনি। কিন্তু আমার বাবা-মা আমাকে স্কুলে যাবার জন্য জোর করতে লাগলেন। তখন আমি তাদেরকে বললাম, তোমরা আমাকে জন্ম দিলে কেন? আমার বাবা কোন জবাব দিতে পারলেন না।” “আমার মনে হয় তিনি যদি উত্তর দিতে পারতেন – তাহলে আমি এভাবে ভাবতে শুরু করতাম না।”
সেই থেকে মি. স্যামুয়েলের মাথায় এই চিন্তা ঘুরপাক খেতে লাগলো, এবং তা একটা দর্শনের রূপ নিল। তখন তিনি তার বাবা-মাকে এটা বলার সিদ্ধান্ত নিলেন।
মি. স্যামুয়েলের বাবা-মা দু’জনেই আইনজীবী। তিনি বলছেন, তার বাবা-মায়ের সাথে সম্পর্ক তার খুবই ভালো। তার কথায়, তার মা ছেলের এই ভাবনার প্রতি ‘খুব ভালোভাবেই সাড়া দিয়েছেন’ এবং বাবা-ও এখন এটা নিয়ে ‘আগ্রহ দেখাতে’ শুরু করেছেন।
“মা বলেছেন, যদি কোনভাবে জন্মের আগে তার ছেলের সাথে তার দেখা হতো – তাহলে তিনি নিশ্চয়ই তাকে পৃথিবীতে নিয়ে আসতেন না।”

মি. স্যামুয়েল বলছেন, তার মা এখন ছেলের ভাবনার যুক্তিটা উপলব্ধি করতে পারছেন।


“মা আমাকে বলেছেন, তিনি যখন আমার মা হন তখন তার বয়েস ছিল কম, এবং এর যে কোন বিকল্প থাকতে পারে – তাও তার জানা ছিল না। কিন্তু আমার যুক্তিটা ঠিক সেখানেই। আমি বলতে চাই, প্রত্যেকেরই সে বিকল্প আছে।”
মি. স্যামুয়েলের মা এ ব্যাপারে একটি বিবৃতিও দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেন, তার ছেলে যে স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে সক্ষম একজন যুবক হয়ে উঠেছে – তাতে তিনি গর্বিত।
মি. স্যামুয়েল বলেন, তিনি যে তার বাবা-মাকে আদালতে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন – তার কারণ হলো তার এই বিশ্বাস, যে মানুষ না থাকলে এই পৃথিবী অনেক সুন্দর একটি জায়গা হতো।
ছ’মাস আগে এই মামলা করার সিদ্ধান্তের কথা মি. স্যামুয়েল তার মা-কে জানান, ব্রেকফাস্টের টেবিলে বসে।
তার মা তখন বলেছিলেন, ঠিক আছে, মামলা করো, কিন্তু এটা সহজ হবে বলে মনে করো না। আদালতে তোমাকে আমি ধসিয়ে দেবো।
মি. স্যামুয়েল এখন একজন আইনজীবী খুঁজছেন – তবে এখনো পান নি।
“আমি জানি, বিচারক এ মামলা খারিজ করে দেবেন কারণ এরকম মামলা কেউই শুনতে চাইবেন না। কিন্তু আমি আমার পয়েন্ট তুলে ধরার জন্যই মামলাটি করতে চাই।”
ফেসবুকে তার নানা পোস্টও বেশ সাড়া ফেলেছে। এর মধ্যে ইতিবাচক-নেতিবাচক দুরকমই আছে। তবে বেশির ভাগই নেতিবাচক, অনেকে ক্ষিপ্ত হন, গালাগালি করেন।
তিনি বলেন, অনেকে পরামর্শ দিয়েছেন যে আপনি আত্মহত্যা করুন। অনেক মা এতে উদ্বিগ্ন হয়েছেন যে তাদের ছেলেমেয়েরা এসব পোস্ট দেখলে কি ঘটতে পারে।
“অবশ্য অনেকেই আমাকে সমর্থন জানিয়েছেন তবে তাদের কথা আমি প্রকাশ্যে বলতে চাই না।”
মি. স্যামুয়েল বলেন, তিনি প্রচার পাবার জন্য এটা করছেন না। “আমি শুধু মানুষকে আমার ভাবনার কথাটা জানাতে চাই। এটা খুবই সহজ বার্তা তা হলো : সন্তান জন্ম দিতে না চাওয়াটায় কোন অন্যায় নেই।”
তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে তিনি জন্ম নেয়ার জন্য দু:খিত কিনা।
“আমি ভাবি আমার জন্ম না হলেই ভালো হতো। এর অর্থ এই নয় যে আমি জীবনে অসুখী। আমার জীবন সুন্দর, কিন্তু এ জীবন না থাকলেই বরং ভালো হতো।”
“ব্যাপারটা এরকম যে এখানে একটা সুন্দর ঘর আছে, কিন্তু আমি সেই ঘরে থাকতে চাই না।”

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT