আব্দুল ওয়াদুদ।। সরকারি তরফ থেকে ২শ ৩৬ মেঃ টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট খাবার ও নগদ আড়াই লাখ টাকা সাহায্য দেয়া হয়েছে। মনু ও ধলাই নদীতে পানি আরো কমেছে। কিন্তু এর আগেই মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৪৩টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছিলেন। এখন ধীরে ধীরে সে পানি নামতে শুরু করেছে। প্রথমদিকে নদীর পানি শহরের পশ্চিমবাজারে নদীতীর দিয়ে ছুঁয়ে -ছু্ঁয়ে ঢুকে পড়েছিল শহরে। ফলে অনেকেই দূর্ভাবনায় পড়েছিলেন। এখন সে আশংকা কেটে গেছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্ত্তী মঙ্গলবার দুপুরে জানান, রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের কোনাগাঁও এলাকায় মনু নদীর বাঁধ ভাঙ্গার উপক্রম ছিল।
তবে তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নেয়ায় বাঁধ আর ভাঙ্গেনি।
এদিকে কুশিয়ারা নদী মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনূমূখ ইউনিয়ন, রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেপুর ইউনিয়নে নদী পাড়ের প্রায় ৪৩টি গ্রামে পানি ঢুকেছে। এতে ওই ভাটি এলাকার সিংহভাগ যাতায়াতের রাস্থা-ঘাট, ঘর-বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার, ১৬ই জুলাই মৌলভীবাজারে বৃষ্টি না হলেও এসব এলাকায় পানি কিছুটা বেড়েছে। রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউপির ছিক্কাগাঁও, কামালপুর, আমনপুর, সুরিখাল, যোগীকোনা, কেশরপাড়া, সুনামপুর, উমরপুর, কান্দিগাঁও, জোড়াপুর ও ফতেপুর ইউনিয়েনের সাদাপুর, হামিদপুর, বেড়কুড়ি, শাহাপুর, জাহিদপুরসহ প্রায় ২০-২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যাভয় কেটে গেলেও বৈরী আবহাওয়া ও বন্যাক্রান্ত খেটে খাওয়া মানুষেরা বিভিন্ন রোগের আশঙ্কা করছেন।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৩ ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম, রাজনগরে দুই ইউনিয়নের ২৩টি গ্রাম, কমলগঞ্জে ৩ ইউনিযেনর ২২টি গ্রাম ও কুলাউড়ায় ২ ইউনিয়নের আরো ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ৪ হাজার ৭০টি পরিবার প্লাবিত হয়েছে। এসব বন্যাক্রান্তদের মাঝে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে মোট ২৩৬ মেঃ টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও নগদ আড়াই লক্ষ টাকা বন্টন করা হয়েছে। এসব বন্যাক্রান্ত এলাকায় ৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌসী আক্তার জানান, জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে পাওয়া এসব ত্রান সামগ্রী স্থানীয় চেয়ারম্যানগণের কাছে পাঠিয়েছেন। রাজনগর উপজেলায় কুশিয়ারা নদী পাড়ের কামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুরিখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুনামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাওর করাইয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সুরিখাল ৩৫টি, সুনামপুর ৩৮টি ও কামালপুরে ১৭টি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে এসে ঠাই নিয়েছেন।
উত্তরভাগ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য হুমায়ুন কবীর জানান, গত সোমবার সুনামপুর আশ্রয় কেন্দ্রে ২৮ পরিবার উঠে। ওই দিন সংসদ সদস্য নেছার আহমদ এসব পরিবার এর হাতে ত্রান সামগ্রী তুলে দেন। তিনি আরো জানান, মঙ্গলবার ওই কেন্দ্রে আরো ১০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ওই ৩৮ পরিবারের মাঝে কোন ত্রান সামগ্রী দেয়া হয়নি।
এ দিকে বিগত দু’দিনের প্রচণ্ড খড়তাপে শহর জীবন অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে।