মৌলভীবাজার জেলার সদর সরকারি হাসপাতালকে ৫০০ শয্যাতে রুপান্তরিত এবং সেখানে সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্টার দাবীটি বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে বিগত এক যুগেরও অধিক সময় থেকে উচ্চারিত হয়ে আসছে।
যেহেতু বিষয়টি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল তাই বিভিন্ন সরকারের আমলে সেটি আলোর মুখ দেখার সুযোগ থাকলেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা এবং এমনকি দলীয় অনৈক্যের কারনে আলোর মুখ দেখেনি।
বিগত ৪/৫ বছর থেকে বিষয়টি নিয়ে জেলার বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সুশীল সমাজ সোচ্চার হয়েছেন। হয়তো এর একটি অন্যতম কারণ হতে পারে বৃহত্তর সিলেট জেলার অন্য ২/১ জেলায় সরকার যখন মেডিকেল কলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিলেন মনেহলো জেলাবাসী(বিভিন্ন সংগঠন) তখন নড়চড়ে বসলেন!!! আমরা কেন এখনো মেডিকেল কলেজ পাইনি এর জবাব স্থানীয় দায়িত্বশীলরা দিতে বাধ্য থাকিলেও হয়তো এজগতে উনারা দেবেন না। কিন্তু জনতার অন্তরে যে আদালত বিদ্যমান সেই আদালতে উনাদের বিষয়ে মৌলভীবাজারের প্রতিটি জনতা সিদ্ধান্ত নেবে বা নিচ্ছেন সেটি নিশ্চিত। লক্ষ্য করলে দেখবেন আমাদের পার্শবর্তী জেলা গুলোকে কিন্ত এই দাবী আদায়ে দেশে-বিদেশে মানব বন্ধন, মিছিল, সভা, সোশিয়াল মিডিয়াতে জনতম গঠন করতে তেমন চোখে পড়েনি। তা হলে আমাদেরকে আজ কেন এসব করতে হচ্ছে? এর একটি মাত্র কারন হতে পারে আমরা হয়তো সময় মতো ট্রেন ধরতে পারিনি। তাই যদি হয় তবে এই ব্যর্থতার দায় থেকে আমরা দু’জন ব্যক্তিকে সাদরে মুক্তি দিতে পারি এবং উনারা হলেন প্রয়াত অর্থ মন্ত্রী জনাব সাইফুর রহমান সাহেব ও প্রয়াত সমাজ কল্যান মন্ত্রী জনাব সৈয়দ মহসিন আলী সাহেব। উনারা দু’জনই তাঁদের চেষ্টার কোন ত্রুটি করেন নাই সে কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। বাকী যাঁরা বেঁচে আছেন তাঁদের সামনে আজ বড় চ্যালেঞ্জ হলো ২৫ লক্ষ জনতার দাবী বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিজ নিজ যোগ্যতার প্রমান দেওয়া।
এক্ষেত্রে আশার কথা হলো যে বর্তমান সংসদে মৌলভীবাজার জেলার সাংসদরা সংসদের ভিতরে দাবীটির বিষয়ে সুযোগ মতো সোচ্চার হচ্ছেন।
যে কোন সরকারই “মেডিকেল কলেজ” স্থাপনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে সংসদ সহ সরকারি বিভিন্ন ফোরামে এ নিয়ে ব্যাপক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির যথার্থতা নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে থাকেন। সেখানে বিশেষ ভূমিকা রাখেন পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, একনেকের সদস্যবৃন্দ সহ পারস্পরিক বিভিন্ন সংস্থা। এবং এঁরাই হলেন মূল কেন্দ্র যাঁরা বিষয়টির ক্ষেত্রে সরকারকে সিদ্ধান্ত গ্রহনে সবুজ সংকেত দিয়ে থাকেন। আমরা এঁদেরকে সাধারণত “উপরের লেভেল ” অথবা মামা, এমনি কি খুটির জোর বলেও অভিহিত করি। চিরাচরিত ভাবে দেশের যে অবস্থা তাতে উপরের লেভেলে যাদের অবস্থান যতো মজবুত তাঁরাই সরকার থেকে ততো বেশি ফায়দা আদায় করে নিতে সক্ষম হন।
সংসদে দাবী উত্থাপন এবং বাস্তবে এর প্রতিফলের মধ্যে অসংখ্য ধাপের ফারাক বিদ্যমান। তবে এখানে একটি সহজ উপায় হলো যদি সরকার প্রধান ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টির প্রতি দয়াশীল হন তখন কিন্তু বাকী সবগুলো ধাপ অধিকাংশ ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। এখানেই লবিং বিষয়টি নিয়ামকের ভুমিকা পালন করে থাকেন।
এই দাবি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা যাহাই থাকুক না কেন এর সমাধান আমাদের জন প্রতিনিধিদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে এবং লবিং জোরদারের মাধ্যমে ২৫ লক্ষ জেলাবাসীর ন্যায্য দাবীটিকে বাস্তবে রুপ দেবেন সেটাই জেলাবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন।
কার্ডিফ
১৪/০৯/১৯