তাজমহলসৃষ্টি জগতের সবচেয়ে বিস্ময়ের দেশ ভারত। সে আজ থেকে নয়, সেই প্রাচীণ কাল থেকেই দেশী-বিদেশী সকল গবেষকদের কাছেই ভারত এক বিস্ময়কর রহস্যেঘেরা দেশ। ভারতের সেসব রহস্যময়তার মাঝে কোনটি মানবসৃষ্টি আবার দু’একটি প্রাকৃতিক! যে রহস্যের আজো কোন উন্মোচন হয়নি। হতেই পারে, বিজ্ঞজন বা বিজ্ঞানী গবেষকেরা এসব রহস্যের ঢাকনা আম-মানুষের সামনে খুলতে চান না। রহস্যময়তার পেছনের কারণ তাদের হয়তো জানাই আছে কিন্তু তারা মনে করেন এসব প্রকৃতির দান, খোলামেলা করে দিলে এই রহস্যময়তাকে মানুষ নষ্ট করে দিবে। বিশ্বময় সুপরিচিত তাজমহলের কথাই বলি না কেনো! এটির নির্মাণকৌশল কিন্তু খুবই সহজ-সরল রেখায় বিন্যস্ত নয়। খুবই জঠিল গাণিতিক সূত্রে নির্মিত এই বিস্ময়কর সৌধটি। প্রথমতঃ এর নির্মাণশৈলী এমনই যে সৌধদালানটি কোন কালের কোন ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হবে না এমনকি কোন সময়েই ক্ষয়প্রাপ্ত হবে না। কতশতযুগ যে এ সৌধদালানটি টিকে থাকবে তা যেমন কেউ বলতে পারেননা, তেমনি কখন ধ্বংস হবে এমন তত্ত্ব বা তথ্যও কেউ আজ অবদি দিতে পারেননি। তাজমহল বিষয়ে এমনতরো বহু তথ্যই আমাদের অজানা রয়ে আছে। ১৫ বছর বয়সেই খুররমের বাকদান হয়েছিল সম্রাট দরবারের উচ্চতম পদের অধিকারী ওমরাহ ইতিমদ্দৌলার পৌত্রী আর্জুমান্দ বানু বেগমের সাথে। কিন্তু বিয়ে হয়েছিল পাঁচ বছর পর। জ্যোতিষীদের গণনায় শুভদিন না পাওয়ায় এমন বিভ্রাট ঘটেছিল। বিয়ের জন্য খুররমকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল পাঁচ বছর। বিয়ের পর আর্জুমান্দ বেগমের নাম হয়েছিল মমতাজ মহল। বাল্যের বিয়ের বন্ধন হয় গভীর। তাদের দু’জনেরই বন্ধন ছিল সুগভীর। শাহজাহান যেখানে যেতেন মমতাজ তার সাথে থাকতেন। এমনকি যুদ্ধের সময়ও মমতাজ স্বামীর সঙ্গে থাকা ত্যাগ করেননি। মেবারের যুদ্ধের সময়ও মমতাজ তার সঙ্গে ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন গুজরাট বা বুরহান পুরে থাকার সময়ও। আর ওই বুরহান পুরে থাকাকালীন ১৬৩১ সালে চতুর্দশ সন্তান প্রসবের সময় সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের মৃত্যু হয়েছিল। এমন অঘটনের তিনটি বছর আগে ১৬২৮সালে শাহজাহান সম্রাট পদে আসীন হয়েছিলেন। বুরহান পুরের শাহী দূর্গবাড়ী থেকে অল্পদূরে জায়নাবাদের আহুখানার বরাদরিতে সম্রাজ্ঞী মমতাজকে অস্থায়ীভাবে সমাহিত করা হয়। আগ্রায় ফিরে সম্রাট তার বেগমের জন্য একটি মনোরম সমাধিসৌধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। সমসাময়িক বিবরণ থেকে জানা যায় সৌধের পরিকল্পনা, স্থান নির্বাচন, স্থপতি ও বাস্তুকার নিয়োগ, অলংকরণ এ সমূহ বিষয়ে কাজ হয় সম্রাটের সরাসরি নির্দেশে। |