সত্তুর-আশি দশকের সফল ট্রাভেলস ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী প্রবাসী ইউসুফ মিয়া গত শনিবার ৩ জুলাই দিনগত রাত ১০-৪৫মি: লণ্ডনের ‘সেন্টমেরিজ’ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। প্রয়াত ইউসুফ মিয়ার দেশের বাড়ী মৌলভীবাজার জেলার বিরইমাবাদ গ্রামে। লণ্ডনের নটিংহিলে তিনি স্বপরিবারে বসবাস করতেন। মৃত্যুকালে তিনি ভাই-বোনসহ স্ত্রী ও ৩মেয়ে এক ছেলে রেখে গেছেন। তারা সকলেই লণ্ডনে সুপ্রতিষ্ঠিত। তার ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে করোণা জনিত কারণে কোন ব্যত্যয় না ঘটলে আগামী বুধবার জোহরের নামাজের পর ব্রিকলেন মসজিদে তার জানাজার নামাজ সম্পন্ন হবে। পরে তাকে লণ্ডনের ‘গার্ডেন অব পিস’ কবরস্থানে দাফন করা হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে প্রয়াত ইউসুফ মিয়া লণ্ডন থেকে মৌলভীবাজারে গিয়ে ট্রেভেলস ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। খুবই অল্পসময়ে সুমধুর ব্যবহারে তিনি তার ব্যবসায় সফলতা আনতে সক্ষম হন। তিনি খুব মিষ্টভাষী ছিলেন এবং সহজেই মানুষকে আপন করে নিতে পারতেন। এক পর্যায়ে তিনি রাজধানী ঢাকার দিলখুশায় তার ট্রেভেলস স্থানান্তরীত করেন এবং ব্যবসায় আকাশচুম্বী সফলতা আনতে সক্ষম হন। স্বল্পভাষি সদাহাসির ইউসুফ মিয়া তার অসাধারণ আচার-আচরণের মাধ্যমে অতি অল্প সময়ের মধ্যে দেশের উচ্চ পদস্ত মানুষজনের সাথে গভীর সখ্যতা গড়ে তুলেছিলেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ‘চীপ অব এয়ার ষ্টাফ’ মোহাম্মদ খাদেমুল বাসার বীর উত্তম প্রয়াত ইউসুফ মিয়ার ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। এ ছাড়াও সে সময়ে ঢাকার উচ্চ মহলে তার অনেক জ্ঞানী-গুণী বন্ধু-বান্ধব ছিলেন। ১৯৭৬ সালের সেপ্টেম্বর/অক্টোবর মাসে খাদেমুল বাসারের সাথে একই হেলিকপ্টারে তিনি মৌলভীবাজার সফর করে বন্ধু-বান্ধব অনেককে ভরকে দিয়েছিলেন। প্রায় ৬ফুট উচ্চতার জনাব ইউসুফ সবসময়ই কেতা দুরস্ত পোষাকে চলাফেরা করতেন। সত্তুরের দশকে ছোট্ট শহর মৌলভীবাজারে তার প্রতিষ্ঠিত ট্রাভেলস-এ যখন সেজেগুজে আসতেন, অনেকেই তাকে কোন উঁচুতলার বিদেশী ব্যবসায়ী বলে ভ্রমে পড়তেন। খুবই সদালাপি ইউসুফ মিয়া ব্যবসায়ী হিসেবে যেমন সফল ছিলেন একই সাথে পরিচিত মানুষজনের সহায়তায় তিনি ছিলেন খুবই একজন দরদীমনের মানুষ। আমরা মুক্তকথা পরিবারের পক্ষ থেকে তার পরলোক গমনে মহান পরাক্রম স্রষ্টার কাছে তার অনন্ত চিরশান্তি কামনা করছি এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর হৃদ্বয়িক সমবেদনা প্রকাশ করছি। |