বাৎসরিক সমন্বয় সভায় বক্তাগণ : স্থানীয় বিরোধ স্থানীয়ভাবে নিস্পত্তি করতে হলে গ্রাম আদালত সক্রিয় করতে হবে
বিশেষ সংবাদদাতা: গত ৩০শে এপ্রিল ২০১৯, রোজ মঙ্গল, সকালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় জেলা পর্যায়ে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক বাৎসরিক সমন্বয় সভা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান এবং সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান। সভায় জেলা এবং উপজেলা হতে প্রায় ৯০জন অংশগ্রহণ করেন।
সভায়, স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান বলেন, আমরা জানি গ্রাম আদালত পরিচালনার ক্ষেত্রে মামলার প্রতিবাদীর অসহযোগিতা বিচার কাজের বড় অন্তরায়। এর সমাধানের জন্য কোন আইনি ব্যবস্থা না থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যানগণ ব্যক্তিগতভাবে উক্ত প্রতিবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের আশ্বস্থ করতে পারেন। যেহেতু গ্রাম আদালতের বিচারিক কার্যক্রমটি সমঝোতামূলক। সমাজে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় গ্রাম আদালত বলিষ্ট ভূমিকা রাখতে পারে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান সভায় বলেন, এলাকার স্থানীয় বিরোধ স্থানীয়ভাবে নিস্পত্তি করতে হলে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণের বিকল্প নেই। কারণ স্থানীয় পর্যায়ে গ্রাম আদালতই একমাত্র আইনি আদালত যা গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ দ্বারা প্রতিটি ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গ্রাম আদালতের বিচারিক প্রক্রিয়া হল সমঝোতামূলক ব্যবস্থা। এখানে মামলার পক্ষদ্বয় কর্তৃক মনোনীত প্রতিনিধিগণ সরাসরি বিচার-কাজে অংশগ্রহণ করেন। তাই, উভয় পক্ষের অংশগ্রহণ ও ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতা গ্রাম আদালত সক্রিয়করণের পূর্বশর্ত।
জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মোঃ সিরাজ উদ্দীন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানগণ হয়তো বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন। কখনো কখনো এলাকার বাইরেও ব্যস্ত থাকেন। এজন্য গ্রাম আদালতের বিধি-৫ অনুযায়ী ইউপি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে প্যানেল-সদস্য ১, ২ অথবা ৩ কে দায়িত্ব দিয়ে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। ফলে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি অনেক কমবে। তিনি আরো বলেন, সপ্তাহে নিয়মিতভাবে ২ দিন গ্রাম আদালতে শুনানীর আয়োজন করা খুবই প্রয়োজন যাতে নথিভূক্ত মামলাগুলো সহজে এবং যথাসময়ে নিস্পত্তি করা যায়। বিধি-৩১ এ মামলা নিস্পত্তির সংখ্যা কমিয়ে শুনানীর মাধ্যমে নিস্পত্তির সংখ্যা বাড়াতে হবে।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মতলব-উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. এ. কুদ্দুস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, ফরিদগন্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী আফরোজ, মতলব-দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহিদুল ইসলাম, শাহরাস্তি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা আক্তার, জেলা যুব উন্নয়ন উপপরিচালক মোঃ সামসুজ্জামান, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মোঃ নুরুল হক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মোঃ আলী আজগড়, সহযোগী সংস্থা ব্লাষ্টের প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ বসির আহম্মেদ মনি ও জেলা সমন্বয়কারী মোঃ আমিনুর রহমান সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও এনজিও প্রতিনিধিবৃন্দ।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মোঃ সিরাজ উদ্দীন, হেড কোয়ার্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাকিলা ইয়াসমিন এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশ -এর প্রতিনিধি ম্যাবল সিলভিয়া রড্রিক্স। সভাটি পরিচালনা করেন গ্রাম আদালত বিষয়ক ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর নিকোলাস বিশ্বাস।
|