1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
সাংসদ আব্দুস শহিদ - মুক্তকথা
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৩ অপরাহ্ন

সাংসদ আব্দুস শহিদ

কাওছার ইকবাল
  • প্রকাশকাল : বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৮৪১ পড়া হয়েছে

 

ছয় ছয়বার ধরে নির্বাচিত হয়ে আসছেন যিনি তিনিই চা’য়ের দেশের মানুষ

বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংসদ ড. আব্দুস শহিদ

 

অন্ততঃ ৬ফুট লম্বা, সুঠাম দীর্ঘদেহী সুশ্রী মায়াবী মুধুসূদন চেহারায় আড়ম্বরের ষোলকলা পূর্ণ করেছে মাথার আধা পাকা স্বল্প চুলের বাহার। তিনি আর কেউ নন, তিনিই সমালোচকরা বাদে সর্বজন প্রিয় রাজনীতির দক্ষপুরুষ সাংসদ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ। বলতে দ্বিধা নেই পুরো জেলায় তিনি অবিসংবাদিত এক সফল রাজনীতিক।
রাজনীতির ময়দানের সুদক্ষ এই খেলুড়ে মৌলভীবাজার-৪(শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা) আসনে পরপর ছয় বার জনগণের বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তিনি অলংকৃত করেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ, চিফ হুইপ ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ পদ। এখন তিনি এক নামেই সুপরিচিত সাংসদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ।

১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদায় জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব প্রদান করেন। ২০০১ সালে তৃতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর তিনি পান বিরোধী দলের চিফ হুইপের দায়িত্ব। ২০০৮ সালে চতুর্থবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে পূর্ণমন্ত্রী মর্যাদায় জাতীয় সংসদের চিফ হুইপের দায়িত্ব প্রদান করেন। ২০১৪ সালে পঞ্চমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর তিনি সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত হন। ২০১৮ সালে ষষ্ঠবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর বর্তমান সংসদে তিনি অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।

১৯৯১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দীর্ঘ এ ৩০বছরের পথপরিক্রমায় বয়সে যেমন এসেছে পরিপক্ষতা তেমনি সংসদীয় অভিজ্ঞতায়ও সমৃদ্ধ করেছেন নিজেকে। জ্ঞানচর্চ্চার পথিকৃত এই সাংসদ নিজেকে শুধু শুধু রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। শিক্ষাক্ষেত্রে তার অপার আগ্রহ তাকে দর্শনের ক্ষেত্রে বিশ্বসেরা সনদের দিকে ধাবিত করে। শুরু হয়  তার এমপি পিএইচডি(ডক্টর অব ফিলোসফি)’র অর্জনের সাধনা। ‘ডক্টর অব ফিলোসফি’র ছাত্র হিসেবে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। জ্ঞানার্জনে বয়স যে কোন বাধা নয় সে প্রমাণ তিনি স্বয়ং। ৭০ বছর বয়সে ২০১৮ সালে তিনি পিএইচডি সম্পন্ন করেন।

১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ তৎকালীন সিলেট জেলার মৌলভীবাজার মহকুমার কমলগঞ্জ উপজেলার সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আব্দুল বারী এবং মাতা মরহুমা সাজেদা খানম। ১৯৬৫ সালে কমলগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি এসএসসি পরীক্ষা পাশ করেন। এরপর তিনি সিলেট মদন মোহন কলেজে ভর্তি হন। সে কলেজে তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ লেখাপড়ায় যেমন দক্ষ ছিলেন তেমনি খেলাধুলায় কলেজে তাঁর যথেষ্ট সুনাম ছিল। ১৯৬৭ সালে আব্দুস শহীদ মদন মোহন কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা পাস করে স্নাতক বিভাগে ওই কলেজেই ভর্তি হন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ৬ দফা ঘোষণা হওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে আন্দোলন-সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ছাত্র সংসদে ভিপি পদে ছাত্রলীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হিসেবে ৬ দফা আন্দোলনে নেতৃত্বশীল ভূমিকা রাখেন। তিনি স্নাতক পাস করার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে ছাত্র থাকা অবস্থায় ১৯৭০ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে তিনি এলাকায় এসে মরহুম মো. ইলিয়াসের নির্বাচনী কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। এরপর স্বাধীনতা সংগ্রামকে সুসংগঠিত করার জন্য মো. আব্দুস শহীদ ভারতে আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিএলএফ-এ যোগদান করেন এবং কিছুদিন ৮ মাউনটেন ডিভিশনের ক্যাপ্টেন চাতওয়াল সিংহের অধীনে মুক্তিযোদ্ধের নানা তথ্য সংগ্রহ ও বিএলএফ-কে সুসংগঠিত করার দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি ধর্মনগর হয়ে বর্তমান জুড়ী উপজেলার চোঙ্গাবাড়িতে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে যোগদান করেন এবং পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি পুনরায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান। ওই সময়ে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সহকারী ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন।

 

 

দেশ স্বাধীন হবার পর দেশের বিভিন্ন থানায় কলেজ প্রতিষ্ঠা শুরু হয়। মো. আব্দুস শহীদ কমলগঞ্জে একটি কলেজ করার প্রচেষ্টা শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে মরহুম মো. ইলিয়াসের নেতৃত্বে কমলগঞ্জ গণ মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি সে কলেজের শিক্ষক ও পরে উপাধ্যক্ষ হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯০ সালে তিনি মৌলভীবাজার জেলার শ্রেষ্ঠ কলেজ শিক্ষকের পদক লাভ করেন।

মৌলভীবাজার জেলার কৃতি সন্তান বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের রাজনৈতিক অঙ্গনের পরিচিত মুখ প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও ছয় বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ বঙ্গবন্ধু শিশু একাডেমি’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। এরপূর্বে তিনি মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন অনেকদিন।

১৯৯১ সালে উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ প্রথম মৌলভীবাজার-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য(এমপি) নির্বাচিত হন। ওই সংসদে তিনি তাঁর নির্বাচিত এলাকার সাধারণ মানুষ বিশেষ করে চা শ্রমিক, দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও নিন্ম আয়ের মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন উল্লেখযোগ্য সময়।

তিনি UNFPA-এর আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন Strengthening Parliament’s Capacity in Population and Development issues (SPC-PD) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জাতীয় সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত Bangladesh Associntion of Parliamentarians on Popul-ation & Development(BA-PPD) কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। তিনি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল(জামুকা)’র সদস্য, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান কেন্দ্রের দুইজন সংসদ সদস্য প্রতিনিধির একজন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন বা ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া দীর্ঘ ২৭ বছরের অধিককাল তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন কালে সংসদীয় বিভিন্ন কমিটিতে যেমন-হাউস কমিটি, MDG, WTO, PRSP এমডিজি, ডব্লিউটিও, পিএসএসপি এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম জাতীয় চেম্বারের সহ-সভাপতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যও ছিলেন। যেমন-বিধিমালার বিধি, ব্যবসায়িক পরামর্শ, পাবলিক অ্যাকাউন্টস, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং সংস্থাপন মন্ত্রণালয়।

তিনি একজন পরীক্ষিত শিক্ষানুরাগী। এলাকার উচ্চ শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন বেশক’টি বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়। প্রাথমিক শিক্ষায় তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শ্রীমঙ্গলের প্রতিটি চা বাগানে স্কুল প্রতিষ্ঠা ও জাতীয়করণ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নির্মিত হয়েছে বা চলমান রয়েছে ভবন নির্মাণ কাজ। তিনি কমলগঞ্জের গণ মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান, শ্রীমঙ্গল দ্বারিকাপাল মহিলা ডিগ্রী কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, শ্রীমঙ্গল আলীয়া মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে অধিষ্টিত আছেন।

সিলেট অঞ্চলের জননন্দিত নেতা উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি তাঁর নির্বাচনী এলাকা শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে দিন-রাত পরিশ্রম করছেন। তিনি বর্তমান সংসদে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরী ২০০ টাকা করার দাবি জানিয়ে কথা বলেছেন। তিনি এলাকার রাস্তাঘাট, সেতু, বিদ্যুৎ, বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও এর মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন নিরন্তর। এছাড়া মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, হাট-বাজার, কৃষির উন্নয়ন, সেচ ব্যবস্থাসহ সার ও বীজের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ তাঁর রুটিন কাজ। সর্বোপরি চা-শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে তিনি কাজ করে আসছেন দীর্ঘকাল যাবৎ। দীর্ঘদিনের এ সকল কাজে তাঁর মোটেও ক্লান্তি নেই।

ব্যক্তি জীবনেও বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ সফল। তিনি তাঁর পুত্র-কন্যাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। তাঁরা দেশ-বিদেশে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। আলহাজ্ব উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি সরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশের সংসদীয় দলের সদস্য হিসেবে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, সুইজারল্যান্ড, ভারত, কানাডা, তুরস্ক, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ৩০টিরও বেশি দেশে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। যা তাঁকে বহিঃর্বিশ্ব সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করেছে।

পরপর ৬ বারের নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে পরম সম্মানিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দল ও সরকারের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে এদেশের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি।

 

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT