মুক্তকথা সংবাদকক্ষ॥ জুড়ী উপজেলা, ফুলতলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র গুলিতে নিহত বাংলাদেশী যুবক আব্দুল মুমিন বাপ্পা’র গলিত মরদেহ নিজ দেশে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত শনিবার ২০মার্চ ভোরের দিকে উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের পূর্ব বটুলী এলাকায় বাংলাদেশি পিলার ১৮২২ এর বিপরীত পাশে ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়ার অভ্যন্তরে ওই যুবকের মরদেহ পাওয়া যায়। ঘটনার পরের দিন রোববার ২১মার্চ দুপুরে ভারত সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলেও জানা গেছে।
৩ দিনেও স্বজনের লাশ না পাওয়া পরিবারের আহাজারিতে মরদেহ পেতে সোমবার ২২ মার্চ পূর্ব বটুলী গ্রামবাসী ফুলতলা বিজিবি ক্যাম্পে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে থাকেন।
এ অবস্থানে এলাকাবাসীর পাশাপাশিও ১৫ দিনের সন্তানকে নিয়ে অংশগ্রহণ করেন নিহত বাপ্পার স্ত্রী ও বাপ্পার বৃদ্ধ বাবা।
এ সময় স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বিশেষজন এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ভারতীয় বিএসএফ-রা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন ও নানা সূত্র ধরে অনেক বাংলাদেশীদের এরকম নির্বিচারে হত্যা করছে এবং নিয়মিত সে হত্যাকাণ্ড চালিয়েই যাচ্ছে। নির্বিচারে মানুষ খুনের মূল ইস্যু, তাঁদের ভাষায়- ‘চোরাচালান’। তবে, ভারত থেকে বাংলাদেশে চোরাইপথে যেসব জিনিস আসে, এর জন্য পাচারকারীরাও অপরাধী। আর পাচারকারী বাংলাদেশী হওয়ার কথা নয়। কেননা, ভারতীয় নাগরিক যদি পাচার না করতো তাহলে বাংলাদেশী দু’চারজন চোরাকারবারীরাও এ বিশাল কাঁটাতার ডিঙ্গিয়ে অবৈধভাবে কোনোকিছু নিয়ে আসার সুযোগ পেতো না।
চোরকারবারীর জন্য শুধুই কি বাংলাদেশীরা দায়ী এমন প্রশ্ন রেখে তারা আরও বলেন, এছাড়া ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের টহল কাঁটাতারের বেড়ার একেবারে খুব কাছে। টহলও অত্যন্ত কড়া ও জোরালো। খুব সহজে কেউ কারো চোখ ফাঁকি দিয়ে কাঁটাতার কেটে ভিতরে প্রবেশ করা একেবারে সহজ নয়। এরপরও, ভারতীয় নাছির বিড়ি, কাপড়, মদ, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গরুসহ আরো বেশকিছু জিনিসপত্র চোরাইপথে প্রায়ই আসার খবর পাওয়া যায়। এতো নজরদারির পর এসব কিভাবে কার মাধ্যমে বাংলাদেশী চোরাকারবারির হাতে পৌঁছে? এমন প্রশ্ন রাখে তাদের বক্তব্যে।
বিএসএফ’র সহযোগিতা ছাড়া দু’দেশের চোরাকারবারির পক্ষে এসব সম্ভব নয় বলেও অনেকে মন্তব্য করে বলেছেন, বিএসএফ হয়তো একটা ভাগ পায়। আর ভাগাভাগিতে যখন গড়মিল দেখা দেয়, তখনই নির্বিচারে হত্যা করা হয় শুধু বাংলাদেশের মানুষকে।
|