গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশের ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ বন্দর জেটিতে ভারতীয় জাহাজের পণ্য খালাসের মধ্য দিয়ে শুরু হল দু’দেশের নৌ ট্রান্সিট। বাংলাদেশের নৌ পরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
গত বছর ৬ জুন নরেন্দ্র মোদী এবং শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত নৌ প্রোটোকল চুক্তির অংশ হিসেবে এই ট্রানজিট শুরু হল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশি জেড শিপিং লাইন্স লিমিটেডের জাহাজ নিউটেক সিক্স আশুগঞ্জে স্টিলশিট খালাস করে। কলকাতা থেকে আসা এ সব স্টিলশিট বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সড়কপথে সেভেন সিস্টার হিসেবে পরিচিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে যাবে। বাংলাদেশের ট্রাকে করে জাহাজ থেকে ভারতীয় পণ্যগুলো নিয়ে যাওয়া হবে।
এই ট্রান্সশিপমেন্টের ফলে ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলোর সঙ্গে দূরত্ব প্রায় এক হাজার কিলোমিটার কমে যাবে।
বাংলাদেশ নৌ পরিবহণ মন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, প্রতি টন ভারতীয় পণ্য খালাসের জন্য বাংলাদেশ ১৯২ টাকা করে পাবে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ১০ টাকা, সড়ক ও জনপথ বিভাগ ৫২ টাকা ২২ পয়সা ও বাকি টাকা রাজস্ব বোর্ড পাবে।
আশুগঞ্জ বন্দরে নৌ জেটিতে ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শাজাহান খান বলেন, দীর্ঘদিনের এক স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিলো। এর মধ্য দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক সুদীর্ঘ হলো। রাজস্ব আহরণের পথ উন্মুক্ত হলো।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের নৌ পরিবহণ মন্ত্রকের সচিব অশোক মাধব রায়। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মশিউর রহমান, বাংলাদেশের নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ আমাদের পণ্য পরিবহণে পূর্ণ প্রবেশাধিকার দিয়েছে। এ কাজে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক বন্ধন আছে মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে। এই ট্রান্সশিপমেন্টের ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রদেশগুলো উপকৃত হবে। তিনি বলেন, পণ্য পরিবহণের ফলে বাংলাদেশের অবকাঠামোগত যে ক্ষতি হবে তা কাটিয়ে উঠতে সব ধরনের সহযোগিতা ভারত দেবে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, এই ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যক্রমের ফলে রাজস্ব সম্ভাবনার সোনালী দুয়ার উন্মোচিত হলো। এর মধ্য দিয়ে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পদক্ষেপ এক ধাপ এগিয়ে গেলো।
ভারতীয় পণ্য আনা-নেওয়ার বেশির ভাগ বরাত বাংলাদেশিরাই পেয়েছে বলে জানান বাংলাদেশের নৌ পরিবহণ সচিব অশোক মাধব রায়।