ঢাকা: মঙ্গলবার, ২৭শে অগ্রহায়ণ ১৪২৩।।বিশেষ আলোচনার দাবী রাখে এমন একটি মহাগুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশ করেছে লাস্টনিউজবিডি.কম। গতকাল সোমবার ১২ ডিসেম্বর তারা এই খবরটি পত্রস্ত করে। সাথে সাথেই খবরটি ফেইচবুকের মাধ্যমে চারিদিকে ছড়িয়ে যায়। খবরটি মুক্তিযুদ্ধের প্রকাশ্য বিরোধীতাকারী দেশের বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী আলবদর বাহিনীর শ্রষ্টা ধর্মীয় মৌলবাদী রাজনৈতিক সংগঠন জামাত ই ইসলামকে নিয়ে। অনলাইনটি লিখেছে- “একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় চূড়ান্ত পরাজয় নিশ্চিত জেনে এদেশের মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে বুদ্ধিজীবীদের হত্যায় লিপ্ত হয়েছিল পাকিস্তানের দোসর আদবদর, রাজাকাররা। বুদ্ধিজীবী হত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছিল বাংলাদেশ জামায়েত ইসলাম। সেই জামায়াতই এবার যথাযোগ্য মর্যাদায় ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করতে নিজ দলের সব শাখাকে আহ্বান জানিয়েছে।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে অস্ত্র ধরা ও বুদ্ধিজীবী হত্যায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী দলটি রোববার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘এই দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমানের এক বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার স্মরণে এই দিন পালন করে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাবে। বিবৃতিতে অবশ্য এসব আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিতে বলা হয়নি জামায়াতের নেতাকর্মীদেরকে।,/p>
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ছাত্রসংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক থাকাকালেই নিজামী ও মুজাহিদ আলবদর বাহিনী গড়ে তুলেন। সারা দেশ সফর করে তারা এই বাহিনীতে যোগ দিতে ছাত্রসংঘের নেতা-কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেন বলে সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তান সরকারের গোপন দলিলে দেখা যায়। এই দলিল সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে।
বুদ্ধিজীবী হত্যায় নিজ দলের নেতাদের ভূমিকার কোনো বর্ণনা দেয়া হয়নি জামায়াতের বিবৃতিতে। দলের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান বলেন, ‘আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এই দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। ১৪ ডিসেম্বর যে সকল বুদ্ধিজীবীগণ দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন গোটা জাতি তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে। দেশের জন্য তারা যে ত্যাগ স্বীকার করে গিয়েছেন সে জন্য তারা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের আগে আগে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের পরিকল্পনা ও নেতাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক রায়েই এই বিষয়টি প্রমাণ হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হত্যায় নেতৃত্ব দেওয়ায় জামায়াতের সে সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের দুই শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে এরই মধ্যে।
কীভাবে এই দিবসটি পালন করতে হবে সে পরামর্শও দেন জামায়াতের দ্বিতীয় প্রধান নেতা। তিনি বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিলের আয়োজন করার মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করার জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’”
আমরা শুধু একটি কথাই এখানে বলত চাই আর তা’হলো, জামাতকে অতি অবশ্যই প্রকাশ্যে বলতে হবে যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাদের নেতৃবৃন্দের ভূমিকা ভুল ছিল এবং এই ভুলের জন্য তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত শাস্তিমূলক যে রায় দিয়েছে এবং যা সরকার কার্য্যকরি করেছে তা সঠিক ছিল। তারাও তাদের দলের এই ভুলের জন্য জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।