1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
- মুক্তকথা
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৭
  • ৫৬৯ পড়া হয়েছে

জঙ্গিবাদ

-গোলাম কবির

“জঙ্গিবাদ” শব্দটির উতপত্তির ব্যাখ্যার পূর্বে যদি “জঙ্গি” শব্দটির খানিকটা ব্যাখ্যা করা যায় তবে তার সাথে “বাদ” জুড়ে দিলে শব্দটির মোটামুটি একটা পরিচিতি পাওয়া যাবে। উর্দু শব্দ “জং” মানে যুদ্ধ। তার থেকেই এসেছে জঙ্গি শব্দটি। যার বাংলা দাড়ায়- “যোদ্ধা”। আবার যুদ্ধ নানাবিধ রকমের। গৃহযুদ্ধ, রাষ্ট্রযুদ্ধ, বিশ্বযুদ্ধ, তর্কযুদ্ধ, ধর্মযুদ্ধ, ইত্যাদি। সেভাবেই রাষ্ট্রের পক্ষে কিংবা কোনো সৈনিককে আমরাতো জঙ্গি বলিনা! দেশপ্রেম নিয়ে কেউ যদি সরকার বিরোধী যুদ্ধ করে, তাকে আমরা জঙ্গি বলিনা, বলি বিপ্লবি। খুব সরল এই ব্যাখ্যায় “জঙ্গি” শব্দটি কি খুব একটা নেতিবাচক মনে হয়? না, মনে হয়না। কিন্তু কেমন করে জং বা যুদ্ধ যে করে, সেই জঙ্গি বর্তমানে ঘৃণ্য পরিচিতিতে চরম কলঙ্কিত রূপে প্রতিভাত হচ্ছে! যুদ্ধবাদ আজ হীন জঙ্গিবাদে রূপান্তরিত হচ্ছে! এযাবত আমরা জঙ্গি আটক, গ্রেফতার ইত্যাদির যতোগুলি সংবাদ লক্ষ্য করেছি তার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখেছি জঙ্গিদের আস্তানায়, আড্ডায়, ঘরে জেহাদি বই, সিডি, কেসেট ইত্যাদির পাশাপাশি অস্ত্র, বোমা ও বিস্ফোরক পাওয়া গেছে! তার মানে জঙ্গিদের কাছে জেহাদি বই থাকে, এটাই সত্য! অথচ জেহাদি বইপুস্তক পড়ে ও পড়িয়ে যারা সেই বইপুস্তকের আদর্শ ছড়ানোর যুদ্ধ করছে তাদের আমরা “জেহাদি” না বলে “জঙ্গি” (!) বলে আখ্যায়িত করছি! এটা হাস্যস্কর!
ইসলামের পথে মানুষকে আনার জন্য, ইসলামি আইন, আকিদা, শরা শরিয়ত মতে চলার জন্য এবং যারা সেইমতো চলেননা তাদের হেদায়েতের লক্ষ্যে জেহাদিরা জেহাদ করছেন, বেদ্বিন কাফেরদের মেরে ফেলার যুদ্ধে লিপ্ত আছেন, তারাতো তাদের ধর্মিয় ফরজ আদায় করছেন, তারা মনে করেন! তাদের মনে এই ধর্ম স্পৃহা, আকর্ষণ, যোশ এতো তিক্ষ্ণ যে তারা আত্মঘাতি হতেও দ্বিধা করছেননা! এটাতো ওরা ইসলাম ধর্মের মৌলিক শিক্ষা থেকেই প্রাপ্ত হয়েছে! এইসব জেহাদিদের নাম দেয়া হচ্ছে “জঙ্গি”! অথবা বলা হচ্ছে ” ইসলামের নামে এরা জঙ্গিবাদ কায়েম করছে! ইউরোপিয় দেশ গুলোতে কিন্তু এদের বলা হচ্ছিলো “ইসলামি মিলিটেন্ট গ্রুপ” কিংবা “ইসলামি টেরোরিস্ট গ্রুপ” ইত্যাদি। হালে তারাও কায়দা করে বলা শুরু করেছে “ইন্টারন্যাশনাল টেরোরিস্ট”! অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে “ভাসুরের নাম নেয়া ঠিক নয়, শুধু ভাইজান বলাই ভালো”!
এই লেখাটি যখন লিখছিলাম তখন টিভি চ্যানেলে কাশিমপুর কারাগারের খবর চলছিলো। সংবাদ পাঠক হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নানের ফাসি কার্যকরণ প্রস্তুতির বিবরণ দিচ্ছিলেন। বলছিলেন- “জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের ফাসি আজ যে কোনো সময় কাশিমপুর কারাগারে কার্যকর করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে—“। বলা হচ্ছে “জঙ্গি নেতা”, “হুজি নেতা”! অর্থাৎ এরা “নেতা”! কিন্তু তাদের সহযোগি জেহাদিরাতো তাদেরকে “জেহাদি নেতা” বলেই মানে! আজ রাতে তাদের ফাসি হবে, তারা ডাইরেক্ট জান্নাতে চলে যাবেন, তারাতো তাই ভাবে এবং হয়তো নেতাদের পদাংক অনুসরণের প্রস্তুতি নেয় মনে মনে! কোরান হাদিস ইত্যাদিতে ধর্ম প্রচার, প্রসার এবং চর্চার যে সকল অসংখ্য বক্তব্য, নির্দেশ, ইঙ্গিত রয়েছে সেগুলো সময়ে সময়ে স্থানবিশেষে অর্থপ্রকাশে নানাভাবে জটিল হয়েছে যে তা ইসলামের ইতিহাসেই আছে।
মূল কোরান আংশিক যে মুসলিমদের কাছে আসেনি তা ইতিহাস থেকেই জানা যায়। বিভ্রান্তি ছিলো বলেই খলিফা ওমর সেগুলো নিশ্চিহ্ন করেছিলেন! কিন্তু তারপরও বহু বিভ্রান্তি, অপব্যাখ্যা, উদ্দেশ্যমূলক অনুবাদ চলছেই! কিন্তু যা কিছুই হোকনা কেন, মৌলিকত্ব না থাকার কোনো কারন নেই। সুতরাং মৌলবাদী আছর থেকে মুক্ত থাকার যো নেই। সেক্ষেত্রে বিশ্বের ইসলামি বিশেষজ্ঞদের একটা ঐকমত্য অবস্থানে আসা এখন অবশ্যম্ভাবি জরুরী। ইসলামের নামের সাথে আজ যে কলংক যুক্ত হয়ে পড়েছে তা থেকে ইসলামকে মুক্ত করা তাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
ইসলাম অর্থ শান্তি- এই কথা বলে আজকাল আর শান্তি নেই। প্রকৃত শান্তি স্থাপন করতে হলে মসজিদ মাদ্রাসাগুলোতে নেতিবাচক শিক্ষা, বিজ্ঞান শিক্ষা, বক্তৃতা, মানবিকতা, সামাজিক কল্যাণ, মানব সভ্যতা, সামাজিক সংস্কৃতি, অসাম্প্রদায়িকতা ইত্যাদি বিষয়ে খুতবা, আলোচনা, মাহফিল ইত্যাদি চর্চা করতে হবে। এসবই সম্ভব। এক সময় ছবি তোলা, ছবি দেখা ইসলামি সমাজে ঘোরতর অপরাধ ছিলো। যদিও এখনো প্রত্যন্ত গ্রামে এসব কুসংস্কার আছে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এখন ছবি তোলাই শুধু নয়, এখন মসজিদে চলচ্চিত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বড় পর্দার মাধ্যমে প্রদর্শনপুর্বক বয়ান এবং নামাজ চর্চিত হচ্ছে! কাজেই, কোরান থেকেই ব্যাখ্যা নেয়া যেতে পারে কেমন করে ইসলামকে যুগপোযোগি করে তোলা যায়। ধর্মগ্রন্থগুলো থেকেই ব্যাখ্যা নেয়া যেতে পারে কেমন করে ধর্মিয় মৌলবাদমুক্ত হতে পারে পৃথিবীর মানুষ। “যার যার ধর্ম তার তার” অথবা “ধর্মগামী হওয়া কিংবা না হওয়ার অধিকার যে কোনো মানুষেরই আছে”- এমন চিন্তার বিস্তৃতি হোক বিশ্বে। জঙ্গিবাদ নামের আড়ালে চর্চিত জেহাদিবাদ ধ্বংস হোক। ধর্মান্ধতার আহম্মকি থেকে মুক্ত হোক মানুষ এবং মানবতা।
লন্ডন ১২ এপ্রিল ২০১৭

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT