লন্ডন: বৃটেনের সাধারণ নির্বাচনে আবারও বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তিন কন্যা রুশনারা আলী, ড. রূপা হক ও টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক। নির্বাচিত তিনজনই ব্রিটিশ জাতীয় সংসদ ‘হাউজ অব কমন্সে’ শ্রমিক দল থেকে নিজেদের পুরনো আসন থেকেই বিজয়ী হয়েছেন। তাদের বিজয়ে লন্ডনস্থ বাঙালি কমিউনিটি খুব উৎফুল্ল।
রুশনারা আলী পূর্ব লন্ডনে বাংলাদেশি অধ্যুষিত বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে তৃতীয়বারের মত নির্বাচিত হলেন। তিনি মোট ৪২ হাজার ৯৬৯ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হলেন। রুশনারা আলী ২০১০ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন। এ সময়ে তিনি ১২ হাজার ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন। এরপর ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে ২৪ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে দ্বিতীয় মেয়াদে একই আসন থেকে নির্বাচিত হন এবং বিরোধী দল থেকে বৃটিশ হাউজ অব পার্লামেন্টে ছায়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে ডেভিড ক্যামেরন তাকে বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ করেছিলেন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী রুশনারা ১৯৭৪ সালে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং সাত বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন।
ড. রূপা হক সেন্ট্রাল লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে লেবার পার্টির সাংসদ হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে বৃটিশ পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হলেন। তিনি এদফায় ৩৩ হাজার ৩৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেশায় কিংসটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক এবং ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। রূপা লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার জন্মস্থান বাংলাদেশের পাবনায়।
টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক সেন্ট্রাল লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়ন পেয়ে ২০১৫ সালে প্রথমবার বৃটিশ পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারের ভোটে তিনি ৩৪ হাজার ৪৬৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। টিউলিপ ২০১৫ সালে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর লেবার পার্টির ছায়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ব্রেক্সিট বিরোধী অবস্থানের কারণে ব্রিটিশ রাজনীতিতে বেশ আলোচিত একজন। তিনি কিংস কলেজ থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের পর কর্মজীবনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। তিনি প্রথমে ওই এলাকা থেকে স্থানীয় কাউন্সিল নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে রাজনীতিতে আসেন। টিউলিপ বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনঝি।
উল্লেখ্য, এবারে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ১৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৮ জন ছিলেন শ্রমিক দলের, ২ জন লিবারেল ডেমোক্রাটিক পার্টির এবং অন্যরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ তিনজন এমপি’কে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।