এও ঘটতে পারে? হ্যাঁ ঘটেছে আমাদের এই দেশে। এ যেনো শুনতে অনেকটা সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলোর কাহিনীর মত। মুক্তিযুদ্ধের সেই ভয়াল দিনগুলিতে পাকবর্বর বাহিনী যেভাবে নারী-পুরুষের উপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিল অনেকটা সেই চিরচেনা কাহিনীর মতই নব্য এই রাজাকারের কাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় সেই সেদিনগুলোতে মানুষ যেমন মুখ ফুটে কিছুই বলতে পারছিলো না, শুধু শ্রষ্ঠার কাছে বিচার দিয়ে যাচ্ছিল; নব্য এই কাশেম রাজাকারের ঘটনা সে দিনগুলোকেই বার বার স্মরণ করিয়ে দেয়।
কে এই কাশেম? কি এমন ক্ষমতা তার যে পুলিশ সবকিছু জেনেও স্ব-উদ্যোগে আইনী ব্যবস্থা নিতে অপারগ? এতো ঘৃণ্য ধর্ষণ কাজ করে ওই পাষণ্ড পুঙগব মুক্তিযুদ্ধের ন্যায় শান্তিকমিটির লোক লেলিয়ে দিয়েছে একটি ফয়সলা করে নিতে! ওয়ার্ড ইউপি সদস্যও ঘটনা জানেন অথচ নির্যাতীতের মামলার অপেক্ষায় আছেন। ঘটনাটির বিষদ বর্ণনা দিয়ে ইত্তেফাক খবর করেছে।
ঘটনাটি আমলডাঙ্গার তিয়রবিলা গ্রামে ঘটেছে। এক নরাধম কাশেম, যার কর্মে মনে হয় ফেলে আসা অতীতের পাকবর্বর বাহিনীর রাজাকার-আলবদর-আলসামশদের দোসর ছিল সে, তার বন্ধুকন্যা ষষ্ঠশ্রেনীর এক কিশোরীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিল। মেয়েটির মায়ের অসুস্থতার সুযোগে দুরাত্মা দুষ্ট কাশেম এমন অপকর্মের সুযোগ করে নেয়। মেয়েটির গর্ভে যখন বাচ্চা আসে তখনই ঘটে বিড়ম্বনা। কাশেম মেয়েটিকে নিয়ে হরিনাকুণ্ডু হাসপাতালে গর্ভপাত ঘটাতে গেলে একটি অপরিণত জীবীত শিশু কন্যা জন্ম নেয়। খবরে জানা, নরাধম কাশেমের বড় ভাই আরেক নরাধম মনিরুজ্জামান ওই কন্যাশিশুটিকে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নেয়। হাসপাতালেরই তিনজন নার্স একাজে মনিরুজ্জামানকে সহায়তা করে। এর পরপরই শুরু হয় মামল-বিচার ছাড়াই একটি ফয়সালা করে নেয়ার পায়তারা।
নির্যাতিত মেয়েটি বা তার পরিবারকে ঘর থেকে বের হতে হতে দেয়া হচ্ছে না। এক পক্ষ রাজাকারের দল বেষ্টনী দিয়ে পাহাড়া দিচ্ছে। এতোসব লোকজন এতোকিছু জানার পরও তাদের কিছু করার নেই। এ কেমন সমাজ আমরা গড়ে তুললাম? তাই স্বাভাবিক প্রশ্ন আসে, এই কাশেমের মূল জোর কোথায়? মুক্তিযুদ্ধের দেশে এ ধরনের নব্য রাজাকারদের কঠিন শাস্তিমূলক বিচার না হলে স্বাধীনতার মূল্য কি থাকে?