লণ্ডন।। নানা বাধা-বিপত্তি ও বিক্ষোভ উপেক্ষা করে অবশেষে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের বাসভবনে পৌঁছুলেন ট্রাম্প। ব্রিটেনের সরকারি বাসভবনে পৌঁছে থেরেসা মের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সাক্ষাৎকালে ট্রাম্প বলেন, সম্ভবত আমি আর থেরেসা মে সবচেয়ে ভাল সম্পর্ক গড়েছি দু’দেশের।
থেরেসা মের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ট্রাম্প ও তার স্ত্রী রাণী এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করেছেন।
চারদিনের যুক্তরাজ্য সফরে আজ ১৩ই জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসেছেন লণ্ডনে। ট্রাম্পের আগমন উপলক্ষে বহু পূর্ব থেকেই যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশে কেমন একটা উত্তেজনাময় বিক্ষুব্ধভাব বিরাজ করছে। এখানের শ্রমিকদল আগ থেকেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল এই বলে যে, ট্রাম্পের আগমনে তারা বিক্ষুব্ধ এবং তারা চান না ট্রাম্প বৃটেনে আসেন! তিনি আসলে শ্রমিকদল তাকে মালা দেয়ার পরিবর্তে ক্ষোভ প্রদর্শন করবে। ট্রাম্প আজ ষ্টেনষ্টেড বিমান বন্দরে নামার পর পরই বিমান বন্দরের বাইরে উপস্থিত শ্রমিক দলের নেতাকর্মীগন ট্রাম্পকে ভৎর্সনা করে আওয়াজ তুলে।
তার বিরুদ্ধে এতো এতো প্রচারণার পরও ট্রাম্প থেকেছেন নিরুদ্বিগ্ন। বরং তিনি বিমান বন্দরে পা রেখেই বলেছেন, “বৃটেনের মানুষ আমাকে এতো ভালবাসে” যেনো এখানে না এলে তিনি এসবের কিছুই বুঝতেই পারতেন না।
সংবাদপত্র “দি সান”কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনার কারণে দুই দেশের মধ্যকার প্রত্যাশিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তিটি না-ও হতে পারে। তার এই মন্তব্যে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কারণ মেসার্স মে আশা করেছিলেন ট্রাম্পের এই সফরে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে। কিন্তু সে গুড়ে মনে হয় বালি পরে গেছে।
ট্রাম্প সানকে বলেন, মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনা দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাতিল করে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তি করবে। বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হতেই ট্রাম্প সুর পাল্টিয়ে নেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে ট্রাম্প বলেন, “আমি মোটেও প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করিনি। ওই সাক্ষাৎকার ভুয়ো।” এর পরেই ট্রাম্প জানান, টেরেসা নাকি তাঁকে আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, “চিন্তা করবেন না। ওটা সংবাদমাধ্যমের ব্যাপার।”
যুক্তরাজ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটাই ট্রাম্পের প্রথম সফর। সদ্য পদত্যাগী বরিস জনসনকে নিয়ে তার মন্তব্য বৃটেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে খুব ঝড় তুলেছে। তিনি বলেছেন, বরিস জনসন তেরেশা মে’র চেয়েও সফল প্রধানমন্ত্রী হবার যোগ্যতা রাখে।
তিনি লণ্ডনের মেয়র সাদেক খানের বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, গত বছর লন্ডনে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলা থামাতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন সাদিক খান।
ট্রাম্প অবশ্য বহু আগ থেকেই ব্রেক্সিটের পক্ষপাতী। তবে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ব্রিটেনের মানুষ যে ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছিল, এই ব্রেক্সিট তার চেয়ে অনেক ভিন্ন। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে।
ট্রাম্প বলেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের ইতিমধ্যেই অনেক ইস্যুতে সমস্যা চলছে। তারা বাণিজ্য বিষয়ে আমাদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করছে না।
ট্রাম্প জানান, তিনি মে’কে কিভাবে ব্রেক্সিট করা উচিত সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু মে তার কথা শোনেননি। ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছেন। সংবাদ সূত্র বিবিসি।