1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
৯/১১ এর পর আমেরিকা এ পর্যন্ত ৫০০হাজার মানুষ হত্যা করেছে - মুক্তকথা
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন

৯/১১ এর পর আমেরিকা এ পর্যন্ত ৫০০হাজার মানুষ হত্যা করেছে

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৮
  • ৫৯২ পড়া হয়েছে

হৃদয়বিদারক ৯/১১ এর নিউইয়র্ক আক্রমনের পর আমেরিকা এ পর্যন্ত ৬ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করেছে যুদ্ধের উপর এবং ৫০০হাজার মানুষ হত্যা করেছে

এ বিশ্বকে নিজের হাতের তালুর নিচে রাখার বন্য উন্মাদনায় যুদ্ধ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ধনবাদী আমেরিকানদের হাতে প্রান দিয়েছে দুনিয়ার ৫০০,০০০ মানুষ। অর্থাৎ ৫লক্ষ মানুষ। এই সাথে সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি বেহিসেব। দুনিয়ার কেউই এ হিসেব খুঁজে বের করতে আগ্রহী হয়ে এখনও আসেননি। এমনও হতে পারে দুনিয়ার মানুষের সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতির এই হিসেব নেয়া আসলেই সম্ভব নয়।
গত বুধবারে, ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আন্তর্জাতিক এবং জনবিষয়ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- ওয়াটসন’ তাদের বার্ষিক যুদ্ধের খরচ বর্ণনা করে এ হিসেব প্রকাশ করে। গত ১৪ নভেম্বরের “নিউজউইক” বিস্তারিতভাবে তা প্রকাশ করে। 
“নিউজউইক” আমেরিকানদের মালিকানাধীন “ওয়াশিংটন পোষ্ট” পক্ষের একটি সাময়িকী। অর্থনৈতিক টানা-পোড়েনে ২০১২সালে পুরোপুরি ডিজিটেল প্রকাশনায় চলে যায়। দু’বছর পরে ছাপা প্রকাশনায় আবার ফিরে আসে। অবশ্য ডিজিটেল প্রকাশনা এখনও অব্যাহত আছে। এ খবর প্রকাশ করায় আমেরিকা প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিউজউইকের কোন দূরভিসন্ধি ছিল বলে আমাদের মনে হয়না। বরং নিজের দেশের শাসকবর্গের নীতি ও জবাবদিহিতা বর্জিত বিশাল অংকের খরচের বিষয়ে সতর্ক করে দেয়াই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু বিশাল অংকের খরচের হিসেব খতিয়ে দেখতে গিয়ে যে আমেরিকানদের গণহত্যাকারী জংলি কদর্য্য বর্বর চেহারা বেরিয়ে আসবে তা বুঝে গেলেও আড়ালে রাখা সম্ভব ছিল না আর সে চেষ্টাও তারা করেনি।
এ হিসেব প্রকাশে ‘ওয়াটসন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান’ আমলে নিয়েছেন, পেন্টাগনের বৈশ্বিক আকস্মিক যুদ্ধাভিযানের খরচ, স্বরাষ্ট্র বিভাগের যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট খরচ ও আইনগতভাবে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের দেখাশুনার খরচ এবং যুদ্ধের কারণে ঋণের সুদ পরিশোধসহ দেশীয় নিরাপত্তা বিভাগের জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করার খরচ।
দুনিয়ার মানুষ নিশ্চয়ই ভুলেনি যে এই আমেরিকানরাই ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের উপর আনবিক বোমা ফেলে দিয়ে মিনিট খানেক সময়ের মধ্যে প্রায় ৭০হাজার মানুষ হত্যা করেছিল। এ প্রসঙ্গে মানুষের মুখে মুখে এখনও যা শোনা যায়, এ ছিল আমেরিকানদের এক ঢিলে দু’পাখী মারা। এক, বিশ্বে প্রথম আনবিক বোমার বিধ্বংসী ক্ষমতা পরীক্ষা। দুই, জাপানকে যুদ্ধে পরাস্ত করা। সেদিন দু’টি উদ্দেশ্যই তাদের সফল হয়েছিল।
নিউজউইকের সেই খবর ছিল, “২০০১ সালের ৯নভেম্বরের নিউইয়র্ক আক্রমনের পর এ পর্যন্ত আমেরিকা প্রায় ৬ট্রিলিয়ন ডলার যুদ্ধখাতে ব্যয় করেছে।” আমেরিকার এই অমানবিক অনৈতিক যুদ্ধ সরাসরি হত্যা করেছে কমপক্ষে ৫০০ হাজার মানুষকে। গত বুধবারে, ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আন্তর্জাতিক এবং জনবিষয়ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- ওয়াটসন’ তাদের বার্ষিক যুদ্ধের খরচ বর্ণনা করে এ হিসেব প্রকাশ করেছে।
‘নিউজউইক’এর বর্ণনা থেকে পাওয়া যায়, “যুক্তরাষ্ট্রকে, জঙ্গিবাদ দমাতে গিয়ে সৃষ্ট যুদ্ধে এবং ৯/১১এর ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের দেখাশুনায়, ঠিকঠিকভাবে এবং নীতিগতভাবে ২০১৯সাল পর্যন্ত অর্থবছরে ৫.৯ ট্রিলিয়ন খরচ করতে হবে এবং হয়েছে। খরচের ওই হিসেব আরো বলছে, “যুদ্ধে অতিরিক্তহারে খরচ জাতীয় নিরাপত্তার একটি বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে কারণ এ ধরনের খরচ সবসময় ধরে রাখা সম্ভব নয়।” অবাধ যুদ্ধ খরচের বিশ্লেষনী ওই মূল্যায়নে আরো বলেছে, “ক্রমবর্ধমান জবাবদিহিতামূলক কাজে এবং বিশদ নীতিকৌশল উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জনমানুষের সেবা আরো ভালভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব এবং এতে করে যুদ্ধ শেষ করা যায়। ফলে জাতীয় নিরাপত্তার অতীব করণীয় বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করা যায়।”

২০১৪ সালের জুন মাসের একটি ছবি। আইএস আইএস কর্তৃক ধৃত ইরাকি সৈন্য । ছবি ইন্টারনেট থেকে

৯/১১ এর ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গিবাদ বিরুধী এক বৈশ্বিক যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে। সপ্তাহ খানেক পর আমেরিকা আফগানিস্তানে দাখলাভিযান চালায়। এসময় আলকায়দার সহযোগী সংগঠন তালিবান দেশটি শাসন করছিল। ২০০৩ সালের মার্চে মানব বিধ্বংসী অস্ত্র নির্মাণ ও আমেরিকা বিরুধী জঙ্গি সংগঠনদের মদদ দানের অভিযোগে ওয়াশিংটন, ইরাকী প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল।
প্রাথমিকভাবে খুবই তারাতারি তাদের বিজয় এসেছিল। কিন্তু এর পরই আমেরিকার সৈন্যবাহিনী সেখানে গোটা অঞ্চল জুড়ে অতিরিক্তমাত্রায় জঙ্গিদমন অভিযান শুরু করে। এই অভিযান বাড়ানো হয় লিবিয়া, পাকিস্তান, সোমালিয়া এবং ইয়েমেন পর্যন্ত। ২০১৪সালে যুক্তরাষ্ট্র আইএসআইএস নামক ইসলামী স্টেট সংগ্রামীদের বিরুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক ঐক্যজোট গড়ে তোলে। তাদের দ্বারা ইরাক দখলাভিযানের পর সুন্নী মুসলমানদের একটি দল সংগ্রামী হয়ে উঠে এবং প্রতিবেশী সিরিয়া ও অন্যান্য স্থানে বিস্তৃত হয় পড়ে।
গত বুধবারের ওই বিশ্লেষণে আরো পাওয়া যায় যে, আমেরিকান সৈন্যবাহিনী বিশ্বের মোট ৭৬টি দেশে অন্যভাবে বিশ্বজাতির প্রায় ৩৯% ভাগের জঙ্গিদমন অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং তা দিন দিন বিশ্বব্যাপী বেড়েই চলেছে। এ ছাড়াও এসব অভিযান ঘরে এবং বহির্বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লংঘন করেই চলছে।

ছবি: ২০১৫ সালের গ্লোবেল পোষ্ট থেকে।

মোটকথা, গবেষকদের ধারনা, ৯/১১ ঘটনা পরবর্তী যুদ্ধলীলায় এ পর্যন্ত “৪৮০,০০০ থেকে ৫০৭,০০০জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে ইরাক, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে। এ হিসেবে সর্বশেষ সিরিয়ায় নিহত ৫০০,০০০ মানুষকে ধরা হয়নি। এখানে ২০১১ সাল থেকে যুদ্ধ চলছে। এ যুদ্ধ শুরু হয়, পশ্চিমাদের মদদপুষ্ট কিছু বিদ্রুহী এবং কিছু জিহাদী, সিরিয়ার ইরান ও রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট সরকারকে মোকাবেলায় অবতীর্ণ হয়। ওই একই বছর আমেরিকার নেতৃত্বে পরিচালিত পশ্চিমা সমরজোট নাটো লিবিয়ায় হস্তক্ষেপ করে এবং বিদ্রুহীদের সমর্থন দিয়ে প্রতিষ্ঠিত দীর্ঘকালের নেতা মোয়ামের গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করে। ফলে লিবিয়ায় এখনও চলছে এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ।
আফগানিস্তান, ইরাক ও পাকিস্তানের যুদ্ধে আমেরিকার সর্বমোট মানুষ মারা গেছে সৈন্য ৬,৯৫১জন, সাধারণ মানুষ ২১জন এবং ঠিকাদার ৭,৮২০জন।
নিউজউইকের মন্তব্য- “আমরা প্রায়ই দেখি কতজন মার্কিন সৈনিক মারা গেছে, বাদবাকীদের হিসেব অনেকটা অনিশ্চিতই থেকে যায়। অবশ্যই এবং সম্ভবতঃ আমরা কোনদিনই জানতে পারবো না মোট কত মানুষ এসব যুদ্ধে মারা গেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, মসুল ও অন্যান্য শহরের কথা। এসব শহরকে আইএসআইএস এর হাত থেকে পুনর্দখল করতে গিয়ে হয়তোবা হাজারে হাজার সাধারণ মানুষ মারা গেছে। এসব মানুষের মৃতদেহও কখনও পাওয়া যায় নি।” ওই সংবাদ বিশ্লেষণেই তাই বলা হয়েছে।
বিশ্লেষণের শেষ মন্তব্য- “এতো গেলো প্রত্যক্ষভাবে মৃতের হিসেব। এ ছাড়াও, এই হিসেব-নিকেশ থেকে পরোক্ষ মৃত্যুর হিসেব বের করা কোনদিনই সম্ভব নয়। পরোক্ষ ক্ষয়ক্ষতি তখনি ঘটতে শুরু করে যখন যুদ্ধের ধ্বংসলীলা দীর্ঘম্যাদি হয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত এলাকায় খাদ্য, পানীয়, বিদ্যুৎ সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সুযোগ-সুবিধা ধীরে ধীরে অনুপস্থিত হতে শুরু করে ফলে মানুষের স্বাস্থ্য প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।” 
গত ফেব্রুয়ারীতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খসড়া পরিমাপ করে দেখেন এবং বিস্মিত হয়ে বলেন যে, “আমরা মধ্যপ্রাচ্যে ৭ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করেছি।” “এ যে কত বড় ভুল।” সপ্তাহ খানেক পরে, জানা যায় তিনি তার মিলিটারী উপদেষ্টাদের বলেন একটি পরিকল্পনা তৈরী করতে সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য। সংবাদসূত্র- নিউজউইক।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT