কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার।। বৃদ্ধা জমিলা খাতুন করোনা ভাইরাস কি জানেন না। চাল পাবার আশায় ১০ কি:মি: পায়ে হেটে অবশেষে উঠলেন মৃত ব্যক্তির বাড়িতে। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর থেকে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে চাউল বিতরণ হবে এমন খবর শুনে খরপুড়া রৌদে ১০ কিঃমিঃ পথ পায়ে হেটে মাধবপুর বাজারে এসেছেন ভিক্ষাভিত্তি করে সংসার চালানো জমিলা খাতুন(৬৫)। তিনি জানেন না করোনা ভাইরাসটি কি? বিমর্ষ ক্লান্তির ছাপ নিয়ে মাধবপুর বাজারের একটি বন্ধ দোকানের বারান্দায় বসে থাকতে দেখে এগিয়ে যান স্থানীয় সংবাদকর্মী আসহাবুর ইসলাম শাওন। এ সময় বৃদ্ধা জমিলা বিবি জানান, তার বাড়ি উপজেলা সদরের চন্ডিপুর এলাকায়। তিনি মৃত জয়নাল মিয়ার স্ত্রী। স্বামী সন্তান সবাই ছিলো, ছিলো সুখের একটি সংসার। অনেক বছর হলো একটি রোগে তার তিন ছেলেরই মৃত্যু হয়। সেই শোকে একসময় তার স্বামী জয়নাল মিয়াও মারা যান। তিন কন্যা সন্তানকে নিয়ে দুঃখের সাগরে পড়লে বাধ্য হয়ে নামেন ভিক্ষাবৃত্তিতে। আর তাতেই চলে জমিলার সংসার।
সম্প্রতি দেশে করোনা ভাইরাস দেখা দিলে, ভিক্ষার জন্য মানুষের বাড়িতে গেলে কেউ ভিক্ষা দেয়না। মেয়েদের নিয়ে দু’দিন অনাহারে ছিলেন। বৃদ্ধা বলেন, সকালে মাইকে শোনেছি মাধবপুরে একজন মানুষ মারা গেছে। সেখানে গেলে হয়তো একমুটো চাউল মিলবে সেই আশায় ১০ কি:মি: দূর থেকে হেটে এসেছি, এখানে দেখি কেউতো মরেনি, এখন আমি কি করবো। সেই কথাগুলো শোনে সাংবাদিক শাওন খাদ্য সামগ্রী হিসাবে সাধ্যানুযায়ী চাউল, ডাল, তৈল, সাবানসহ নগদ কিছু অর্থ বৃদ্ধার হাতে তুলে দিয়েছেন। সাংবাদিকরা শুধু সংবাদে নয় মানবতার কল্যাণে দৃষ্টান্ত ভূমিকা রাখে এই কাজে তার প্রমাণ মিলছে।