মৌলভীবাজারের বহুল আলোচিত জোড়া খুন মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে বাদীর বক্তব্যটি প্রকাশের লিখিত অনুরোধ জানিয়ে পত্র পাঠিয়েছেন নিহত শাহবাবের মা। মৌলভীবাজার শহরের সম্ভান্ত এক বনেদি পরিবারের মেয়ে শাহবাবের মা সেলিনা চৌধুরী তার পুত্র হত্যা ঘটনার সন-তারিখ সহ একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তার পুত্র হত্যাকারীর একজনকে গত ২২মে পুলিশ নবীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে জানিয়ে গ্রেপ্তারকৃতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হত্যাতথ্য থাকার বিষয়ে তার বিশ্বাস প্রকাশ করেছেন। করোণা মহামারির কারণে সংবাদ সম্মেলন করার ইচ্ছে থাকলেও তিনি তা করতে না পারার কারণ দর্শিয়ে তার বক্তব্যখানা পত্রিকান্তরে প্রকাশ করে ন্যায় বিচার প্রাপ্তির পথকে সুগম করার কাজে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন। ঘটনার বিশেষ বিবেচনায় আমরা তার বক্তব্যখানা হুবহু এখানে পত্রস্ত করে দিলাম। -সম্পাদক
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন-
“আপনারা অবগত আছেন যে, ২০১৭ সালের ৭ই ডিসেম্বর মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী শাবাব ও মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী নাহিদ আহমদ মাহীকে দলীয় কোন্দলের জেরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রাবাস এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মাহী মৌলভীবাজারের দুর্লভপুর গ্রামের বিলাল আহমদের ছেলে। আর শাবাব শহরের পুরাতন হাসপাতাল রোডের আবু বকর সিদ্দিকীর ছেলে।
আমি সেলিনা রহমান চৌধুরী নিহত মোহাম্মদ আলী শাবাব এর হতভাগা মা। ঘটনার দু’দিন পর(০৯ ডিসেম্বর) আমি বাদী হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় মামলায় ১২জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৫-৬ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করি। এরপর এজাহারভুক্ত ১২ আসামীর মধ্যে পুলিশ ৪জনকে গ্রেফতার এবং ৬জন আদালতে আত্মসমর্থন করলেও অন্যতম আসামী ফাহিম মুনতাসির ও তামিম হাসান পলাতক থাকে। তদন্ত শেষে ০১লা আগস্ট ২০১৮ তারিখে পুলিশ আদালতে ১০জনকে আসামী করে অভিযোগপত্র দায়ের করে। এরমধ্যে গুরুত্মপূর্ণ আসামী ফাহিম মুনতাসিরকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়ায় আমি ২০ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে আদালতে নারাজী পিটিশন দাখিল করি। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন পিবিআইকে দায়িত্ব দেয়া হয়। পিবিআই আসামী ফাহিম মুনতাসিরকে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায় এবং গত শনিবার(২২ মে ২০২১) রাতে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থেকে আটক করে।
আমি মনে করি এই ঘটনার সাথে জড়িত ফাহিম মুনতাসিরের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণসব তথ্য রয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার পূর্ণ রহস্য উদগাটন করা সম্ভব হবে। আমার ধারণা বিজ্ঞ আদালত এই আসামীর রিমান্ড মঞ্জুর করবেন।
প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনারা এই ঘটনায় শুরু থেকেই আমাদের সহায়তা করেছেন এখনও করে যাচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের বিধি নিষেধের কারণে আমি সংবাদ সম্মেলন করতে পারিনি। তাই আমার লিখিত বক্তব্যটি পাঠালাম। আপনারা বক্তব্যটি প্রকাশ ও প্রচার করে ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে আমাদের সহায়তা করবেন। আপনাদের প্রতি আবারো কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
স্বাক্ষর…
(সেলিনা রহমান চৌধুরী)
স্বামী আবু বকর সিদ্দিকী
ঠিকানা পুরাতন হাসপাতার সড়ক মৌলভীবাজার।”
|