চা শ্রমিকদের টানা কর্ম-বিরতি ও আন্দোলনের মাঝে মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসের প্রতি সম্মান জানিয়ে অবশেষে চা শ্রমিক আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিল চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
আজ বিকাল সাড়ে তিনটায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় উপস্থিত চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন।
সভায় চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা পেশ করেন জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মোঃ আব্দুস শহীদ এমপি। এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক(অতিরিক্ত সচিব) খালেদ মামুন এনডিসি, এনএসআই এর জয়েন্ট ডিরেক্টর মোঃ বজলুর রহমান, পুলিশ সুপার মোঃ জাকারিয়া, হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাদিকুর রহমান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়, শ্রীমঙ্গলস্থ শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নাহিদুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মোঃ মিঠুন প্রমূখ।
চা শ্রমিকদের পক্ষে হতে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাখন লাল কর্মকার, সাবেক সাধারন সম্পাদক রামভোজন কৈরী, সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, মনু-দলই ভ্যালীর সভাপতি ধন বাউরী, যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক নিপেল পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দীসহ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে দেশের সকল চা বাগানে চা শ্রমিকদের ১২তম দিনে অনির্দিষ্টকালের কর্ম বিরতি চলার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এই ঘোষণা এসেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রেরিত বার্তায় আরও বলা হয়েছ, প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের মজুরি ১৪৫ টাকা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রীয় সফর থেকে ফিরে এসেই চা শ্রমিক ও মালিকদের নিয়ে আলোচনায় বসবেন।
সভায় চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান জানিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করছি, তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন মজুরির বিষয়টি বিবেচনা করেন। এছাড়াও কর্মবিরতির দিনগুলোর মজুরিসহ সকল সুযোগ সুবিধা যেন মালিক পক্ষ প্রদান করেন।
মৌলভীবাজার জেলার ৯২টি চা বাগানসহ সারাদেশে ১৬৭টি চা বাগানে একযোগে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ চা শ্রমিকরা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধের কথা ছিল।
এদিকে চা শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে চা শ্রমিকদের টানা কর্ম বিরতির কারণে চা শিল্পে এ পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকার উপরে।
এদিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন ভাবে এই প্রস্তাবটি প্রত্যাখান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও আসছে।
|