রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঘৃণা, এমন অভিযোগ আনা হয়েছে
ড. মেথাম সলমানের বিরুদ্ধে
-ফ্রিডম হাউসের প্রতিবাদ
মুক্তকথা: বুধবার ১৭ই আগষ্ট।। রাজতন্ত্রের প্রতি ঘৃণা, একজন মানুষের মনে থাকতেই পারে। আর যদি সে মানুষটি মুসলমান হয় তা হলে সকলের আগে তারই ঘৃণা প্রকাশের কথা। ধর্ম ইসলাম কোন দিনই রাজতন্ত্র ভিত্তিক সমাজব্যবস্থাকে সমর্থন করেনি। ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে দুনিয়ার দেশে দেশে রাজতন্ত্র অতীতে চলেছে এবং এখনও কিছু কিছু দেশে চলছে, সবই বর্বরোচিতভাবে গায়ের জোরে ন্যায় নীতি মানবতাকে বিসর্জন দিয়ে। এর পরেও পক্ষে বিপক্ষে কথা হয়। অনেকেই জেনে-শুনেই বাদশাহীর পক্ষে সাফাই গান, গলার জোরে কোন বিদ্যা-বুদ্ধি বা যুক্তির জোরে নয়। ইসলাম কোন কালে, কোন সময়ে কোথায়ও বাদশাহীকে সমর্থন করেনি। রাজতন্ত্রের ধ্বজাধারীরা যুগে যুগে ইসলামী মণিষীদের উপর জুলুম করেছেন তার শত শত লিখিত ইতিহাস রয়েছে। ইমাম হোসেন থেকে শুরু করে ইমাম আবু হানিফা পর্যন্ত কিংবা এর পরবর্তী বহু মণিষীর নাম জানা আছে যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন এই রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে। আর এই ঘৃণ্য রাজতন্ত্র চলছে আরবের বহু দেশে। এর বিরুদ্ধে ঘৃণা থাকবে না তো কি সোহাগ থাকবে?
অনুরূপ এক বুনিয়াদি রাজতন্ত্রের দেশ বাহরাইন। বাদশাহ্ শেখ হামাদের বাহরাইন মুল্লুক একেবারেই ভিত্তিহীন সওয়াল-জওয়াফ চালিয়ে ড. মেথাম আল সলমানসহ বহু মানবাধিকার কর্মীকে হেনস্থা করছে। আর এই হেনস্থার প্রতিবাদে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সাথে “ফ্রিডম হাউস” ও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
গত ৬ই আগষ্ট পুলিশ ড. শেখ মেথাম আল সালমানকে বাহরাইন বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করে। শেখ সলমান উত্তর আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমন করে দেশে ফিরছিলেন। তিনি “মাশরেক-মাগরেব কোয়ালিশন”এর একজন কর্মকর্তা। এই মানবাধিকার সংস্থাটির প্রধান দপ্তর হলো তিউনিশিয়ায়।
শেখ সলমান বাহরাইন সময় শনিবার সকাল ৮-৪০মি: বাহরাইনে এসে পৌঁছার কথা ছিল বলে তার পরিবার-পরিজন জানায়। অথচ সকাল ১১-২০পর্যন্ত তার একটি ফোন কল ছাড়া আর কিছুই তারা জানেন না। ওই ফোন কলে তারা জানতে পারেন যে শেখ মেথামকে বাহরাইন পুলিশ বিমান বন্দরেই গ্রেপ্তার করেছে এবং ‘প্রসিকিউশন জেনারেলের সদর দপ্তর’ এর ইলেক্ট্রনিক অপরাধ ইউনিটে নিয়ে গেছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩১ জুলাইয়ের এক ‘এরেস্ট অব ওয়ারেন্ট’ দেখিয়ে।
জেনে রাখা ভাল, ড. সলমান মানবাধিকারের একজন আন্তর্জাতিক মুখপাত্র বিশেষ করে চরমপন্থা, উগ্রতা বিরোধী এবং সংস্কৃতি ও ধর্মের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ককে শক্তিশালী করে তোলার একজন স্বার্থক কর্মী। ড. সলমান মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট অসংখ্য আন্তর্জাতিক সন্মেলনে অংশ নিয়েছেন একই সাথে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সাথে বৈঠক করেছেন। এই গেল ২০১৫ সালের জুনে তিনি জাতিসংঘ মানাবাধিকার কাউন্সিলের সাথে সর্বশেষ বৈঠক করেছিলেন।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সাথে বৈঠককারীদের এর আগের দলও বাহরাইন সরকারের প্রতিনিধি জনৈক এম পি খালিদ আল শায়ের কর্তৃক হুমকি প্রাপ্ত হন। শায়ের এই বলে হুমকি দেন যে সলমানের মানবাধিকার দলের বৈঠকারী সকল সদস্যের পরিবারের লোকজনকে খেয়াল করে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং তাদের আলোচনার সারমর্ম প্রসিকিউটার জেনারেলের কাছে জানানো হবে।
ড. শেখ সলমানকে যে এই প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নয়, এর আগে জার্মানী থেকে আসার পথে ২০১১ সালের ১৯শে মার্চ আরেক দফা গ্রেপ্তার করা হয়। ‘ফ্রিডম হাউস’ তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করেছে।