মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন হিসাব রক্ষণ অফিসের অবাধে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। জানা যায় মৌলভীবাজার জেলা অফিস ও ৬ টি উপজেলার হিসাব রক্ষন কর্মকর্তার অফিসে অবাধে ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ উঠেছে। জুড়ি উপজেলার সম্প্রতি শিক্ষক যোগদানের পর তাঁদের বেতন নির্ধারণের জন্য বেতন ফরম ও সার্ভিস বুক উপজেলা শিক্ষা অফিসের গত ২৭ ফেব্রুয়ারী উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে ফাইল প্রেরণ করা হয়। ফাইল প্রেরণের ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও দাবিকৃত ঘুষের টাকা প্রদান না করায় হিসাব রক্ষণ অফিসেই আটকে আছে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতার ফাইল। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করলেও হয়রানির ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ অনেকেই।
মৌলভীবাজার জেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নাম প্রকাশে একাধিক ঠিকাদার বলেন যেকোন দপ্তর থেকে হিসাব রক্ষন অফিসে বিলপত্র নিরিক্ষার জন্য দাখিল করলে সংলিস্ট দপ্তর থেকে বিভিন্ন অজুয়াত দিয়ে ইশারায় ঘুষ দাবী করা হয়। ঘুষ প্রদানে গড়িমশি করলে বিল পাশে বিলন্বিত হয় এবং ঠিকাদার ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের বেতন ভাতা পাশে হয়বরানির স্বীকার হতে হয়। সম্প্রতি রাজনগর উপজেলার মহিলা অধিদপ্তরের আওতাধীন কিশোর কিশোরী ক্লাবে তাদের খাদ্য সামগ্রী বিল পাশে ৫ শতাংশ ঘুষ গ্রহনে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ধরনের অভিযোগ কুলাউড়া,বড়লেখা,কমলগঞ্জ শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজার উপজেলা হিসাব রক্ষক অফিসেরও। জুড়ী উপজেলা হিসাব রক্ষন অফিসের অডিট অফিসার মোঃ আমির হোসেন ও এস এ এস অধীক্ষক মো. ছালিক আহমদ চৌধুরী অভিযোগের ব্যাপারে কোনো উত্তর দেননি ঘটনার ব্যাপারে কোনো ভিত্তি নেই বলে উল্লেখ করেন। অফিসের সিটিজেন মোতাবেক ৭ কর্মদিবসে বিল পাশ করা কথা থাকলে ও শিক্ষকদের ১৮দিন সময় অতিবাহিত করা হয়। তথাপিও বিলটি পাশের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। শিক্ষকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করলেও হয়রানির ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ অনেকেই।
জুড়ী হিসাব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও বিল ডিলিং কর্মচারী এ ব্যাপরে কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এ ব্যাপারে জেলা ও উপজেলার অধিদপ্তর পরিদপ্তর বিভাগের অনেক কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা মূখ খুলতে নারাজ। জেলার কুলাউড়া মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সৌমিত্র কর্মকার উপজেলার মহিলা অধিদপ্তরের আওতাধীন কিশোর কিশোরী ক্লাবে তাদের খাদ্য সামগ্রী বিল পাশে ৫ শতাংশ ঘুষ গ্রহনে কথা স্বীকার করে বলেন এধরনের কাজ নিন্দনীয়। কমলগঞ্জ উপজেলা হিসাব রক্ষন অফিসের অডিট অফিসার(নাম প্রকাশ না করা শর্তে) বলেন রাষ্ট্রের অনেক রতি ও মহারতিরা হিসার রক্ষণ ও অডিট অফিসে আসতে হয় তাদের বিল ভাতার জন্য উপডৌকন ও দিতে হয় । মহিলা অধিদপ্তরের কুলাউড়া কিশোর কিশোরী ক্লাবের প্রতিনিধি তোফায়েল জানান হিসাব রক্ষন অফিসের ঘুষ বাণিজ্য এখন অপেন সিক্রেট। মহিলা অধিদপ্তরের উপজেলা কর্মকর্তারাও জড়িত। অভিযোগ করলে বিল পাশ আরও বিরন্বিত হয়। জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল মোমিত চৌধুরী বলেন অভিযোগটি সঠিক নয়,আমাদের কাছে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নিব। কে বা কারা এ বিষয়ে জড়িত জানালে সঠিকভাবে শাস্তির বিধান করা হবে। জেলার অনেক জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা বিজ্ঞাপন বিল পাশের সংবাদপত্র কর্মীগন হয়রানির স্বীকার হন। হিসাব রক্ষন অফিসের এ ধরনের আচরণ ও ঘুষ বানিজ্যে হয়রানি বন্ধের দাবী ভুক্তভোগী সকলের এবং সরকারি দপ্তরের নিরিহ কর্মকর্তা কর্মচারীরা এ ধরনের অবৈধ ঘুষ বানিজ্যের পরিত্রান।