শ্রীমঙ্গল শহরের বহু সমালোচিত এবং হাজারো শিক্ষার্থীর দূর্ভোগের কারণ পৌরসভার ময়লার ভাগাড়টি দীর্ঘ দুই দশক যাবৎ অপসারণ করা হচ্ছে না। চরম দূর্ভোগের পরও সংশ্লিষ্ট মহলের দ্বায়িত্ব নিয়েও সকলের মনে দেখা দিয়েছে হতাশা এবং জনমনে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। কোমলমতি ছাত্র ছাত্রী ও এলাকাবাসীর দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম, আবেদন নিবেদনের পর সৃষ্টি হয়েছে প্রচন্ড ক্ষোভের। চায়ের রাজধানী বলে খ্যাত শ্রীমঙ্গলের জন্য এটি ‘কলঙ্ক্ষ তিলক’ হয়ে দেখা দিয়েছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মোঃ মহসিন মিয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এলাকার সর্বসাধারণকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন, ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আইনী জটিলতার কারণে কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। আইনী এই জটিলতার বিষয় বিবেচনা করে উল্লেখিত বিষয়ে যেন কোন অনাকাঙ্খিত পরিবেশ পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় এমন অনুরোধ জানিয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পৌরসভার মেয়র উল্লেখ করেন যে, গত ১৮ মে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়রের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জনসাধারণের অবগতির জন্য জানানো হয় যে শ্রীমঙ্গল পৌর সভার কলেজ রোডস্থ ময়লার ভাগাড়ের নির্মাণ নিয়ে দেশের উচ্চ আদালতে একটি ‘রিট’ দরখাস্ত ছিল। বিগত ৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ইং তারিখে সেই ‘রিট পিটিশন’টি উচ্চ আদালত খারিজ করে দেন। ফলে বিগত ৬ জুন, ২০১৭ইং তারিখে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে পৌরসভার ময়লা ভাগাড়ের নির্ধারিত জায়গায় সীমানা পিলার স্থাপনের কাজের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। ঠিকাদার ইট, বালু, সিমেন্ট অন্যান্য মালামাল ও সরঞ্জামাদি ডাম্পিং ষ্টেশনে নিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজনসহ ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব ভানু লাল রায় ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার মিয়া বাধা প্রদান করার ফলে কাজটি বন্ধ হয়ে যায় এবং কাজের সাইটের সকল মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে থানায় মামলা প্রদান করা হয়, মামলার বিষয়টি উদ্ধর্তন সকলকে অবহিত করা হয়। মামলার বিষয়ে অদ্যাবধি আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে শ্রীমঙ্গল পৌর মেয়র আরও জানান যে, ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব ভানু লাল রায় মৌলভীবাজার রোডে জেটি রোড এলাকার সড়কের উপর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য একটি পাকা গেইট নির্মান করেন। যাতে পৌরসভার কোন ময়লা-আবর্জনা বহনকারী ট্রাক উক্ত এলাকায় যেতে না পারে। বর্তমানে অধিগ্রহনকৃত ভূমি নিয়ে পরিবেশের ক্ষতি হবে মর্মে উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশ চেয়ে পুনঃ মামলা রুজু করেন।
এমতাবস্থায় ঠিকাদারের মালামাল লুটের বিষয়ে মামলা, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ মামলা চলমান থাকায় আবর্জনা ভাগাড়টি অপসারণের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। আইনী জটিলতার বিষয় বিবেচনা করত: উল্লেখিত বিষয়ে কোন অনাকাঙ্খিত পরিবেশ পরিস্থিতির সৃষ্টি যা’তে না হয় সে বিষয়ে সর্বসাধারণকে অবহিত করা হচ্ছে বলে পৌর মেয়র জানান।