চায়ের রাজধানী খ্যাত দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ শ্রীমঙ্গলে চায়ের উৎপাদন, রপ্তানী ও সম্ভাবনা বিষয়ের উপর দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। শ্রীমঙ্গলস্থ বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের আয়োজনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় চা শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন স্তরের অংশীজনসহ মোট ৮০ জন উক্ত কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০.০০ ঘটিকায় শ্রীমঙ্গলস্থ বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোঃ ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে উক্ত কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ আশরাফুল ইসলাম, এনডিসি, পিএসসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম সচিব ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের সদস্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) মোঃ কামরুল আমিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. একেএম রফিকুল হক, টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাহ মঈনুদ্দিন হাসান, বাংলাদেশীয় চা সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তাহসিন আহমেদ চৌধুরী।
“চায়ের উৎপাদন, ভোগ ও রপ্তানীঃ বর্তমান অবস্থা ও সম্ভাবনা” শীর্ষক দিনব্যাপি এই কর্মশালায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (পরিসংখ্যান) ড. শেফালী বুনার্জী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (কীটতত্ত্ব) ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন। অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজ উদ্দীন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচারাল ফিনান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোঃ শাহ আলমগীর, ন্যাশনাল ব্রোকার্স লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার মোঃ শাহজাহান, স্মল টি গার্ডেন এন্ড টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সভাপতি মোঃ আমিরুল হক খোকন, তেঁতুলিয়া টি কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মোশারফ হোসেন।
কর্মশালায় ২য় অধিবেশনে ওয়ার্কিং সেশনে অংশগ্রহণকারীগণ ৮টি বিষয় নির্ধারণ করে ৮ টি গ্রুপে ডিসকাশন করেন ও তাঁদের প্রস্তাবনা ও সুপারিশসমূহ তুলে ধরেন। বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে, “চায়ের গড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও উপকরণ ব্যয় কমাতে করণীয়”, “চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষিতাত্ত্বিক পরিচর্যার যথাযথ প্রয়োগ”, “চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধিতে মৃত্তিকা পুনর্বাসন ও সুষম সার প্রয়োগ”, “টেকসই ও নিরাপদ চা উৎপাদনে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) এর প্রয়োগ”, “চা শিল্পে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও করনীয়”, “চা বিপণন ও রপ্তানীতে চ্যালেঞ্জসমূহ ও উত্তোরণের উপায়”, “চায়ের বৈচিত্রায়ন, ভ্যালু এডেড ও স্পেশাল টি উৎপাদন ও বাজার সৃষ্টি” এবং “চায়ের অভ্যন্তরীণ ভোগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ চা বোর্ড ও স্টেকহোল্ডারদের করণীয়”।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ আশরাফুল ইসলাম, এনডিসি, পিএসসি বলেন, বাংলাদেশের চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চা বোর্ড নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। “উন্নয়নের পথনকশাঃ বাংলাদেশের চা শিল্প” বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চা আবাদ বৃদ্ধি, উত্তরবঙ্গে সমতলের ক্ষুদ্র পর্যায়ে চা চাষ সম্প্রসারণ, ভর্তুকীমূল্যে সার সরবরাহ, টি টেস্টিং এন্ড কোয়ালিটি কোর্স চালুকরণ, অবৈধ চা ব্যবসা রোধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, রপ্তানীকারকদের রপ্তানীতে উৎসাহিত করতে ৪% প্রণোদনা প্রদানসহ সরকার নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার ফলে বিগত কয়েক বছরে চায়ের উৎপাদন যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি অভ্যন্তরীণ ভোগও বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি চা আমদানীকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চা বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে। এ ধরনের সময়োপযোগী ও ফলপ্রসূ কর্মশালার মাধ্যমে চা শিল্পে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।
আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাঃ যথাযোগ্য মর্যাদা পালন করে শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ উপলক্ষে শ্রীমঙ্গল উপজেলা ব্যাপী র্যালি, আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল ও ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ৮টায় শ্রীমঙ্গল গাউছুল আজম জামে মাসজিদ থেকে শহরে জুসনে জুলুস বের হয়। শীর্ষ সংগঠন তালামীযে ইসলামিয়া শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০টায় আলোচনা সভা ও সকাল ১১টায় বর্ণাঢ্য র্যালি শ্রীমঙ্গল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
তালামীযে ইসলামিয়া শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার আয়োজনে ১০ টায় শ্রীমঙ্গল আনোয়ারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল। তালামীযে ইসলামিয়া শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ রাকিবুল ইসলাম সালেহ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাজমুল ইসলাম চৌধুরীর পরিচালানায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তালামীযে ইসলামিয়া কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক এম এ জলিল, প্রধান বক্তা ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি আলী রাব্বি রতন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আল ইসলাহ শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুজিবুর রহমান মাদানি, শ্রীমঙ্গল আনোয়ারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফিজ মাওলানা মাহবুব আহমেদ সালেহ, আল ইসলাহ্ শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি হাজী কেরামত আলী, উপদেষ্টা কাজী ফখরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা শাখার সহ-সভাপতি মোঃ আবুল কাশেম, সাবেক সভাপতি প্রভাষক মঈনুল ইসলাম জাকির, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা গিয়াস উদ্দিন, ভূনবীর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মাওলানা জয়নাল আবেদিন, উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান রায়হান, উপজেলা শাখার সহ সম্পাদক (শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক) একরামুল হক সোহাগ প্রমূখ।