সেদিন ৭ বছরের একটি মেয়ে আমাকে বললো “তোমার মোবাইলের লক খুলে দাও”। আমি তো হা করে তাকিয়ে ছিলাম। আমি বললাম এটা তো বড়দের ব্যবহার করার জিনিস। তুমি কি করবে মোবাইল দিয়ে? আমাকে বললো, আমি তো আমার আব্বু আম্মুর মোবাইল ব্যবহার করি।বেশিরভাগ বাচ্চারা মা বাবার মোবাইল এবং সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টস ব্যবহার করে, যা কোনো অবস্থাতেই উচিত না।আমি বাচ্চাদের দোষ দিবো না। আমাদের অধিকাংশ মা বাবার মোবাইল আসক্তি না কমিয়ে বাচ্চাদের ঠিক করা যাবে না। কিশোর অপরাধ সংগঠিত হবার পেছনে পরিবার অনেকটাই দায়ী। বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দিবেন, নাকি সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টস, সেটা মা বাবাকেই সিদ্ধ্বান্ত নিতে হবে। ছোট বাচ্চাকে কোক বা চিপ্সের প্যাকেট কিনে দিবেন নাকি ফল খাওয়া শেখাবেন, সেটাও মা বাবার দায়িত্ব। বাচ্চারা কাদামাটির মত। তাদের যেভাবে বড় করবেন, তারা সেভাবেই বড় হবে। তাদের সাথে গল্প করে সময় কাটাবেন নাকি তাদের হাতে মোবাইল দিয়ে আপনি বস্তা পচা হিন্দি সিরিয়াল দেখাবেন, সেটাও আপনার সিদ্ধ্বান্ত। স্কুল কলেজ ভার্সিটি অনেক পরে, মানুষ মা বাবার কাছ থেকে বেশির ভাগ অভ্যাস আয়ত্ত্ব করে। ইদানীং বাচ্চা জন্ম হওয়ার সাথে সাথে মা বাবারা বাচ্চার নামে ফেইসবুক/ইন্সটাগ্রাম আইডি খুলে বসে থাকেন। এটা অন্যায়। প্রযুক্তির এই দিন বদলে আপনার বাচ্চা এমনিতেই স্মার্ট হবে,ফার্স্ট হবে কিন্তু brain development এর জন্য মা বাবাকে সচেতন হতে হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সবকিছুই বিষাক্ত। কোথায় মা বাবাকে থামতে হবে এবং নিজের ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, সে ব্যাপারে খুব বেশি সচেতন হতে হবে। ছুটির দিনে বাচ্চাকে নিয়ে দামী রিসোর্টে না গিয়ে, খোলামেলা কোনো পরিবেশে যান, এগ্রিকালচার দেখান, মুক্ত বাতাসে কতটা আনন্দ আছে সেটা বোঝান। চাই চাই, আরো চাই, যত পাই আরো বেশি চাই করে করে এই জেনারেশনকে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। এর দায় পরিবারের অনেক। টাকা দরকার জীবনে, তবে অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। টাকার নেশা যেনো বাচ্চাদের অভিশাপ না হয়। |