মৌলভীবাজারের সরকারি মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানি’র(এনটিসি) সকল চা বাগানে পৃথকভাবে বকেয়া মজুরির দাবীতে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কমর্সৃচি পালন করেছে চা শ্রমিকরা।
আজ রবিবার(৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত শ্রীমঙ্গলস্থ শ্রম অধিদপ্তরের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-শ্রম পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলামের আহ্বানে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা বৈঠকের সিদ্ধান্তে এই অচলাবস্থার নিরসন হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল টি কোম্পানি(এনটিসি)’র ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষে উপ-মহা ব্যবস্থাপক এমদাদুল হক, অন্যান্য উপ-মহা ব্যবস্থাপকগন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, বাগান পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ এবং বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
বৈঠক শেষে অংশগ্রহণকারী সকল পক্ষের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ন্যাশনাল টি কোম্পানী লিমিটেড এর চা বাগানসমূহের শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরী পরিশোধে সাময়িক অসুবিধা সৃষ্টি হওয়ায় বাগানসমূহের শ্রম পরিস্থিতির বিষয় নিয়ে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, শ্রীমঙ্গলের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় সভার সিদ্ধান্তঃ ১। আগামী ১২/৯/২০২৪ খ্রি. তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার হতে শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরী ধারাবাহিকভাবে পরিশোধ করা হবে। ২। শ্রমিকদের আগামী দূর্গাপূজার বোনাস ও বকেয়াসমূদয় মজুরী আগামী ০৮/১০/২০২৪ খ্রি. তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। ৩। বাগানের স্বার্থে শ্রমিকেরা তাদের স্বাভাবিক উৎপাদন কাজ অব্যাহত রাখবে।
মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাম্মণবাড়িয়া জেলার শিল্প এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সরকারের নির্দেশে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন করছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম অধিদপ্তরের বিভাগীয় শ্রম দপ্তর শ্রীমঙ্গলের উপ-শ্রম পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার(৭ সেপ্টেম্বর) সকালে এনটিসির বাগান গুলোতে এ প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এর ফলে চায়ের উৎপাদন অনিশ্চিত হয়ে যায়।
পৃথক ভাবে প্রেমনগর চা বাগান, মদনমোহনপুর, চাম্পারায়, বাঘাছড়া,পদ্মছড়া চা বাগানে চা শ্রমিকরা ১ ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করে।
চা শ্রমিকরা জানায়, ন্যাশনাল টি কোম্পানির(এনটিসি) মালিকানাধীন চা বাগানগুলোতে চা শ্রমিকরা গত ২১ দিন কাজ করেও তাদের সাপ্তাহিক হাজরী(মজুরী বা তলব) পায়নি। ফলে শ্রমিকদের আর্থিক অনটনে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। বকেয়া মজুরি ও প্রফিডেন্ট ফ্রান্ডের টাকা, রেশন ও চিকিৎসাসেবা প্রদানের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন চা শ্রমিকরা।
প্রেমনগর চা বাগানে মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সভায় পঞ্চায়েত উপদেষ্টা রজ নায়েক তার বক্তব্যে বলেন, চা বাগানের শ্রমিকরা ২১ দিন ধরে মজুরি পাচ্ছেন না। শুধু মজুরী নয় তাদের রেশন ও চিকিৎসা সেবাও বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও ১৫ মাস ধরে প্রফিডেন্ট ফ্রান্ডের টাকা দিচ্ছেনা। কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সবকিছু লুটেপুটে খেয়েছে। কত কষ্ট করে প্রতিদিন শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু মজুরি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে করে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। অনেক দোকানীরা বাকি দিতে চাইছে না।
বক্তারা আরো বলেন, আগামী সোমবারের মধ্যে বকেয়া মজুরি প্রদান না করা হলে আরও কঠোর কর্মসচি ঘোষণা করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন চা শ্রমিকরা।