যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডের আট বন্ধু উবারে রাইড শেয়ার করে একদিনের আয়ের অর্থ দিয়ে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন প্রকল্পে গৃহ নির্মানে সহায়তা করেছেন। দেশের অসহায় মানুষের সহায়তায় বন্ধুদের এই ব্যাতিক্রমী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পরিচিতজনরাও সহায়তা দিয়ে উৎসাহ দিয়েছেন তাদের।
লন্ডন থেকে শামীম, সবুর, শাওন, তাহের, সাইদুল, হাসান এবং আয়ারল্যান্ড থেকে আকতার ও সুজন দেশের চরম সংকটময় মুহুর্তে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় কবলিত মানুষের বাড়িঘর হারানো, দুঃখ দুর্দশা দেখে তাদের জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করেন। তারা উবারে ‘রাইড শেয়ারিং’ করে তহবিল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়ে আট বন্ধু একটি দিন নির্দিষ্ট করে দুপুর থেকে শেষ রাত পর্যন্ত নিজেদের গাড়ি দিয়ে উবারে রাইড শেয়ারিং করে আয়ের সমুদয় অর্থ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন।
আট বন্ধুর একদিনের আয়ের ও পরিচিতিজনদের সহায়তায় ৩ হাজার ৮ শত ৬১ পাউন্ড সংগ্রহ করে সে অর্থ দেশে পাঠিয়ে প্রনোদনা সহ ৬ লক্ষ ২০ হাজার ৩০০ টাকা দিয়ে টিন, সেলাই মেশিন ও নগদ টাকা দিয়ে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার ৬২ পরিবারকে পুনর্বাসন সহায়তা দেওয়া হয়।
ক্যাম্পেইন ফর মিডিয়া ফ্রিডম(সিএমএফ) এর আয়োজনে গত মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়ন পরিষদ, কান্দিরকুল ও তারাপাশা উচ্চ বিদ্যালয় পয়েন্ট, মৌলভীবাজার উপজেলার চাঁদনীঘাট পয়েন্ট এবং কুলাউড়া উপজেলার চৌমুহনা ও টিলাগাঁও পয়েন্টে ৬২টি পরিবারকে গৃহনির্মানের জন্য টিন, নগদ টাকা ও সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়।
ইউকে প্রবাসী সাইদুল ইসলাম বলেন, দেশ যখন প্রাকৃতিক কিংবা মানবসৃষ্ট কোন সংকটে পড়ে তখন প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি বিচলিত হয়ে উঠেন। ঐতিহাসিকভাবে প্রবাসীরা দেশ মাতৃকার জন্য সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে এসেছেন। আমাদের সামান্য সহায়তা যদি দেশের একটি পরিবারের কষ্ট ও দুর্ভোগ লাগব করতে পারে তাতেই নিজেদের স্বার্থক বলে মনে করবো। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে এটা আমাদের ক্ষুদ্র একটি প্রচেষ্ঠা মাত্র।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকার মাগুরছড়া টাণিং পয়েন্টে অটোরিক্সা উল্টে আবু সাঈদ শাহীন (৪৮) নামে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। বিগত সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ায় ঘুরতে আসা পর্যটক আবু সাঈদ শাহীনসহ কয়েকজনের একটি দল কমলগঞ্জের মাধবপুর লেক, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও শ্রীমঙ্গলের বাইক্কা বিল ঘুরার জন্য একটি অটোরিক্সা চুক্তি করেন। সোমবার শ্রীমঙ্গলের একটি হোটেল থেকে ওই অটোরিক্সা নিয়ে কমলগঞ্জের মাধবপুর লেক দেখার উদ্দেশ্যে বের হন। লাউয়াছড়া উদ্যানের মাগুরছড়া টাণিং পয়েন্ট অতিক্রমের সময় ব্রেক ফেল করে অটোরিক্সা উল্টে যায়। এসময়ে ডানপাশে থাকা আবু সাঈদ শাহীন গুরুতর আহত হন। পরে সতীর্থরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। সাঈদের পৈত্রিক বাড়ি নোয়াখালি জেলার সুধারাম থানার মাইজদী গ্রামে।
কমলগঞ্জ থানার নবাগত ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
পূর্ব বিরোধের হিংসায় দলবল নিয়ে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে
প্রতিপক্ষের বসতঘর ভাঙ্গচুর; আহত-১
পূর্ব বিরোধের জের ধরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষারে দলবল নিয়ে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে প্রতিপক্ষের বসতঘর ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ ঘটিকায় শহীদনগর বাজারের অদূরে নয়বাজার-চৈত্রঘাট সড়ক সংলগ্ন সিদ্দেক মিয়ার বসতবাড়ি ভাঙ্গচুর করা হয়। এসময় বাড়ির মালিক সিদ্দেক মিয়া আহত হন।
জানা যায়, পূর্ব বিরোধের জের ধরে পতনঊষারের স্থানীয় একটি মহল দলবল ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে রোববার দুপুরে মিছিল সহকারে সিদ্দেক মিয়ার বসতবাড়িতে হামলা চালায়। এসময় টিনসেডের ঘরে ব্যাপক ভাঙ্গচুর ও ভেতরে থাকায় জিনিসপত্র ভাঙ্গচুর ও তছনছ করা হয়। ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙ্গচুর হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়।
অভিযোগ করে সিদ্দেক মিয়া বলেন, পূর্বের একটা বিরোধকে কেন্দ্র করে পতনঊষার ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি সদস্য সিরাজ খাঁন ও তার ভাই আনোয়ার খানসহ প্রায় ২০ থেকে ৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল আমার ভাড়াটিয়া ঘরে অতর্কিতে হামলা চালায়। চায়নিজ কুড়াল, ধারালো দা, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ঘর নিশ্চিহ্ন করে এবং ঘরের ভেতরে থাকা ফ্রিজসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়। এসময় তারা আমাকেও বেদম মারধোরে আহত করে। এতে প্রায় সাত থেকে আট লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পূর্ব থেকেই এমন সংবাদ পেয়ে আমি থানায় আগেই লিখিত অভিযোগ দিয়ে রেখেছি। সাথে সাথে পুলিশকেও অবহিত করেছি। এঘটনায় চিকিৎসা গ্রহণ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অভিযোগ বিষয়ে পতনঊষার ইউপি সদস্য সিরাজ খাঁন বলেন, এখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভাঙ্গচুর করার বিষয়টি জানা নেই।
পতনউষার ইউপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান বলেন, ইউপি সদস্যের সম্পৃক্ততা আমার ঠিক জানা নেই। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর দেখতে সরেজমিনে যাচ্ছি।
এব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) শামীম আকনজি বলেন, মৌখিকভাবে অভিযোগ শুনেছি। থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।