অবশেষে সরকারী সহযোগিতায় খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবিদায় উৎসব
“সেং কুটস্নেম” হতে যাচ্ছে
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে আদিবাসী খাসি(খাসিয়া) সম্প্রদায়ের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ অনুষ্ঠান কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আর্থিক সহযোগিতায় আগামিকাল ২৩নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রচারের পর বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়।
জানা যায়, প্রতিবছর ২৩ নভেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসি সম্প্রদায়ের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের অনুষ্ঠানটি করে আসছে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল। এ বছর খাসিদের আয়ের ও জীবিকার প্রধান উৎস পান চাষ চলতি মৌসুমে পানের ব্যবসা মন্দার কারণে ও আর্থিক সংকট থাকায় চলতি মৌসুমে “খাসি সেং কুটস্নেম” অনুষ্ঠান হবে না বলে জানিয়েছিল খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল। বিষয়টি কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন জানার পর অনুষ্ঠানটি আয়োজন করার জন্য সংশ্লিষ্টদেরকে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে খাসিয়ারা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও সাজসজ্জায় সেজে নেচে—গেয়ে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন। ‘সেং কুটস্নেম’ উৎসবের দিন সবাই মিলে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী খাবার খেয়ে আনন্দে নিজেদের সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেন। এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে পুরো মাঠ জুড়ে মেলা বসে। বিভিন্ন স্টলে খাসিয়ারা পোশাক, পান, তীর, ধনুক, বাঁশ—বেতের তৈরী জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন।
এই উৎসবে সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ এসে অংশ নেন। দেশ—বিদেশের পর্যটকেরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন। খাসিরা জানান, অবশেষে তাদের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের অনুষ্ঠানটি হবে শুনে পুরো সম্প্রদায়ের মাঝে উৎসবের আনন্দ বিরাজ করছে।
খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি ও মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যান জিডিশন প্রধান সুচিয়াং বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের অনুষ্ঠানের ব্যয় বহন করা হবে বলে আমাদেরকে জানানো হয়েছে। একই সাথে উৎসবের আয়োজন করার জন্য বলা হয়েছে। এই উৎসবে সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির লোকজন এসে অংশ নেয়। দেশ—বিদেশের পর্যটকেরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন এ প্রতিনিধিকে জানান, খাসিদের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উপজেলা প্রশাসনের আর্থিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হবে।