লন্ডন: শুক্রবার, ১৬ই অগ্রহায়ণ ১৪২৩।। সরকারী সতর্ক বার্তা, বৃটেনে বসবাসকারী ১০ লাখ ইইউ নাগরীককে বের হয়ে যাবার হুমকির সন্মুখীন হবার সম্ভাবনা রয়েছে যারা এদেশে থাকার বিষয়ে তাদের নুন্যতম আইনী অবস্থা দেখাতে পারবেন না।
“থ্রী মিলিয়ন” নামের একটি তৃণমূল সংস্থা যারা, বৃটিশ নন অথচ এ দেশকেই তাদের আবাসভূমি চিন্তা করেন এমন নাগরীকদের দাবী আদায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তারা, বৃটেনের স্বরাষ্ট্র সচিবকে বলেছেন, ইইউ নাগরীকদের যারা বৃটেনে স্থায়ীভাবে বসবাসের দরখাস্ত করেছে তাদের আবেদনের সুরাহা করতে বৃটিশ হোম অফিসের ৪৭ বছর সময় লাগবে। “থ্রী মিলিয়ন” এর সভাপতি নিকোলাস হেটন, স্বরাষ্ট্র সচিব এমবার রুড এর কাছে তার এক চিঠিতে বলেছেন, “আমরা আমাদের পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধব এবং আমাদের কর্মসাথীদের
নিয়ে সত্যিই এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিন গুনছি।” ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের বাহিরের দেশের নাগরীকগন, যারা যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের মনস্থির করেছেন তাদের জন্য ৮৫ পৃষ্ঠার একটি দরখাস্ত নমুনাকে পূরণ করতে হবে। দরখাস্তকারীকে শুধুই ৫ বছরের কাউন্সিল টেক্স বিল, ব্যাঙ্ক বিবরণ কিংবা উপযোগী বিল দিলেই হবে না, তাদেরকে যুক্তরাজ্যে আসার পর প্রতিবারের বাইরে যাওয়া-আসার বিবরণ দেখাতে হবে।
মনিকা লুতক-ডালড্রুপ নামের এক জার্মান মহিলা, যিনি একটি বৃহৎ ইউরোপীয়ান ব্যবসার নির্বাহী বিগত ১৮ বছর যাবৎ ওয়াটফর্ডে থাকেন, গার্ডিয়ানকে বলেছেন-“আমি বছরে কমকরে হলেও ২০ বার আসা-যাওয়া করি। ভ্রমনের সমূহ দলিল দেখাতে হবে এটি একটি “হাস্যকর বিষয়”।
আরেকজন পাওলা রিজাত্ত, বলেছিলেন, “আমি একজন লেখা-পড়া জানা মানুষ কিন্তু ৮৫ পৃষ্ঠার দরখাস্ত দেখে
আমি খুব অসহায় অনুভব করে পরে একজন ‘ইমিগ্রেশন আইনজ্ঞ’ নিয়োগের ব্যবস্থা করি এবং এ পর্যন্ত আমার ১০০০ পাউন্ড খরচ হয়ে গেছে।”
বেশ কিছু মা যাদের বৃটিশ ছেলে-সন্তান রয়েছে, বলেছেন, তারাও স্থায়ী আবাসিক হবার দরখাস্তের জন্য উপযোগী নন। কারণ তাদের বাড়ী-ঘরের বিভিন্ন বিল তাদের নামে নয়। আরেকজন বললেন-“একজন বৃটিশ নাগরীকের সাথে বিবাহ কিংবা বৃটিশ ছেলে-মেয়ে থাকাই যথেষ্ট নয়।” আরেকজন মা, তার নাম প্রকাশ না করার কথা বলে তিনি বললেন, তাকে বলা হয়েছে, তার সন্তানের স্কুল থেকে বিগত ৫ বছরের বিবরণ এই বলে যে, তিনি প্রতিদিনই তার সন্তানকে তিনি স্কুলে আনা-নেয়া করেছেন মর্মে লিখিত দিতে হবে।
“থ্রী মিলিয়ন” সংস্থার মতে, হোম অফিসের নবরূপের এই পদ্বতি সম্পূর্ণ অসঙ্গত কারণ যারা এনমুনার ব্যবস্থা করেন তারা যে কি ধরনের পরামর্শক তা বুঝা যায়!
গত বৃহস্পতিবারে প্রকাশিত এসব তথ্যে দেখা গেছে অনেক ইইউ নাগরীকের দরখাস্ত সহ শতকরা ৩০ভাগ দরখাস্ত বাতিল হয়েছে যারা বৃটেনের নাগরীক হবার আইনানুগ অধিকার রাখেন বটে।
হোম অফিস বলেছেন, “বৃটেনে বসবাসরত কোন ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের নাগরীকের অধিকার ও মর্যাদা এতটুকুও খর্ব হবেনা বিগত ‘রেফারেন্ডাম’এর কারণে। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের কোন সদস্যকে স্থায়ী নাগরিক হবার জন্য আবেদন করতে হবেনা। (গার্ডিয়ান থেকে হারুনূর রশীদ দ্বারা অনুদিত)