মৌলভীবাজার অফিস: সোমবার, ২রা মাঘ ১৪২৩।। মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় অবৈধভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫ লাখ টাকার বৃক্ষ কর্তনের ৯ মাস পরও কোন এক অদৃশ্য কারণে বৃক্ষ খেকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আক্ষেপ করে একজন কর্মকর্তা বলেন, “বুঝেনতো থানায় রাজনৈতিক প্রভাব না থাকলে মামলা নড়াচড়া করানো যায়না”।
প্রায় ৯ মাস আগে রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নে ওয়াপদা সড়কের ১ কিলোমিটার এলাকা থেকে ২শ এর অধিক প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকার বৃক্ষ কর্তন করে ওই গ্রামের পংকি মিয়া। এর পর এলাকাবাসী ইউএনও,জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেবার জন্য। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সরেজমিন পরিদর্শন করে বৃক্ষনিধনের বিষয়টি নিশ্চিত হন। তখন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পানি উন্নয়ন বোর্ডের মৌলভীবাজার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মুখলেছুর রহমান। জাহিদপুর গ্রামের মাধবচন্দ্র বলেন, এলাকাবাসী মিলে ওই বৃক্ষখেকো পংকি মিয়ার বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলোনা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মৌলভীবাজার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মুখলেছুর রহমান বলেন, বৃক্ষ কর্তনের সরেজমিন তদন্ত পূর্বক ঘটনার সত্যতা পেয়ে আমরা পংকি মিয়ার বিরুদ্ধে রাজনগর থানায় অভিযোগ করি। এর পর থানা আমাদের কিছু জানায়নি। “বুঝেনতো, রাজনৈতিক প্রভাব না থাকলে থানায় কোন মামলা নড়াচড়া করানো যায়না”। রাজনগর থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাবার পর ঘটনাস্থল থেকে কিছু বৃক্ষ উদ্ধার করি। পরে পানিউন্নয়ন বোর্ডকে বলি- “আপনাদের বৃক্ষ নেবার ব্যবস্থা করেন। পাউবো বৃক্ষ নেয়নি। পরে আমি ওই বৃক্ষগুলি তুলে নিয়ে আসাটা ব্যয়বহুল হওয়ায় কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হলোনা মর্মে এসপি অফিসে একটি প্রতিবেদন পাঠাই।”
উল্যেখ্য, গত মার্চ ২০১৬ইং তারিখে উপজেলার কালারবাজার-খেয়াঘাটবাজার ওয়াপধা সড়কের জাহিদপুর গ্রামে ৫ হাজার টাকা দামের শত শত একাশি, বেলজিয়ামসহ নানান জাতের বৃক্ষ কেটে লতা-পাতা দিয়ে গোড়া ঢেকে রাখে ওই গ্রামের পংকি মিয়া। ওই সময় স্থানীয়দের সাথে ওই ব্যাপারে কথা বললে গাছ কাটার ব্যাপারে সবাই এক বাক্যে পংকি মিয়ার নাম উল্লেখ করেন। তারা জানান, দুই সপ্তাহ ধরে রাতের আধারে তরিঘরি করে তিনি লাখ লাখ টাকার প্রায় ২শ গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। ওই বৃক্ষ গুলি তিনি নিজে থেকে কেটে বিক্রি করায় এক দিকে যেমন সড়ক ও পরিবেশের ক্ষতি করেছেন অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড তার রাজস্ব হারিয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন ওই বৃক্ষ কর্তন করার সময় আমরা ওনাকে বাধা দিয়েছি, তিনি বাধা উপেক্ষা করে ওই সড়কের শত শত বৃক্ষ কর্তন করেছেন। ওই গ্রামের ইরা মিয়ার স্ত্রী বেগম বিবি বলেন পংকি মিয়াকে গাছ কাটতে আমরা দেখেছি। আমরা গরীব মানুষ কি বলব, আপনারা এসেছেন দেখে যান। পংকি মিয়ার পুত্র সালেহ আহমদের সাথে সরেজমিনে এ প্রতিবেদকের সাথে সাক্ষাত হলে বৃক্ষ কর্তনের কথা স্বীকার করে জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি টাকা পায় তাহলে তাদের টাকা পরিশোধ করা হবে।