হারুনূর রশীদ
ভুল হোক আর শুদ্ধ হোক, ইউনিয়ন থেকে বৃটেন কেটে পড়ায় ইউনিয়নের বাজেটে যে টান পড়েছে তা স্পষ্ট হচ্ছে ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন কাজে। ইদানিং ইউরো-ইউনিয়নের ২৭ নেতা বৃটেনের কাছ থেকে বাজেটের প্রতিশ্রুত টাকা আদায়ের জন্য নতুন চাল দেয়ার জোগার-যন্ত্র করেছেন। গার্ডিয়ানসহ দু’একটি পত্রিকা পড়ে তাই মনে হলো।
চিকন সুরে তারা জানান দেয়ার চেষ্টা করছেন যে উত্তর আয়ারল্যান্ডকে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত করতে তাদের কোন আপত্তি নেই। উত্তর যদি দক্ষিন আয়ারল্যান্ডের সাথে এক হয়ে যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করে তা হলেতো এমনিতেই উত্তর আয়ারল্যান্ড ই. ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। আর এ বিষয়ে তারা মানে ইউরোপীয়ান নেতৃবৃন্দ সপ্তাহ শেষের বৈঠকে আলোচনা করবেন এবং বিষয়টি দেখবেন।
নেতৃবৃন্দ ভাবছেন একটি যৌথ ঘোষণায় যুক্ত আয়ারল্যান্ডকে স্বীকার করে নেবেন যা উত্তরকে অতিসহজে ইউনিয়নে যোগ দেয়ার পথ করে দেবে। বৃটেন বের হয়ে আসার পর প্রথম এই সভায় ইউনিয়নের ২৭ নেতৃবৃন্দ অনুরূপ একটি বক্তব্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। এভাবে হলে উত্তর আয়ারল্যান্ড আপনাআপনিই ইউনিয়নের একটি অংশ হয়ে যেতে পারবে।
ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের এজেন্ডায় এরূপ একটি ভাষ্যের অন্তর্ভুক্তি অবশ্য আইরিশ সরকারেরই বিজয়, যা কিনা বার্লিন ওয়াল ভেঙ্গে পরার পর প্রাক্তন পূর্বজার্মানী রাষ্ট্র ইউরোপীয়ান সম্প্রদায়ে একিভুত হয়ে যাবার বিষয়ে একটি উদাহরণ।
এ ধরনের ঘোষণা যে ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়া বৃটেনের সকল প্যাঁচ-কোচ খুলে দেবে সে ভয়তো রয়েছেই। যদিও উত্তর আয়ারল্যান্ডের একিভুত হওয়ার বিষয়ে এখনও কোন সংখ্যাগরীষ্ঠতা তৈরী হয়নি। এও ঠিক যে এ কাজ করতে গেলে ইউরো ইউনিয়নের কূটনীতিবিদগন অবশ্যই বৃটেনের পক্ষ থেকে খুবই সংক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবেন।
কূটনীতির এখানেই শেষ নয়, জিব্রাল্টারকে নিয়েও তারা নতুন করে দাবার গুটি চালানোর পায়তারা করছেন। মাদ্রিদে কানে কানে কথা চালাচালির পর ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন রাজী হয় এই ভাবনা থেকে যে, এলাকার অবস্থানের কারণে সন্তোসজনক না হলেও ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের বানিজ্যচুক্তি থেকে যেকোন পাথর সরাতে স্পেন সরকার সক্ষম হবে বিশেষ করে জিব্রাল্টার নিয়ে।
একই সাথে, যদিও খুব নৈতিক নয়, তবুও বৃটেনের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের নতুন পন্থা নিয়েছেন। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের একজন কূটনীতিক হতাশাগ্রস্থ হয়ে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মে-র পক্ষের লোকজন বাস্তবতাকে উপলব্দি করে মিঃ ক্যামেরুনের প্রতিশ্রুত ২০২০ সাল পর্যন্ত ইউনিয়নের বাজেটের চাঁদার অংশ দিয়ে যাবার কথায় তাদের স্থির থাকা উচিৎ। এটি তাদের প্রতিশ্রুতি। তারা কি বাস্তব পৃথিবীতে বাস করেন না। হা-হোতস্মি!
কিন্তু সদস্য না হয়েও কেনো বৃটেন চাঁদার মত বিপুল পরিমান অর্থ দিতে যাবে! গণভোটের সময়তো ক্যামেরুনের এ ধরনের কোন প্রতিশ্রুতির কথা সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা কেউ শুনিনি!