মোস্তফাপুর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র। দরজায় তালা ঝুলা ভবনগুলো খালি পড়ে আছে।ধুলাবালি জমে আছে সবখানে। মাকড়সার জালে ছেয়ে যাওয়া ভবনগুলো আজ পোকামাকড়ের নিরাপদ বসতি হয়ে ওঠেছে। চিকিৎসক না থাকায় এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে যাওয়া মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রটি এভাবেই পড়ে আছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন দশক আগে উপজেলার জগৎসীতে মোস্তফাপুর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রটি চালু হয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই কেন্দ্রের দায়িত্ব পালনকারী উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা অবসরে যান। তখন একজন চিকিৎসককে এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু করোনার প্রকোপ শুরু হলে ২০২০ সালের মে মাসের দিকে স্বাস্থ্য বিভাগ ওই চিকিৎসককে অন্যত্র সরিয়ে নিলে কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় পনের বছর মোস্তফাপুর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করে গত বছর অবসরে যাওয়া ফখরুল আলম বলেন, এ কেন্দ্র থেকে ডাক্তার দেখানোর পাশাপাশি ওষুধও দেওয়া হতো। ওষুধ ও চিকিৎসক পাওয়ায় সদর উপজেলার মোস্তফাপুর, আমতৈল, নাজিরাবাদ ও গিয়াসনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এখানে চিকিৎসা নিতেন। মোস্তফাপুর ইউনিয়নে কোনো কমিউনিটি ক্লিনিক নেই। ফলে কেন্দ্রটি ছিল তাদের ভরসাস্থল। কেন্দ্রটি থেকে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ জন মানুষ চিকিৎসাসেবা ও ঔষধ সামগ্রী নিতেন। কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জগৎসী আইডিয়েল সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সাহেদ আহমদ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আক্ষেপ করে বলেন, করোনার এই প্রকোপে যখন মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবাটা সবচেয়ে বেশি জরুরী, তখনই আমাদের এলাকার একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্রটি এক বছরের অধিক সময় ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক আবেদা বেগম বলেন, এই কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা সরাসরি আমাদের হাতে নেই। এখানে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়। কেন্দ্রটিতে একজন চিকিৎসক ছিলেন। করোনার শুরুতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাঁকে অন্যত্র প্রেষণে নেওয়া হয়েছে। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ মৌলভীবাজারের উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, কেন্দ্রটি তাঁরা ও স্বাস্থ্য বিভাগ যৌথভাবে চালাতেন। চিকিৎসককে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। সিভিল সার্জনের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। দুই বিভাগেরই জনবল কম। তবে তাঁরা চেষ্টা করবেন কেন্দ্রটি আবার চালু করার। |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||