চলমান করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আগামী ১৩ জুন খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের স্থগিত পরীক্ষা পুনরায় নেয়ার জন্য ২৭মে কারিগরি বোর্ড কর্তৃক ১, ২, ৩ ও ৫ জুন নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ করে ২৯মে বাতিল করা হয়।
জানা যায়, এ সময় দেশের সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা তড়িঘড়ি করে ছাত্রাবাস/মেসে চলে আসে। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থী আসার পরেই হঠাৎ ১ থেকে ৫ জুনের সকল পরীক্ষা আবারো স্থগিত করেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থী দায়িত্বহীন, মনগড়া বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
এবিষয়ে মৌলভীবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, হুট করে পরীক্ষার তারিখ দেয়ায় আমরা তাড়াহুড়া করে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মৌলভীবাজার আসি। এখন এসে শুনলাম পরীক্ষা আবার স্থগিত করা হয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের এতোদিন মেসে থাকতে হলে অতিরিক্ত খরচ হবে। তাছাড়া বাড়ি যেতেও অনেক খরচ। ধার কর্জ ঋণ করে এ ক্ষতি পোষাতে হবে।
শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার রুটিন পেয়ে আমি সিরাজগঞ্জ থেকে মৌলভীবাজার এসেছি। আসা যাওয়ায় ৩ হাজার টাকারও বেশি খরচ হয়েছে। আমার সাথে আরও ৭ জন ছিল। পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় আমরা সবাই আবার বাড়িতে চলে এসেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে মৌলভীবাজার আসা শিক্ষার্থী জালাল উদ্দীন রুমি বলেন, আমার মা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। মা’কে রেখে আমি টাকা যোগাড় করে মেসে থাকছি। এতে আমার যাতায়াতে ১ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছে। ১৩ জুনের পূর্ব পর্যন্ত থাকব কীভাবে বুঝে উঠতে পারছি না। আমাকে ধার-কর্জ করতে হবে। অপর একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিক্ষা বোর্ডকে আমার এই ক্ষতিপূরন করে দিতে হবে। না হলে পরীক্ষা দেয়ার জন্য আমি থাকবো কি করে! এ তার জিজ্ঞাসা?
সচেতন অভিভাবকরা বলছেন, সরকারের এমন দায়িত্বহীন সিদ্ধান্তে আমরা বিচলিত। সংকটকালিন সময়ে আমরা অর্থনীতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
মৌলভীবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি ভালো মনে করে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় হঠাৎ স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তো ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
|