চান মিয়া, ছাতক (সুনামগঞ্জ)।। সুনামগঞ্জের ছাতকে দেশের একমাত্র কংক্রিট স্লিপার কারখানার অভ্যন্তরে সীমাহীন দূর্নীতি, অনিয়ম ও লুঠপাটের মহোৎসব চলছে। জনৈক দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা একাধিক বাসা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ভাড়া দিয়ে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিলেও রেল বিভাগ এসব বাসার কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে এখন হিমশিম খাচ্ছে। ফলে সিএসপি কারখানাটি এখন বন্ধের উপক্রম হবার দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, সিএসপির এসএসএই (কার্য) ফারুক হোসেনের নামে বরাদ্ধকৃত বাসা ভাড়া দিয়ে এখন স্লিপার কারখানার ভেতরে পুরাতন অফিসের একটি রুমে বসবাস করছেন। তার পাশের রুম জনৈক কন্ট্রাক্টরের লেবারের কাছে ভাড়া দিয়ে প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছেন ১৫থেকে ২০হাজার টাকা। এভাবে রেল বিভাগের আরো একাধিক বাসা অবৈধভাবে ভাড়া দিলেও এসব বাসার বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল পরিশোধ করছেন রেল বিভাগ। এভাবে বিআরবি এর ডিজিসেট (অপাঃ) আবদুল কাদেরের নামে বিআর/১৪-জি বাসা বরাদ্ধ থাকলেও এটি ভাড়া দিয়ে তিনি সাবেক রেষ্ট হাউজে বসবাস করছেন। এভাবে ফিটার প্রদীপ কুমার বিআর/১৩-সি, খালাসী তাহের (৩)-বিআর/১২-এফ, ল্যাবরেটরী (এ্যাসিঃ) ইফতেখার আলম চৌধুরী বিআর/৪-এ ও সিএসপির চৌকিদার আবুবকর সিদ্দিক সিএসপি/৩-এর নামে বাসাটি বরাদ্ধ থাকলেও তারা এসব বাসা ভাড়া দিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিলেও প্রতিমাসে তাদের ব্যবহৃত অর্ধলক্ষাধিক টাকার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে রেল বিভাগ।
বিদ্যুৎ অফিসের একটি সূত্র ছাতক রেলের কাছে তাদের কোটি টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল রয়েছে বলে জানান। এছাড়া সিএসপির ৬জন কর্মচারিকে ৩মাসের জন্যে অস্থায়িভাবে নিয়োগ দেয়া হয়। এদের মাসিক বেতন-ভাতা ঠিকাদার পরিশোধ করলেও জালিয়াতির মাধ্যমে ফারুক হোসেন ভূঁয়া বিল-ভাউচারে একই মাসে পূনরায় বেতন উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। জানা গেছে, সিএসপি কারখানার ডাম্পিং এলাকা থেকে ত্রি-ফোর সাইজের ভাঙ্গা পাথর রাতের আধাঁরে (বোল্ডারসহ) আবু বকর সিদ্দিক প্রহরীর সহায়তায় জনৈক আবু তাহের-১ এর বাসার (নং সিএসপি-৩) আঙ্গিনায় রেখে অবাধে বিক্রি করছেন। অথচ পাথরের অভাবে প্রায় চারমাস থেকে কংক্রিট স্লিপার কারাখানা বন্ধ রয়েছে। ছাতক-ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের অস্থায়ী টিএলআর আব্দুল জলিল ২০১৬সালের ১৫জুলাই যোগদানের পর থেকে এযাবত কোন বেতন না- পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা হয়নি।
এছাড়াও এখানে বদলির নামে ব্যাপক ঘূষ বানিজ্যের মাধ্যমে ছাতকবাজার রেল ষ্টেশনের এইএন/সিলেট মুজিবুর রহমান শ্রীমঙ্গলে ৩তলা বিল্ডিংসহ জিরো থেকে হিরো হয়েছেন। এছাড়া ১৮সেপ্টেম্বর ফারুক হোসেন ছাতক রেল বিভাগের ৩০টি মূল্যবান গাছ বিক্রি করায় প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব) বিআরবি চট্টগ্রাম বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এব্যাপারে সঠিক তদন্ত হলে ফারুকের সীমাহীন অনিয়ম-দূর্নীতির থলের বেড়াল বেরিয়ে পড়বে বলে অভিজ্ঞ মহল ধারনা করছেন। এব্যাপারে ফারুক হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে এক্ষেত্রে তার সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানান।