কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার।। সারা বাংলাদেশের শিল্পশ্রমিকদের অবস্থা যখন একরকম তখন চা-শ্রমিকদের অবস্থা ভিন্ন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমন থেকে বাঁচতে জেলার চা বাগানের শত-সহস্রাধিক শ্রমিক স্বেচ্ছায় ছুটি শুরু করেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধকালে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চা বাগানগুলোতে শ্রমিকরা কাজ করছেন। সরকারি নির্দেশনায় সারা দেশের সাধারণ ছুটি শুরু হলেও চা শ্রমিকদের এ ছুটির আওতার বাহিরে রাখায় গত কয়েকদিন ধরে চা বাগানগুলোতে আন্দোলন জোরদার হচ্ছিল। এ অবস্থাকে অনুসরণ করে জেলার অপর একটি চা-বাগানের সহস্রাধিক শ্রমিক স্বেচ্ছায় ছুটিতে গেছে।
গত শুক্রবার সকাল থেকে কমলগঞ্জের শমশেরনগর প্রধান বাগানসহ মোট ৫টি চা বাগানের শ্রমিকরা নিজেরা ছুটি শুরু করলে এবার শনিবার সকাল থেকে কমলগঞ্জের রহিমপুর ইউনিয়নের মৃর্তিংগা চা বাগানের ১০১৫ জন চা শ্রমিক স্ব্চ্ছোয় কাজ বর্জন করে ছুটি ভোগ করছে। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনা করে তারা স্বেচ্ছায় ছুটিতে রয়েছেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালির(অঞ্চলের) কার্যকরি কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা বলেন, শনিবার সকালে মৃর্তিংগা চা বাগানের ১০১৫ জন শ্রমিক কাজে যোগ না দিয়ে সাধারণ ছুটির জন্য ব্যবস্থাপকের কাছে জোর দাবি জানায়। এ দাবির প্রেক্ষিতে মৃতিংগা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সমর্থন জানালে ব্যবস্থাপক ছুটি দিতে বাধ্য হন।
মৃর্তিংগা চা বাগানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক প্রদীপ বর্মন বলেন, চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ ও শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে চা বাগানে ছুটির কোন নির্দেশনা আসেনি। তাই ছুটি দেওয়া হয়নি। তবে এ চা বাগানের চা শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে তাদের অর্জিত ছুটি থেকে শনিবার থেকে ছুটি দেওয়া হয়।
এ দিকে কমলগঞ্জে সরকারি মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানী(এনটিসির) ৫টি চা বাগান রয়েছে। এসব চা বাগানে ছুটির দাবিতে গত শুক্রবার থেকে চা শ্রমিক ও চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির মধ্যে আলোচনা চলছে। চা শ্রমিক ইউনিয়ন মনু-ধলই ভ্যালির কার্যকরি কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা বলেন, আশা করা যাচ্ছে চা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে শীগগিরই সরকারিভাবে ছুটি দানের নির্দেশনা আসবে।
এনটিসির মালিকানাধীন সবচেয়ে বড় চা বাগান পাত্রখোলার ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশীয় চা সংসদ ও শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে চা বাগানের ছুটির নির্দেশনা আসেনি। তাই চা বাগানে ছুটি দেওয়া হয়নি। ছুটির নির্দেশনা আসলে অবশ্যই ছুটি দেওয়া হবে।