পথশিশুদের নিয়ে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করেছে যৌথভাবে ‘পথের ইশকুল’ ও ‘একমাত্রা সোসাইটি’ নামের দুটি সামাজিক সংগঠন। খেলা শেষে সংগঠনের শিশুদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করেন ভ্রাতৃপ্রতিম এই দুটি সংগঠন। ৯-০ গোলে ‘একমাত্রা সোসাইটি’ একাদশকে হারিয়ে জয়ের শিরোপা অর্জন করে ‘পথের ইশকুল’ একাদশ। আজ শুক্রবার (১৩ আগস্ট) পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় সংগঠন দুটির পূণর্বাসনের আওতায় আনা শিশুরা ‘পথের ইশকুল’ ও ‘একমাত্রা সোসাইটি’র জার্সিতে এ খেলায় অংশ গ্রহন করে। আয়োজকরা মনে করেন, এ আয়োজন উদ্বাস্তু শিশুদের শিক্ষাদানের পাশাপাশি শারীরিক ও মানুষিক বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। পিছিয়ে পড়া এ পথশিশুদের মাদকের বিষাক্ত থাবা থেকে মুক্ত রাখতে তারা এ আয়োজন করেন। খেলা শেষে বাংলাদেশ জাতীয় বেসবল টিমের কোচ ও একমাত্রা সোসাইটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিরোকি ওয়াতানাবে (জাপান) পথশিশুদের উপদেশমূলক বক্তব্যে বলেন, ‘এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য হলো তোমরা (পথশিশুরা) মাদক থেকে দূরে থাকবে। আমরা প্রতিনিয়তই চেষ্টা করবো এরকম আয়োজন করার। সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হয়ে উঠতে হলে শরীর ঘটন করা সবচেয়ে জরুরী।’ এছাড়া পথের ইশকুলের পরিচালক সাকির ইব্রাহীম মাটি বলেন, ‘আজকে এই খেলায় কে জিতলো কে হারলো তা বড় বিষয় নয়। এখান থেকে একজনও যদি মাদককে চ্যালেঞ্জ করে মন দিয়ে খেলাধুলা ও পড়াশোনার চিন্তা করো সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় জয়।’ উপস্থিত সবাইকে উদ্যেশ্য করে মাটি বলেন, ‘এই খেলার প্রস্তুতির জন্য আমাদের এই বাচ্চারা মাদক থেকে দূরে থেকে প্র্যাক্টিসে মনোযোগ দিয়েছে। এ জায়গা বিবেচনা করলেই মনে হয় আমাদের প্রাপ্তির খাতাটা পরিপূর্ণতা পেয়ে যায়। এই পথশিশুরা যদি এক সপ্তাহ মাদক গ্রহণ না করে থাকতে পারে; আমার মনে হয়- পুরোপুরি মাদকমুক্ত এই পরিসর গড়ে তোলার খুব কাছাকাছিই পৌছে গেছি আমরা।’ বাংলাদেশ ইয়ুথ এন্টারপ্রাইজ এডভাইজ এন্ড হ্যাল্পসেন্টারের এডমিন মাজেরদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা শেষে বিজয়ী এবং রানার আপ দলের মধ্যে কাপ তুলে দেন সংগঠন দুটির সদস্যরা। এছাড়া অংশগ্রহনকারী সব খেলোয়ারদের গলায় মেডেল পরিয়ে দেন তারা। সবশেষে রোজকার আয়োজনেরমত গুলিস্তান স্টেডিয়ামের ফুটপাতে একসাথে খাবার গ্রহণ করেন পথশিশু ও সংগঠন দুটির সদস্যরা। পথের ইশকুলের সহ পরিচালক উম্মে সালমা আক্তার ঊর্মি বলেন, ‘এই পথশিশুদের সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার কোনও বিকল্প নেই। সরকার যদি দ্বায়িত্ব নিয়ে এই কাজগুলো করে আমাদের মত বিচ্ছিন্ন সংগঠনের কোনও প্রয়োজনই থাকবে না। সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আরও বলেন, ‘এ পথশিশুদের দায়িত্ব নিন। একটা সুন্দর স্বাভাবিক সুস্থ জীবন পাওয়ার অধিকার তাদেরও আছে।’ এছাড়া এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন পথের ইশকুল ও একমাত্রা সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক ও শুভানুধ্যায়ীরা। |