কলকাতা: পাড়ার দোকান থেকে বহুদিন ধরেই ডিম কেনেন কড়েয়া থানা এলাকার বাসিন্দা অনিতা কুমার। কিন্তু কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছেন, ডিম খেলেই তাঁর ছেলের গায়ে রাশ বেরোচ্ছে। চিকিৎসকের নির্দেশমতো কিছুদিন ছেলেকে ডিম খাওয়ানো বন্ধ করেন। তখন রাশ বেরোনো বন্ধ হল। কিন্তু ফের ডিম খাওয়ানো শুরু করতেই আগের মতো অবস্থা হয়। প্রথমে অনিতা কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। পরে তাঁর সন্দেহ হল ডিমগুলি নিয়ে। নকল ডিম কি না, সেই প্রশ্ন ঘুরপাক করছিল তাঁর মনে।
অনিতার স্বামী অমিত কুমার ব্যবসায়ী। ছেলেকে ডাক্তার নিয়মিত ডিম খাওয়াতে বলেছিলেন বলে তিনি দু’মাসের ডিম বাজার থেকে একবারে কিনে আনতেন। কিন্তু ডিম নিয়ে সন্দেহ মনে জাগলেও হাতে কোনও প্রমাণ ছিল না। পরীক্ষা করার জন্য অন্য এক দোকান থেকে ডিম কিনে আনেন অনিতা। দুটি ডিম আলাদা আলাদা পাত্রে ফাটিয়ে পার্থক্য লক্ষ্য করেন। বুধবার রাতে অমলেট করার জন্য তাওয়ায় ডিম ফাটিয়ে দিয়ে পরের অবস্থা দেখে তাঁর চক্ষু চড়কগাছ। অনিতা বলেন, ‘ডিমটা দেওয়া মাত্রই দেখি প্লাস্টিকের মতো হয়ে গেল। মনে হল একটা প্লাস্টিক তাওয়ার মধ্যে দিলাম। আমি আরেকটা ডিম ফাটিয়ে দেখলাম সেটার কুসুমও প্লাস্টিকের মতো। কিছুটা খোলা তুলে লাইটার দিয়ে জ্বালিয়ে দেখি প্লাস্টিকের মতো গন্ধ বেরোচ্ছে, ভেতরের অংশটা জ্বলছে। তখনই আমি বুঝলাম ডিমগুলো নকল প্লাস্টিকের।’
এর পর তাঁরা কড়েয়া থানায় অভিযোগ জানাতে যান। থানা থেকে তাঁকে খাদ্য দপ্তরে যোগাযোগ করতে বলা হয়। তিনি যোগাযোগ করেন। খাদ্য দপ্তরে ডিম পরীক্ষা করা হবে। তা নকল প্রমাণিত হলে পুলিস তদন্ত করবে। যার দোকানের ডিম নিয়ে এত হইচই, সেই অভিযুক্ত ডিম বিক্রেতার নাম মহম্মদ সেলিম আনসারি (৩১)। কড়েয়া অঞ্চলের রাধাগোবিন্দ সাহা লেনের বাসিন্দা। ৯১, এমএসটি পার্ক সার্কাস মার্কেটে ডিম বিক্রি করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ডিম বিক্রেতার বিরুদ্ধে কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদনমোহন মাইতি জানিয়েছেন, ‘এই ডিম কোথা থেকে এল, কীভাবে এল, সরকারের তদন্ত করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ (আজকাল থেকে)